খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ১ জানুয়ারি ২০১৬: প্রতিবছরের মতো এবারও নতুন বছরের প্রথম দিন শুরু হলো ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা।
শুক্রবার বিকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই মেলার ২১তম আসরের উদ্বোধন করেন। পরে বক্তব্যের শুরুতেই তিনি সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানান।
পণ্যের মানোন্নয়ন ও ব্র্যান্ডিংয়ের দিকে দৃষ্টি দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে শিল্পোদক্তাসহ সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পণ্যের বহুমুখীকরণ করতে হবে। আমাদের উৎপাদিত পণ্যের জন্য বিশ্বে বাজার খুঁজতে হবে।”
কোন দেশে কোন পণ্যের চাহিদা বেশি, তা বিবেচনা করে উৎপাদন ও রপ্তানির পরিকল্পনার ওপর জোর দেন সরকারপ্রধান।
সেই সঙ্গে শিল্পের প্রক্রিয়াজাতকরণে বেসরকারি খাতকেও এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো আয়োজিত এবারের মেলায় বিশ্বের পাঁচ মহাদেশের ২২টি দেশের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। সাতটি দেশ বাংলাদেশের এ মেলায় এসেছে এবারই প্রথম।
ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় দেশি-বিদেশি ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে পরিচয়ের সুযোগ সৃষ্টি হয় মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, এ আয়োজনে বাণিজ্য বৃদ্ধিরও সুযোগ সৃষ্টি হয়।
গতবছর এ মেলায় ৮৫ কোটি টাকার রপ্তানি আদেশ পেয়েছিলেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা। তার আগের বছর পাওয়া যায় ৮০ কোটি টাকার রপ্তানি আদেশ।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই মেলার গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ধরনের আয়োজনের ফলে উৎপাদিত পণ্যের মান বৃদ্ধিরও সুযোগ সৃষ্টি হয়।
মরিশাস, ঘানা, জাপান, নেপাল, হংকং, মরক্কো ও ভুটান এবারের ঢাকা বাণিজ্য মেলার নতুন দেশ। এছাড়া রয়েছে ভারত, পাকিস্তান, চীন, মালয়েশিয়া, ইরান, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ কোরিয়া, জার্মানি ও আরব আমিরাত।
খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে গুরুত্ব আরোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা মাছ প্রক্রিয়াজাত করে বিদেশে রপ্তানি করতে পারি। শুধু বিদেশে কেন, দেশেও প্রক্রিয়াজাত মাছের বাজার আছে।”
মুসলিম দেশগুলোতে ‘হালাল’ মাংসের চাহিদার কথা মনে করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা প্রশ্ন করেন, “মাংস প্রক্রিয়াজাত করে রপ্তানি করতে পারব না কেন?”
ফুল রপ্তানি নিয়েও উদ্যোক্তাদের সামনে একই প্রশ্ন রাখেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ উৎপাদন ও রপ্তানিতেও গুরুত্ব দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, “রপ্তানির বহুমুখীকরণ হলে আমরা উৎপাদন আরও বৃদ্ধি করতে পারব।”
বাংলাদেশ সম্পর্কে বিদেশিদের ধারণা পাল্টে গেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “যারা বাংলাদেশকে এক সময় করুণার চোখে দেখত, তারাই এখন বাংলাদেশের প্রশংসা করছে।”
তিনি জানান, এখন বাংলাদেশের ৭২৯ ধরনের পণ্য বিশ্বের ১৯২টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে যেখানে বার্ষিক রপ্তানি আয় ছিল দশ বিলিয়ন ডলার, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার তা ৩১ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে গেছে।