Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

38খোলা বাজার২৪,মঙ্গলবার, ৮ ডিসেম্বর ২০১৫: উড়োজাহাজটি যেন এখনই আকাশ থেকে আছড়ে পড়েছে গ্রামে। প্রথম দর্শনে তা-ই মনে হবে। শখের উড়োজাহাজটি যে হৃদয়ের সবটুকু দরদ দিয়ে নিপুণ হাতে তৈরি। ইঞ্জিন, ককপিট, সিঁড়ি, দরজা, জানালা, বসার আসন—সবই রয়েছে।

উড়োজাহাজটি তৈরি করেছে ১৫ বছরের কিশোর মুরাদ হোসেন। আড়াই মাস ধরে খেটেছে সে। মনের মাধুরী মিশিয়ে বানিয়েছে উড়োজাহাজ। এখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি। তবে যেভাবেই হোক বিজয় দিবসের আগেই উড়োজাহাজ বানানো শেষ করবে মুরাদ। তার পর বিজয় দিবসে তা পানিতে চালাবে।

মায়ের সঙ্গে মুরাদ। ছবি: প্রথম আলোমুরাদের বাড়ি ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১৬ নম্বর রূপসা ইউনিয়নের বদরপুর গ্রামে। বাবা নজরুল ইসলাম রিকশাচালক। মা জাহানারা বেগম বাকপ্রতিবন্ধী। চার ভাইবোনের মধ্যে মুরাদ বড়। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলে পড়েছে। বাবা আর খরচ চালাতে পারেননি। তাই পড়াশোনা এখানেই শেষ। বিদ্যুতের সরঞ্জামের দোকানে কাজ করে সে। ছোটবেলা থেকেই মুরাদ একটু খেয়ালি। তার শিল্পী মন নতুন কিছু খুঁজে বেড়ায়। শখের বশে আপন মনে মুরাদ নানা জিনিস বানায়। কখনো গাড়ি, কখনো লঞ্চ, কখনো হেলিকপ্টার। এর পর পানিতে ভাসিয়ে দেয়। তা দেখে আনন্দের শেষ থাকে না গ্রামবাসীর।
গ্রামের বাসিন্দা তছলিম মোহরী বলেন, ‘মুরাদের এমন উৎসাহ দেখে আমিসহ এলাকাবাসী বিভিন্ন সময় তাকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করেন। তার নিপুণ হাতের কাজ দেখে অভিভূত হই। সাধ্য থাকলে আমার নিজের পকেট থেকে লাখ টাকা দিয়ে দিতাম। যে টাকায় সে আরও নতুন কিছু তৈরি করে আমাদের দেখাতে পারত।’

মুরাদের উড়োজাহাজ দেখতে গ্রামবাসীর ভিড়। ছবি: প্রথম আলোকীভাবে এমন সুন্দর উড়োজাহাজ তৈরি করল, জানতে চাইলে মুরাদ বলে, আড়াই মাস ধরে একটু একটু করে উড়োজাহাজটি তৈরি করেছে। স্টিলের রড, কাঠ, ব্যাটারি দিয়েই উড়োজাহাজটি তৈরি করেছে। ভেতরে ইঞ্জিনও আছে। চালু করলে একদম উড়োজাহাজের মতো শব্দ শোনা যায়। বিমানের চালকের জন্যও বসার আসন রয়েছে। তা ছাড়ও আছে আরও সাতটি আসন। খরচ পড়েছে প্রায় ১৫ হাজার টাকা।

মুরাদের উড়োজাহাজটি দেখতে ভিড় জমেছে গ্রামবাসীর। আশপাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও দেখতে আসছে উড়োজাহাজটি।