এতে বলা হয়, ক্রমবর্ধমান মানবপাচারে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত হলো কেন্দ্রীয় স্থান। বিশ্বে যত মানুষ পাচার হয় সে হিসেবে মানব পাচারের হিসেবে ভারত দ্বিতীয়। এসব শিশুকে উদ্ধারে পদক্ষেপ নেয়া দাতব্য সংস্থাগুলো বলছে, উদ্ধারের পর শিশুদের তার দেশে ফেরত পাঠানো হবে তাদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। এক্ষেত্রে কয়েক বছরও লাগতে পারে।
তাঁরা বলছে, পাচার হওয়া শিশুর পরিচয় ও তার জন্মস্থান সনাক্ত করার ক্ষেত্রে রয়েছে আন্তর্জাতিক সমন্বয়ের অভাব। এজন্য যে সফটওয়্যার বানানো হয়েছে তাতে পাচার হওয়া শিশুর নাম, ছবি ও জন্মস্থান থাকবে। এ ডাটাবেজ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বিনিময় করা হবে। এ ডাটাবেজ তৈরি করেছে প্লান ইন্ডিয়া ও বাংলাদেশি সামাজিক প্রতিষ্ঠান ডিনেট, মিসিং চাইল্ড এলার্ট। যখন এই ডাটাবেজে উদ্ধার হওয়া শিশুর তথ্য যুক্ত করা হবে তখন ওই শিশু যে দেশে জন্মেছে সেই দেশের এজেন্সিগুলো দ্রুততার সঙ্গে সতর্ক হবে। বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের ১০টি দাতব্য সংস্থা এ প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত।
প্লান ইন্ডিয়ার প্রকল্প বাস্তবায়ন পরিচালক মোহাম্মদ আসিফ বলেন, আমরা দেখেছে উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিকে নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে ৩ বছর সময় লেগেছে। এত লম্বা সময় তাকে আটক থাকতে হয়েছে আশ্রয় শিবিরে। ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় শহর শিলিগুঁড়িতে মানব পাচার বিরোধী একটি সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরোও বলেন, আমাদের প্রযুক্তি পরীক্ষা করে দেখতে পেয়েছি এ প্রক্রিয়ায় পাচার হওয়া শিশুকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিজ দেশে পরিবারের কাছে হস্তান্তর সম্ভব। তবে দক্ষিণ এশিয়ায় কি পরিমাণ মানুষ পাচারের শিকার হন এর কোনো প্রকৃত সংখ্যা তাদের কাছে নেই।
মানবাধিকার কর্মীরা বলেন, অপেক্ষাকৃত দরিদ্র প্রতিবেশী নেপাল ও বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার মানুষ পাচার হন ভারতে। এর বেশির ভাগই নারী ও শিশু। এর মধ্যে বেশির ভাগকেই জোর করে বিয়ে দেয়া হয়। অথবা জোর করে মধ্যবিত্ত পরিবারের গৃহকর্মে চাকর হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ব্যবহার করা হয় ছোটখাট দোকান, হোটেলে। আটকে রাখা হয় পতিতাপল্লীতে। সেখানে নারীদের উপর্যুপরি ধর্ষণ করা হয়।
মোহাম্মদ আসিফ বলেন, যদি আমরা আমাদের উদ্যোগে সফল হই তাহলে তা হবে অধিকতর কার্যকর, নিরাপদ ও দেশে ফেরত পাঠাতে দ্রুততম ব্যবস্থা। এ বিষয়ে প্রথমে তিনটি দেশের সরকারকে আমরা রাজি করাতে পারবো। পরে তা পুরো অঞ্চলে ছড়িয়ে দেয়া হবে। যদি সব দেশ এ ব্যবস্থা অুনমোদন দেয় তাহলে পাচারকারীদের মধ্যে একটি চাপ সৃষ্টি হবে। যদি তারা জানতে পারে পাচারের তথ্য সীমান্তের ওপাড়ের দেশগুলোতে পৌঁছে গেছে তখন তাদের পক্ষে পাচার করা কঠিন হয়ে পড়বে।