Sat. May 3rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

7kখোলা বাজার২৪, সোমবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ : কোনো এক সকালে জেগে উঠে দেখলেন, কিছুই করার নেই। স্বপ্ন নয়, এটাই সত্যি হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজের রাইস ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মোশে ভার্দি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে রোবটরা আগামী ৩০ বছরে মানুষের অধিকাংশ কাজ দখল করে নেবে। কারণ, তারা দিনে দিনে আরও চৌকস এবং কাজকর্মে আরও সাবলীল হচ্ছে। আরও গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার, রোবট তৈরির খরচও বিস্ময়করভাবে কমছে।
আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য অ্যাডভান্সমেন্ট অব সায়েন্সের বার্ষিক সভায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নিয়ে গত শনিবার এক আলোচনায় ভার্দি বলেন, রোবটরা মানুষের প্রায় সব ধরনের কাজ করে ফেলার সামর্থ্য অর্জন করছে। বিষয়টি লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। যন্ত্র যদি মানুষের সব কাজ করে ফেলতে পারে, মানুষ কী করবে? সামাজিকভাবে এখন এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার সময় হয়েছে।
রাইস ইউনিভার্সিটির তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের পরিচালক ভার্দি আরও বলেন, কিছু কাজের জন্য মানুষের প্রয়োজন সব সময়ই থাকবে। তবে বিকল্প হিসেবে রোবটের ব্যবহার সবকিছু নাটকীয়ভাবে বদলে দিতে পারে। এতে কোনো পেশাই মানুষের একচ্ছত্র দখলে থাকবে না, সমান প্রভাব পড়বে নারী-পুরুষের ওপর। বড় প্রশ্ন হলো, বিশ্ব অর্থনীতি কি ৫০ শতাংশের বেশি বেকারত্ব সামাল দিতে পারবে?
স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র বা রোবটের ব্যবহারে শিল্পক্ষেত্রে গত ৪০ বছরে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটেছে। এতে উৎপাদনশীলতা বাড়লেও কমেছে মানুষের কর্মসংস্থান। যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন পণ্য উৎপাদন খাতে কর্মসংস্থান ১৯৮০-এর দশকের পর থেকে কমতে শুরু করে। এতে মধ্যবিত্ত শ্রেণির উপার্জনে ভাটা পড়ে। এখন দেশটিতে দুই লাখের বেশি রোবট শিল্পকারখানায় কাজ করছে। আর এ রকম ‘যন্ত্রশ্রমিকের’ সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। অধ্যাপক ভার্দির হিসাব অনুযায়ী, চালকবিহীন গাড়ির কারণে আগামী ২৫ বছরে যুক্তরাষ্ট্রে গাড়ি চালনার চাকরি ১০ শতাংশ কমবে।
কর্নেল ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার বিজ্ঞানের অধ্যাপক বার্ট সেলমান বলেন, আগামী দু-তিন বছরে স্বচালিত বা প্রায় স্বচালিত ব্যবস্থা সমাজে চালু হয়ে যাবে। সহযোগী বুদ্ধিমান যন্ত্রব্যবস্থাই মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। তবে বিষয়টা উদ্বেগের। কারণ, যন্ত্রের বুদ্ধিমত্তা কতটা বাড়বে এবং তারা কতটা চালাক হয়ে উঠবে, তা কেউ জানে না।
ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিশাস্ত্রবিদ ওয়েনডেল ওয়ালাচ মনে করেন, যন্ত্রের ব্যবহার অতিমাত্রায় বৃদ্ধির ভবিষ্যৎ বিপদের বিষয়ে বিশ্ববাসীর সচেতন হতে হবে। প্রযুক্তিকে মানুষের উত্তম সেবকের পর্যায়ে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। একে মানুষের বিপজ্জনক প্রভুতে পরিণত হওয়ার সুযোগ দেওয়া যাবে না।