প্রণালি: ফুটন্ত গরম পানিতে পালংশাক (ডাঁটা বাদে) দিয়ে সঙ্গে সঙ্গে তুলে নিন। পানি নিংড়ে ফেলে দিয়ে ছোট করে কেটে রাখুন। আলু ছোট কিউব করে কেটে নিন। ডিমগুলো স্বাদমতো লবণ দিয়ে ভালো করে ফেটে নিন। এখন প্যানে অল্প তেল গরম করে কিউব করে কাটা আলু লবণ মাখিয়ে ছেড়ে দিন। সেদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত ভাজুন। তারপর তাতে পেঁয়াজ কুচি মিশিয়ে দিন। পেঁয়াজ নরম হয়ে এলে পালংশাক আর কুচোনো কাঁচা মরিচ মিশিয়ে ২-৩ মিনিট ভেজে নিন। নামিয়ে মিশ্রণটা একেবারে ঠান্ডা করে নিয়ে ফেটে রাখা ডিমের সঙ্গে মিশিয়ে নিন। এরপর ফ্রাই প্যানে তেল গরম করে মিশ্রণটা ঢেলে দিয়ে চুলার আঁচ কমিয়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিন। অমলেটের ওপরের দিকটা শুকিয়ে এলে সাবধানে উলটে দিয়ে অপর পাশটাও সোনালি করে ভেজে নিন। একটা টুথপিক বা কাঁটা চামচ অমলেটের ভেতরে ঢুকিয়ে দেখে নিন ভেতরে কাঁচা আছে কি না। হয়ে গেলে নামিয়ে নিয়ে পরিবেশন করুন।
মুরগি-পালং সালাদ
উপকরণ: পালংশাক ২ আঁটি (ছোট পালং হলে ভালো), কর্ন (ভুট্টার দানা) আধা কাপ, সেদ্ধ মুরগি অথবা চিকেন সসেজ আধা কাপ, আনার দানা সিকি কাপ, জলপাই তেল ১ টেবিল চামচ, লেবুর রস ১ চা-চামচ, চিলি ফ্লেক্স ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো, তেল ১ চা-চামচ, চিনি আধা চা-চামচ।
প্রণালি: ডাঁটা বাদ দিয়ে পালংশাক বেছে নিয়ে ফুটন্ত পানিতে ছেড়ে দিয়ে এক মিনিট রেখে তুলে নিন। এবার বরফ পানিতে কিছুক্ষণ রেখে তুলে নিয়ে কিচেন টিস্যুতে ভালো করে মুছে হাত দিয়ে ছিঁড়ে রাখুন। কচি ভুট্টার দানা অল্প লবণ দিয়ে সেদ্ধ করে নিন। মুরগি ব্যবহার করলে হাড় ছাড়ানো মুরগি ছোট টুকরা করে অল্প লবণ-হলুদ দিয়ে তেলে হালকা করে ভেজে নিন। চাইলে গ্রিল করা মুরগিও ব্যবহার করা যাবে। আর চিকেন সসেজ ব্যবহার করলে তাও ছোট ছোট টুকরা করে তেলে হালকা ভেজে নিন।
এবার ড্রেসিং তৈরির পালা। একটা পাত্রে অলিভ অয়েল, চিলি ফ্লেক্স, লেবুর রস, চিনি ও স্বাদমতো লবণ খুব ভালো করে মিশিয়ে নিন। তারপর এতে ভুট্টার দানা, মুরগি অথবা চিকেন সসেজ মিশিয়ে নিন। হালকা হাতে পালংশাক আর আনার দানা ছড়িয়ে মিলিয়ে নিলেই সালাদ তৈরি। সেদ্ধ ডিম বা খোসা ছাড়ানো কমলা ওপরে ছড়িয়ে পরিবেশন করলে দেখতে ভালো দেখাবে। সালাদ সব সময় পরিবেশনের একদম আগ দিয়ে তৈরি করা উচিত নাহলেপানি ছেড়ে দিয়ে নরম হয়ে যায়। এ ছাড়া
মুরগি বা সসেজের পরিবর্তে চিংড়িও ব্যবহার করা যেতে পারে।
ওটস-পালং পাকোড়া
উপকরণ: পালংশাক ১ কাপ (মিহিকুচি), ওটস ৪ টেবিল চামচ (প্রয়োজনে কমবেশি করা যেতে পারে), কর্নফ্লাওয়ার ৪ টেবিল চামচ, ডিম ১টা, চিকেন স্টকের কিউব ১টা, পেঁয়াজ ১টা (কুচি), আদা ১ চা-চামচ (কুচি), কাঁচা মরিচ তিন-চারটা (কুচি), লবণ স্বাদমতো, তেল ভাজার জন্য।
প্রণালি: একটা পাত্রে সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে ঘন গোলা তৈরি করে নিন। প্যানে গরম তেলে প্রয়োজনমতো গোলা ঢেলে কম আঁচে দুই দিক সোনালি করে ভেজে নিন। পছন্দমতো সস বা চাটনির সঙ্গে গরম গরম পরিবেশন করুন।
পালং পায়েস
উপকরণ: ডাঁটা বাদে পালংপাতা ১ কাপ, গাজর ২টি, পোলাওয়ের চাল ৩ টেবিল চামচ, তরল দুধ ১ লিটার, কনডেন্সড মিল্ক ১ টিন, ঘি ২ টেবিল চামচ, এলাচি গুঁড়া চা-চামচের তিন ভাগের এক ভাগ, গোলাপজল ১ চা-চামচ, বাদাম-আমন্ড-চেরি ৮-১০টি (সাজানোর জন্য)।
প্রণালি: পোলাওয়ের চাল ধুয়ে পানিতে ভিজিয়ে রাখুন দুই ঘণ্টা। পালংপাতা সেদ্ধ করে ব্লেন্ডারে দিয়ে পিউরি করে নিন। গাজর মিহি করে গ্রেট করে নিন। দুধ জ্বাল দিয়ে একটা বলক উঠলে পানি ঝরানো পোলাওয়ের চাল হালকা ভেঙে দুধে দিয়ে দিন। অন্য একটি পাত্রে ঘি গরম করে গাজর দিয়ে বেশি আঁচে হালকা ভেজে (গাজরের কাঁচা গন্ধটা চলে গেলেই হবে) দুধের মধ্যে দিয়ে দিন। গাজর ভাজার সেই পাত্রে অল্প ঘি দিয়ে পালং পিউরি দিয়ে হালকা ভেজে নামিয়ে নিন। দুধের মধ্যে দেওয়া চাল আর গাজর ভালোভাবে সেদ্ধ হয়ে থকথকে হয়ে এলে প্রয়োজনমতো কনডেন্সড মিল্ক আর এলাচি গুঁড়া মিশিয়ে দিন। গোলাপ পানিটাও এ সময় মিশিয়ে দিতে হবে। চুলা থেকে নামিয়ে ঠান্ডা করে তারপর অল্প অল্প করে পালং পিউরি মেশান। পিউরি সবটা না-ও লাগতে পারে। হালকা সবুজ ভাব এলে পরিবেশন পাত্রে ঢেলে বাদাম কুচি, লাল চেরি বা ভাজা গাজর কুচি দিয়ে সাজিয়ে ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করে তারপর পরিবেশন করুন।
পালং–চিংড়ির পোলাও
উপকরণ: বাসমতী বা কালিজিরা চাল ২ কাপ, চিংড়ি ১ কাপ (মাঝারি), পালংশাক দেড় কাপ (গরম পানিতে চুবিয়ে তুলে নেওয়া), পেঁয়াজ ৫টা (বড় ১টা বাটা আর ৪টা কুচি), আদা ১ টেবিল চামচ (কুচি), রসুনবাটা চা-চামচের তিন ভাগের এক ভাগ, টমেটো পেস্ট ১ কাপ (গরম পানিতে ডুবিয়ে তুলে খোসা ও বিচি ফেলে পেস্ট করে নিতে হবে), কাশ্মীরি মরিচ গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, হলুদ গুঁড়া আধা চা-চামচ, চিনি আধা চা-চামচ (টমেটো টক হলে পরিমাণে বেশি দিতে হবে), গরম মসলা (এক চিমটি জায়ফল, জয়ত্রীসহ) আধা চা-চামচ, কাঁচা মরিচ পাঁচ-ছয়টা (আস্ত), লবণ স্বাদমতো, তেল ১ কাপ, ঘি ৪ টেবিল চামচ, পানি প্রয়োজনমতো।
প্রণালি: চাল ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। পালংশাক কেটে নিন। প্যানে অল্প ঘি গরম করে পেঁয়াজ বেরেস্তা করে তুলে রাখুন। তারপর সেই ঘির সঙ্গে প্রয়োজনমতো তেল মিশিয়ে গরম করে তাতে লবণ-হলুদ মাখানো চিংড়ি হালকা করে নিন। তারপর বাটা পেঁয়াজ, টমেটো পেস্ট, রসুনবাটা, কাশ্মীরি মরিচবাটা, শুকনা মরিচ গুঁড়া ও লবণ দিয়ে কষান। এবার অল্প গরম পানি দিয়ে ভাজা চিংড়িগুলো দিয়ে স্বাদমতো চিনি দিয়ে দিন। চুলার আঁচ বাড়িয়ে দিয়ে চার-পাঁচ মিনিট রান্না করে ঘন ঝোলসহ নামান।
অন্য একটি প্যানে তেল গরম করে তেজপাতা ফোড়ন দিয়ে পেঁয়াজ আর আদাকুচি সোনালি করে ভেজে নিন। তাতে চাল দিয়ে তিন-চার মিনিট ভেজে প্রয়োজনমতো ফুটন্ত গরম পানি আর স্বাদমতো লবণ দিয়ে ঢেকে দিন। পানি চালের সমান হয়ে এলে প্যানের নিচে তাওয়া দিয়ে পোলাও দমে বসান। পানি পুরো শুকিয়ে গেলে আস্ত কাঁচা মরিচগুলো দিয়ে ঢেকে দিন।
এবার অন্য একটি প্যানে প্রথমে পোলাওয়ের স্তর, তারপর চিংড়ির স্তর, তারপর অল্প পালংয়ের স্তর দিয়ে কিছু বেরেস্তা ছড়িয়ে দিন। একইভাবে আরও দুটি স্তর সাজিয়ে আবারও দমে বসান পাঁচ-সাত মিনিটের জন্য। বেশিক্ষণ দমে রাখলে পালংয়ের রং নষ্ট হয়ে যাবে। তারপর পরিবেশন পাত্রে নামিয়ে ওপরে বেরেস্তা ছড়িয়ে দিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।
পালং-মাংস
উপকরণ: গরুর মাংস ১ কেজি (ছোট টুকরা করা), পালংশাক ২ আঁটি (ফুটন্ত পানিতে ডুবিয়ে নিয়ে পানি নিংড়ে কেটে নেওয়া), পেঁয়াজ ২টি (কুচি করে কাটা), কাশ্মীরি মরিচের গুঁড়া ২ চা-চামচ, শুকনা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া ১ চা-চামচ, জিরার গুঁড়া ২ চা-চামচ, আদাবাটা দেড় টেবিল চামচ, রসুনবাটা আধা চা-চামচ, টকদই ২ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদমতো, এলাচি-দারুচিনি-লবঙ্গ ৩টি করে, গরমমসলার গুঁড়া চা-চামচের তিন ভাগের এক ভাগ, তেজপাতা ৩-৪টি, কাঁচা মরিচ ৬-৭টি (গোটা), তেল ১ কাপ।
প্রণালি: কাশ্মীরি মরিচবাটা, আদা-রসুনবাটা, জিরার গুঁড়া ও টকদই দিয়ে মাংস মেখে ৪-৬ ঘণ্টা ম্যারিনেট করুন। তারপর প্যানে তেল গরম করে তেজপাতা আর গরমমসলার ফোড়ন দিয়ে পেঁয়াজ ছেড়ে দিয়ে বেরেস্তার মতো সোনালি করে ভেজে নিন। এবার মরিচের গুঁড়া, হলুদের গুঁড়া দিয়ে দিন। কিছুক্ষণ নেড়ে মাংস দিয়ে ঢেকে দিন। চুলার আঁচ কমিয়ে দিয়ে মাংসের গায়ের পানি না শুকানো পর্যন্ত কষান। অল্প গরম পানি দিয়ে ঢেকে দিন। পানি কমে গেলে আরও একবার কষিয়ে নিয়ে প্রয়োজনমতো গরম পানি দিয়ে ঢেকে দিন মাংস। মাংস সেদ্ধ হয়ে পানি শুকিয়ে এলে পালংশাক, আস্ত কাঁচা মরিচ আর গরমমসলার গুঁড়া মাংসে দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। শাক দেওয়ার পর বেশিক্ষণ চুলায় রাখা যাবে না। তাহলে শাকের রং নষ্ট হয়ে যাবে। মাংসের ওপরে তেল উঠে এলেই নামিয়ে নিতে হবে।