খোলা বাজার২৪॥ সোমবা্বার৩০ নভেম্বর ২০১৫ : প্রযুক্তিজগতের হর্তাকর্তা তাঁরা। বিগত বছরগুলোয় তাঁদের হাতেই ছিল এগিয়ে যাওয়ার হাল। তাঁরা যেমন নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে পথ দেখিয়েছেন, তেমনই সবাইকেই দিয়েছেন নতুন পথের খোঁজ। বলা হয়ে থাকে, ভবিষ্যৎ তাদেরই অনুকূলে, যারা সেটা আজকে তৈরি করে রাখে। এই মানুষেরা ঠিক তেমনই, তাঁদের দূরদৃষ্টি একরকম নির্ধারণ করছে ভবিষ্যৎ। চলতি বছরের শুরুতে এমনই কিছু মানুষ এককাট্টা হয়েছিলেন সুইজারল্যান্ডের ডাভোসে, বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনে। সেখানে প্রযুক্তি আমাদের ভরসা এবং ডিজিটাল অর্থনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে দুটি অধিবেশন কথা বলেন গুগলের নির্বাহী চেয়ারম্যান এরিক স্মিড, ফেসবুকের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা শেরিল স্যান্ডবার্গ, মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী সত্য নাদেলা, সেলসফোর্সের প্রধান নির্বাহী মার্ক আর বেনিওফ, ইয়াহুর প্রধান নির্বাহী ম্যারিসা মেয়ার, ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের জনক টিম বারনার্স লি এবং ভোডাফোন গ্রুপের প্রধান নির্বাহী ভিট্টরিও কোলাও। ভবিষ্যতের প্রযুক্তি তাঁরা কীভাবে দেখেন তা তাঁদের উক্তিতেই জানা যায়।
এরিক স্মিড
নির্বাহী চেয়ারম্যান, গুগল
‘(ভবিষ্যতে) ইন্টারনেট বলে কিছু থাকবে নাৃএমনকি আপনি অনুভবও করতে পারবেন না। এটা তখন আপনার অস্তিত্বেরই একটা অংশে পরিণত হবে।’
‘যন্ত্র বুদ্ধিমত্তার উন্নয়ন এই গ্রহের সবাইকে অনেক বেশি চৌকস করে তুলবে। কারণ, আমাদের স্মার্টফোনটি আসলে সুপারকম্পিউটারের সমতুল্য।’
‘২০১৪ সালে প্রায় ৪০ কোটি মানুষের হাতে স্মার্টফোন পৌঁছেছে। আপনার কাছে যদি সেটাই বড় মনে হয়, তবে উন্নয়নশীল বিশ্বের মানুষের ওপর এর প্রভাবের কথা ভেবে দেখুন।’
সত্য নাদেলা
প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা
মাইক্রোসফট করপোরেশন
‘এটা (প্রযুক্তি) আমার কাছে মানবসম্পদ এবং তাদের সম্ভাবনার কথা বলে। প্রযুক্তি মানুষকে ভালো কাজ করার সুযোগ করে দেয়। মানুষের হাতে প্রযুক্তি কী কী করতে পারে, সে ব্যাপারে আমাদের আশাবাদী হতে হবে।’
‘সাইবার নিরাপত্তা এবং জননিরাপত্তায় তথ্যের ব্যবহারের মধ্যে ভারসাম্য নিশ্চিত করতে হবে। ইন্টারনেট অন্যতম
বৈশ্বিক পণ্য। তা যদি নষ্ট করি, তবে আমাদের অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ অনেকাংশেই নষ্ট করব।’
মার্ক আর বেনিওফ
চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, সেলসফোর্স
‘বিশ্বাস গুরুতর এক সমস্যা। আমাদের স্বচ্ছতার নতুন মাত্রা নির্ধারণ করতে হবে মৌলিক স্বচ্ছতার মধ্য দিয়েই আমরা নতুন মাত্রার বিশ্বাস অর্জন করতে পারব।’
টিম বারনার্স লি
অধ্যাপক, এমআইটি কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গবেষণাগার
‘আমি আশা করি, আমরা যদি পরের বছর এখানে ফিরে আসি, তবে আমরা বিষয়গুলো নিয়ে আরও ইতিবাচক ভঙ্গিতে কথা বলব। আমাদের ওপর নজরদারি করা হবে এবং আমাদের ডেটা নিয়ে খারাপ কিছু করা হবে—এমন তুচ্ছ ভয়ভীতি নিয়ে না থেকে বরং আমরা আমাদের তথ্য নিয়ে চমৎকার সম্ভাবনার বিষয়ে কথা বলতে পারি।’
‘আমি আশা করি এমন এক অবস্থা তৈরি হবে, যখন আমার যেখানে ইচ্ছা আমি তথ্য সংরক্ষণ করতে পারব, কিন্তু তথ্যগুলো আমারই থাকবে।’
ভিট্টরিও কোলাও
প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, ভোডাফোন গ্রুপ
‘ভবিষ্যৎ নিয়ে আমার সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, ভবিষ্যতেও কি আমরা অনুমতি নিয়ে রংধনু দেখব? অক্সিজেন ব্যবহারের জন্যও কি সরকারের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে? না। ইন্টারনেটই অক্সিজেন, এটাই পানি।’
তথ্যসূত্র: বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম ওয়েবসাইট
ম্যারিসা মেয়ার‘স্নোডেনের ঘটনার একটি প্রতিক্রিয়া হলো, এখন আগের চেয়ে বেশি মানুষ তাঁদের গোপনীয়তা, তাঁদের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবছে। সবাই এখন এনক্রিপশনের কথা মাথায় রাখছে।’
ম্যারিসা মেয়ার
প্রেসিডেন্ট এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, ইয়াহুশেরিল স্যান্ডবার্গ
‘আমরা যদি আরও মানুষের কাছে ইন্টারনেট পৌঁছে দিতে পারি, তবে আমরা আরও মানুষের মত প্রকাশের সুযোগ করে দিচ্ছিৃআমরা অর্থনৈতিক সুযোগ তৈরি করছিৃএবং আমরা সমতা বৃদ্ধি করছি।’
‘পুরুষদের (ইন্টারনেটে) যুক্ত করার চেয়ে নারীদের যুক্ত করার সুফল বেশি। কারণ, এই নারীরা তাঁদের পুঁজি তাঁদেরই সন্তানের শিক্ষা এবং চিকিৎসায় ব্যবহার করছেন।’
শেরিল স্যান্ডবার্গ
প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা, ফেসবুক