Mon. Sep 22nd, 2025
Advertisements

82খোলা বাজার২৪ ॥ শনিবার, ২১ নভেম্বর ২০১৫ : ভারতের মধ্য প্রদেশের ইন্দোরের বাসিন্দা মোহাম্মদ জাহির। জন্মসূত্রে তার ধর্ম ইসলাম। কিন্তু বছরভর একই সঙ্গে মুসলমানদের দরগাহ শরিফ ও হিন্দুদের শিব মন্দির দেখাশোনার ভার রয়েছে তার উপর। তার বিশ্বাসে ধর্মের ভিত্তিতে ঈশ্বরের কোনও রূপভেদ নেই।
হিন্দু বিশ্বাসে শ্রাবণ মাস পবিত্র। সারা মাস জুড়ে নানা রূপে পূজিত হচ্ছেন মহাদেব। কিন্তু তাতে সারা বছরের রুটিনে কোনও তারতম্য ঘটেনি জাহিরের। ইন্দোরের খান্ডওয়া শিব মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব রয়েছে তার হাতে। আবার পাশের দরগা দেখভালের ভারও রয়েছে জাহিরের উপরেই।
মুসলমান পরিবারে জন্ম জাহিরের। কিন্তু ধর্মের দোহাই দিয়ে ঈশ্বর ভাগ করা তার ধাতে নেই। ওর কাছে যিনি আল্লাহ, তিনিই ভগবান আবার গড-ও সেই তিনিই। ধর্মীয় ভেদাভেদে তার বিশ্বাস নেই। তাই মন্দির চত্বর পরিষ্কারের কাজ হাসিমুখে সারেন জাহির। তবে শুধু প্রাঙ্গনই নয়, মন্দিরের গর্ভগৃহে শিবলিঙ্গের পরিচর্যাও তিনিই করেন।
বুরহানপুর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে মধ্যপ্রদেশের সুবিখ্যাত অসিরগড় দুর্গের কাছে মোহাম্মদ জাহিরের বাড়ি। গত ছয় বছর ধরে শিবমন্দির দেখাশোনা করছেন। তিনি অঝও-এর কর্মী। মন্দির ও দরগা রক্ষণাবেক্ষণের কাজে তাকে নিয়োগ করেছে প্রতœতত্ত্ব বিভাগ। একই সঙ্গে মন্দির ও দরগার দায়িত্ব পেয়ে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করেন বছর চল্লিশের জাহির।
শিব মন্দিরে কোনও পুরোহিত নেই। তাই পর্যটকরা পুজায় দিতে এলে জাহিরকেই সব কিছু সামলাতে হয়। মন্ত্রোচ্চারণ বা ফুল-মালা অর্পণ, নিজের অজান্তে সর্বঘটে প্রকৃত অর্থে কাঁঠালি কলা হয়ে উঠেছেন তিনি। মন্দিরের কাজ সেরে ১০০ মিটার দূরের দরগায় পৌঁছান জাহির। এই সৌধটির দায়িত্বেও রয়েছে অঝও। তাই দরগা চত্বর সাফসুতরো রাখা তার নিত্য কাজের অংশ বিশেষ।
জাহির মনে করেন, পেশাসূত্রে অভিনব জোড়া দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে নিজের ৫ সন্তানকে সাম্য ও ঐক্যের আদর্শে লালন করতে পারবেন। তার মতে, অহং ত্যাগ করে ভালোবাসার হাত ধরলে ঘৃণা ও বৈষম্য দূর হবে।