Sat. May 3rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

23kখোলা বাজার২৪বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬: নেপোলিয়ন বা ক্লিওপেট্রার মতন নয়, এবারের প্রেমের গল্পটা আরও অনেক আগের। ব্যবিলনীয় সভ্যতার কথা সবারই কম-বেশি জানা। এই প্রেমিক যুগল ছিলেন সেই সভ্যতারই অংশ। নিজেদের মধ্যে কোন সমস্যা ছিল না তাদের। ছিল না কোন রাজনৈতিক অহেতুক ঝামেলা। আর দশটা সাধারণ ভালোবাসার গল্পের মতনই খুব সাদামাটা এই গল্পকে তবুও ইতিহাসের পাতায় স্থান করে দেয় পারিবারিক দ্বন্দ্ব।
অনেক আগে থেকেই প্রচন্ড শত্রুতা কাজ ছিল এই প্রতিবেশী দুই পরিবারের ভেতরে। কথা বলা তো দুরের কথা, দেখা করাটাও ছিল নিষিদ্ধ। কিন্তু তবুও নিয়তির মায়ার খেলায় আটকে যায় এই পরিবার দুটোরই দুই কনিষ্ঠ সদস্য। পাইরামুস ও থিসবী। দেয়ালের এপাশ-ওপাশ থেকে কথা আদান-প্রদানের মাধ্যমেই একে অন্যকে ভালোবেসে ফেলে তারা।
একটা সময় দুই পরিবারই জানতে পারে এই ভালোবাসার কথা। নিষেধ করে দেয় তারা দুজনকেই একে অন্যের সাথে যোগাযোগ রাখতে। কিন্তু এতকিছুর পরেও আটকে রাখা যায়নি এই দুই প্রেমীকে। একটা দেয়ালের সামান্য এক ফাটলের ভেতর দিয়েই রোজ কথা বলে যায় তারা আর শেষ অব্দি সিদ্ধান্ত নেয় পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করার (অল ওমেন্স টক)। নির্দিষ্ট দিনে, নির্দিষ্ট সময়ে, নির্দিষ্ট স্থানে গিয়ে হাজির হয় এই দুইজন।
প্রথমে স্থানটিতে আসে থিসবী। সেখানে পৌছানোর কিছুক্ষণের ভেতরেই একটা সিংহকে দেখতে পায় সে। সিংহটির মুখে তখন রক্ত লেগে আছে। খানিক আগেই কোন প্রাণীকে হত্যা করে আসছিল সে। সিংহকে দেখে ভয় পেয়ে যায় থিসবী। পালিয়ে যায় দৌড়ে। তাড়াহুড়োয় পেছনে ফেলে যায় ওড়না। আর ঠিক তার পরপরই ঘটনাস্থলে এসে হাজির হয় পাইরামুস। পাইরামুস এসে দেখতে পায় থিসবীর ওড়না মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। সেটাতে তখন সিংহের মুখের রক্ত লেগে রয়েছে। এর ভেতরে শিকার পালিয়ে যাওয়ায় রেগে ওড়নাটাকেই ছিঁড়ে ফেলেছিল সিংহ।
এক দেখাতেই ভেবে নেয় পাইরামুস যে, থিসবী এখানে এসেছিল আর সিংহ তাকে খেয়ে নিয়েছে। কষ্ট সহ্য করতে না পেরে সাথে সাথেই নিজের তলোয়ার দিয়ে আত্মহত্যা করে পাইরামুস। খানিক বাদে ভয় কমলে থিসবী আগের স্থানে ফেরত আসে এবং পাইরামুসের মৃত শরীর দেখে একই তলোয়ারে আত্মহত্যা করে (দি হলিডেস্পট)। ভালোবাসার জন্যে প্রাণ উৎসর্গ করে দুজনেই! হয়ে যায় পৗরাণিক গল্প আর যুগ যুগ ধরে চলে আসা ভালোবাসার সব পুজারীদের কাছে অমর।