খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ১৫ জানুয়ারি ২০১৬: আন্তর্জাতিক টেরেস্ট্রিয়াল কেবল (আইটিসি) অপারেটররা শর্তসাপেক্ষে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল) থেকে সরাসরি ইন্টারনেট ব্যান্ডইউডথ কেনার অনুমতি পেয়েছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিএসসিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, সম্প্রতি টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি কিছু শর্তসাপেক্ষে এ অনুমতি দিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের ছয়টি আইটিসি অপারেটর প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে প্রতিবেশী ভারত থেকে ব্যান্ডউইডথ কিনে দেশে সরবরাহ করছিল। এখন তারা যেমন রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যান্ডইউডথ কিনে সরবরাহ করতে পারবে। একইভাবে প্রয়োজনে বিএসসিসিএলও তাদের কাছ থেকে ব্যান্ডইউডথ কিনতে পারবে। বিএসসিসিএলের এমডি মনোয়ার বলেন, আইটিসি অপারেটরা নিজেদের ব্যবহৃত ব্যান্ডইউথের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ ব্যাকআপ হিসেবে বিটিআরসির অনুমতি সাপেক্ষে বিএসসিসিএল থেকে সরাসরি ব্যান্ডইউডথ ক্রয় করতে পারবে।
এই ব্যান্ডইউডথ দেশেই ব্যবহার করতে হবে। তবে সরকারের অনুমতি নিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করতে পারবে। প্রাথমিকভাবে পাঁচ বছরের জন্য ব্যান্ডইউডথ কেনার অনুমোদন দেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, কী দরে আইটিসি অপারেটরদের ব্যান্ডইউডথ বিক্রি করা হবে তা খুব শিগগিরই নির্ধারণ করা হবে। তবে, ব্যান্ডইউডথ বিক্রির সীমা নির্ধারণ করে দিলে এ সিদ্ধান্তে কোনো লাভ হবে না বলে দাবি করেছে আইটিসি অপারেটররা। আইটিসি প্রতিষ্ঠান ফাইবার অ্যাট হোমের স্ট্রাটেজি অফিসার সুমন আহমেদ সাবির বলেন, ১০ শতাংশ ব্যান্ডইউডথ দেওয়ার সিদ্ধান্তে আইটিসি অপারেটরদের কোনো লাভ হবে না। বর্তমানে ছয়টি আইটিসি কম্পানি ১৬০ জিবিপিএসের (গিগাবাইট পার সেকেন্ড) বেশি ব্যান্ডউইডথ সরবরাহ করছে।
এই হিসাবে একক কোনো আইটিসি কম্পানি দুই থেকে তিন জিবিপিএসের বেশি ব্যান্ডইউডথ বিএসসিসিএল থেকে কিনতে পারবে না। সুমন আরো বলেন, ব্যান্ডইউডথ কেনার এই সীমা উঠিয়ে দিলে বিএসসিসিএলের ব্যান্ডইউডথ বিক্রি হওয়ায় আয় বাড়বে এবং প্রায় ১৫০ জিবিপিএস ব্যান্ডইউডথ অব্যবহৃত পড়ে থাকবে না। এদিকে, বিএসসিসিএল এর মধ্যে ভারতে ব্যান্ডউইডথ বিক্রির প্রক্রিয়া শুরু করেছে বলে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিটিআরসির ১৯১ তম সভার কার্যবিবরণীতে উল্লেখ করা হয়, আইটিসিগুলো আট ডলার করে (বর্তমানে ১০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইডথ কিনতে প্রতি এমবিপিএস সর্বনিম্ন দাম প্রায় ৮ ডলার) কিনে যেন ভারতের সেভেন সিস্টারের কাছে বেশি দামে ব্যান্ডইউডথ বিক্রি করতে না পরে সেজন্য এই সীমা ও রপ্তানিতে এই নিয়ম করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের আগে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ সংযোগের জন্য একটি সাবমেরিন কেবলের ওপর নির্ভরশীল ছিল। ২০১২ সালের অক্টোবর থেকে আইটিসিগুলো তাদের অপারেশন শুরু করে। তখন আইটিসি অপারেটররা টেরেস্ট্রিয়াল অপটিক্যাল ফাইবার লাইনের মাধ্যমে পাশ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে টেলিযোগাযোগ কোম্পানির সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে বিকল্প ব্যবস্থায় বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত করে।