Mon. Sep 15th, 2025
Advertisements

25খোলা বাজার২৪, সোমবার, ৪ জানুয়ারি ২০১৬: ভোর রাতে ভূমিকম্পের পর ঢাকার বংশাল থানার একটি ছয় তলা ভবন হেলে পড়েছে; ফাটল দেখা দিয়েছে শাঁখারীবাজারের একটি বাসায়।
ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা ব্রজেন কুমার সরকার জানান, সোমবার সকালে খবর পেয়ে বংশালে মাজেদসরদার রোডের ওই ছয় তলা ভবনে লোক পাঠানো হয়।
ফায়ার সার্ভিসের সহকারী উপ-পরিচালক আবদুল হালিম ঘটনাস্থল থেকে বলেন, “এখানে দুই ভবনের মাঝে চার ইঞ্চির মতো ফাঁকা ছিল। ভূমিকম্পের ফলে একটি অংশ পাশের ভবনে লেগে গেছে। তবে আমরা বড় কোনো ঝুঁকি দেখছি না।”
রাজউককে খবর দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “তাদের প্রকৌশলীরা এসে পরবর্তী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে।”
সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের কলোনির মধ্যে ওই ভবনের পূর্ব ও পশ্চিম দিক ফাঁকা। দক্ষিণের একটি অংশ পাশের আরেকটি ভবেনের সঙ্গে লেগে আছে।
তবে ‘বড় কোনো ঝুঁকির আশঙ্কা’ না থাকায় ওই ভবনের বাসিন্দাদের সরানো হয়নি বলে আবদুল হালিম জানান।
ওই ভবনের বাসিন্দা পান্না লাল বলেন, “প্রতি তলায় ১০টা করে ঘর। ছয় তলায় আমরা মোট ৬০টি পরিবার বসবাস করি। প্রায় তিন বছর আগে এই বিল্ডিং বানানো হইছে।”
ভূমিকম্পের পর শাঁখারীবাজার এলাকার ৬২ নম্বর হোল্ডিংয়ে পুরনো এক বাসায় ফাটল দেখা দেওয়ার খবর পেয়ে সেখানেও লোক পাঠানো হয় বলে ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা ব্রজেন কুমার সরকার জানান।
কোতোয়ালি থানার এসআই আবদুল আজিজ বলেন, “তিন তলা ওই ভবনে ফাটল ধরেছে। ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হলেও চারটি পরিবার সেখানে বসবাস করে।
বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পারিবারিক সূত্রে ওই ভবনের মালিক মোট ২২ জন। এদের মধ্যে চারটি পরিবার এখনও সেখানে বসবাস করছে। ভবনের অবস্থা খারাপ হওয়ায় বাকিরা অন্য জায়গায় চলে গেছে।
সুমন সুর নামের এক বাসিন্দা বলেন, “অন্য পরিবারগুলো এই বাড়ি ছেড়ে চলে গেলেও আমাদের চারটি পরিবারের সেই সামর্থ্য নেই। ভোর রাতে যখন ভূমিকম্পে প্রচণ্ড ঝাঁকুনি দিল, আমরা বাড়ি থেকে নেমে বাইরে দাঁড়ালাম। ফায়ার সার্ভিস আমাদের নিরাপদে সরে যেতে বলেছে। কিন্তু আমরা যাব কোথায়?”
বাড়ি ভেঙে ফেলা হচ্ছে না কেন জানতে চাইলে তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, “হেরিটেজের কথা বলে ভাঙতে দিচ্ছে না। এটা কী রাজবাড়ি? এটা তো সাধারণ একটি ভবন। চারপাশে নতুন সব ভবন হয়েছে। শুধু আমাদেরকে ভাঙতে দিচ্ছে না।”
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ (ইউএসজিএস) দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, রিখটার স্কেলে এ ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৭; উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে ৩৫২ কিলোমিটার পূর্ব উত্তর-পূর্বে ভারতের মনিপুর রাজ্যে।