খোলা বাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ২৮ জানুয়ারি ২০১৬: ঢাকার একটি বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা আল-আমিন। সম্প্রতি শাহবাগ এলাকায় তার পাসপোর্টটি হারিয়ে ফেলেন। পাসপোর্ট নম্বর ছাড়া আর কিছুই ছিল না তার কাছে। জানতেন না কী করতে হবে। তবে সমাধান জানতে চেয়ে সেই দিনই বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের ফেসবুক পেইজে একটি পোস্ট দেন তিনি। মুহূর্তেই পেয়ে যান সমাধান। পোস্টের কমেন্ট বক্সে ‘সংশ্লিষ্ট থানায় জিডি করে রি-ইস্যু ফর্ম পূরণ’ করতে বলেন দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশ বহির্গমন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের কর্মকর্তা।
রাজধানীর আগারগাঁওসহ দেশের পাসপোর্ট অফিসগুলোতে যাওয়ার নাম শুনলেই ঘাম ঝড়ে অনেকের। পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে ভালো অভিজ্ঞতা হয়েছে, এমন লোক খুব কম পাওয়া যায়। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া ওই এলাকায় ভিড়তে চান না কেউদই। আর ঘরে বসেই এমন সমস্যার সমাধান। অধিদফতরের যুগোপযোগী এই উদ্যোগকে স্বাগত জানান ব্যাংক কর্মকর্তা আল-আমিন।
তরিকুল নামে আরেকজন তার সময়মত পাসপোর্ট না পেয়ে একটি পোস্ট দেন পেইজটিতে। উত্তরে ‘পাসপোর্টটি তৈরিতে এখনো পুলিশ অনুমোদন পাওয়া যায়নি’ বলে জানায় অধিদফতর।
জানা যায়, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির (আইসিটি) দিকে গুরুত্ব দিয়েছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে ২০১৪ সালের আগস্ট মাসে ফেসবুকে ‘উবঢ়ধৎঃসবহঃ ড়ভ ওসসরমৎধঃরড়হ ধহফ চধংংঢ়ড়ৎঃং’ নামে একটি পেইজ খুলে পাসপোর্ট অধিদফতর।
অধিদফতরের সিনিয়র কর্মকর্তা আজিজুল হক বলেন, আধুনিক যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পেইজটি খোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পেইজটি থেকে আবেদনকারীরা ওয়ানস্টপ সার্ভিস পাবে। এর মাধ্যমে আবেদনকারীদের মূল্যবান সময়ও বাঁচবে।
ফেসবুক পেজটিতে অধিদফতরের সকল প্রকার সম্মেলন, আলোচনা সভা ও মিটিংয়ের দিন-তারিখ ও আলোচ্য বিষয় তুলে ধরা হয়। পাশাপাশি সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহও তুলে ধরা হয়। পোস্ট করা হয় পাসপোর্ট অফিসের হালচাল সম্পর্কেও। এছাড়া কয়েকমাস আগে পাসপোর্ট অফিসের সার্ভারের সমস্যার বিষয়টিও জন সাধারণকে জানানো হয় এই ফেসবুক পেইজ থেকেই।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) সংক্রান্ত যে কোনো সমস্যার জন্য কোন দেশে কার সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে, তাদের ফোন নম্বরও দেয়া হয় এই ফেসবুক পেইজে। শেয়ার করা হয় পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত নিউজ।
অধিদফতরের এ পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ। সাকলাইন সাকী নামে এক ব্যবসায়ী জানান, সারাদিনে ২-৩ ঘণ্টা সময় আমরা ফেসবুকে ব্যয় করি। সেই ফেসবুকের মধ্যে পাসপোর্ট নিয়ে যাবতীয় তথ্য জানানো খুবই ভালো উদ্যোগ।
তাইজুল ইসলাম নামে এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী বলেন, গত বছর পাসপোর্ট অফিসে গিয়েছিলাম। পাসপোর্ট সময়মত না পাওয়ার কারণ জানতে পাসপোর্ট অফিসের ৫ জনকে জিজ্ঞেস করতে হয়েছে। ফেসবুকের এই উদ্যোগে জনগণের ভোগান্তি অনেকাংশে কমে আসবে।
শুধু অধিদফতর নয়, দেশের ৬৬টি পাসপোর্ট অফিসের আলাদা ফেসবুক পেইজও রয়েছে। সেখানেও সবাই অভিযোগ, তথ্যানুসন্ধান করতে পারবে। পাসপোর্টের জন্য ছবি তোলা এবং ফিঙ্গার প্রিন্ট দেয়া ছাড়া পাসপোর্ট তৈরির গাইডলাইনও দেয়া হয় এ ফেসবুক পেইজ থেকে।