খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ৮ জানুয়ারি ২০১৬: সোশাল মিডিয়ার এই যুগে মানুষ তার সমমনাদের খুঁজে বের করতে চায় ফেসবুকে। নিজস্ব বিশ্বাস ও চিন্তাধারার সঙ্গে যাদের খাপ খায়, তাদের সঙ্গেই মতামতের আদানপ্রদান চলে ফেসবুকে। আর সমমনাদের মিলিয়ে দিতে নানা পন্থা অবলম্বন করে ফেসবুক। তাই এক অর্থে, ফেসবুক মানুষের মানসিকতাকে সরু করে দেয়। নতুন এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ফেসবুকসহ অন্যান্য সোশাল মিডিয়া এক ধরনের ‘ইকো চেম্বার’ সৃষ্টি করে। এর মাধ্যমে সমমনা মানুষরা এক হয়ে আলোচনা করেন।
বিভিন্ন তত্ত্ব, ঘটনা ইত্যাদি নিয়ে তারা বিতর্কিত মন্তব্য, পক্ষপাতদুষ্ট চিন্তাধারা এবং নিজেদের সংশ্লিষ্ট বিষয় শেয়ার করে থাকেন। প্রোসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেস জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে ফেসবুকের ডেটা বিশ্লেষণের কথা বলা হয়েছে। ২০১০-২০১৪ সালের মধ্যে ফেসবুকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে যে আলোচনা হয়েছে তা পর্যবেক্ষণ করেছেন গবেষকরা। এতে আরো বলা হয়, ফেসবুকে সমমনা মানুষরা একজোট হয়ে থাকতে চান। নিজস্ব মতামতের বাইরের কোনো ধারায় তারা যেতে চান না।
আর এ বিষয়টিকে উস্কে দেয় ফেসবুক। আমেরিকার বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়সহ ইতালির বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এ গবেষণা সম্পন্ন করেন। কোনো একটি বিষয়ের উদয় হলে তা সংশ্লিষ্ট গ্রুপ বা কমিউনিটির মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। হয়তো তার সম্পর্কে বাস্তবসম্মত কোনো তথ্য নেই। এর হয়তো কোনো ভিত্তিই নেই। কিন্তু তার আগেই গোটা দুনিয়ায় তা ছড়িয়ে পড়ছে। এমন বহু বিকর্তিক বিষয় ফেসবুকের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে রীতিমতো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মানুষ। যেমন- ভ্যাক্সিনের কারণে প্রতিবন্ধী হয়ে পড়ছে শিশুরা। এমনই এক ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ে ফেসবুকে।
অথচ এর কোন বৈজ্ঞানীক ভিত্তি নেই। কোথা থেকে ছড়িয়েছে তাও বের করা সহজ কথা নয়। গবেষকদের মতে, এভাবে কোনো তথ্য বা ঘটনা বা চিন্তাধারা ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে তার সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ও শেয়ার করা উচিত। তাহলে অবাস্তবিক বিষয় অনলাইনে ভাইরাল হয়ে পড়বে না। কারণ মানুষের কাছে তা ব্যাপক হারে ছড়িয়ে যায় এবং এতে যথেষ্ট ক্ষতির সম্ভাবনা থেকে যায়। বর্তমানে ডিজিটাল ইনফরমেশন অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে ওঠছে। এর মাধ্যমেই মানুষ যেকোনো খবর চোখের পলকে পেয়ে যাচ্ছে। তাই সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে সমমনাদের যেভাবে একজোট করা হয়, তাতে মানুষের মন-মনন বিকাশের পথ আরো সরু হয়ে আসছে।