Sat. May 3rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

14kখোলা বাজার২৪ শুক্রবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬: রুক্ষ লাল মাটির গ্রহটির নাম গধৎং বা মঙ্গল। নাসার মহাকাশ যান থেকে পাঠানো ছবিতে প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়ার দাবি করে ২০১৫তে ফেসবুকে বেশ তোলপাড় ছিল।
মাঝে মাঝে এই মাধ্যমে এমনসব কিছু চোখে পরে, যা দেখে শুধু হাসি পায়। নিজের মত প্রকাশ ও দাবি প্রচারে এই মাধ্যমের জুড়ি মেলা ভার।
গতবছর ফেবুতে দেখেছি অনেক স্টেটাস হয়েছে, স্বর্গ থেকে লন্ডনের রাস্তায় একজন দেবদূতকে পড়তে দেখেছে অনেকে। আর এখন তাঁরা দাবি করছে, মঙ্গলে প্রাণের সন্ধানও পেয়ে গেছে। এই প্রাণ নাকি রয়েছে কাঁকড়া ও নারী রূপে!
এইসব প্রাণের সন্ধান তারা পেয়েছে নাকি খোদ নাসার মাধ্যমে! তবে, এটি কিন্তু নাসার কোনো বিজ্ঞানীর আবিষ্কার নয়।
ছোটবেলায় যেমন শুনেছি, চাঁদে এক বুড়ি বসে সুতো কাটে রাতদিন, তেমন! বাস্তবতা কিন্তু তেমন না, বরং উলটা। সৌরজগতকে নিয়ে যারা গল্প বানায় তারা তা কেন বানায় আমি বুঝি নাৃ..
নাসার মহাকাশ যান কিউরিসিটি-র তোলা দুটি ছবি দেখে মঙ্গলগ্রহে প্রাণের সন্ধানের যে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন প্রচারকরা। আর এই নিয়ে ফেবুতে চলছে তোলপাড়। আজ আমি এই লাল রুক্ষ মাটির গ্রহটির সেসব ছবি শেয়ার করলাম। যেসব ছবিতে কাঁকড়াসদৃশ অবয়ব খুঁজে পাওয়ার কথা বলছে তারা। আসলে কি তাই? আর এইসব ছবি দেখেই ফেবু ব্যবহারকারীরা নিশ্চিত হয়ে গেছেন যে মঙ্গলে প্রাণীর বসবাস রয়েছে! ছবিটিতে কাঁকড়া আকৃতির অবয়বটিকে বিশেষভাবে চিহ্নিত করে এরই মধ্যে অনেকে শেয়ার করতে শুরু করেছে! মঙ্গলের মাটিতে কাঁকড়া আপনি দেখতে পাচ্ছেন তো?
মঙ্গলে শুধু কাঁকড়া খুঁজে পেয়েই তারা শান্ত হয়নি। কয়েকটি মিডিয়া নাকি মঙ্গলে মানুষের সন্ধানও খুজে পেয়েছে! শুধু মানুষ বললে ভুল হবে, জলজ্যান্ত একজন নারীকে তারা মঙ্গলে হাটতে দেখছে! বা নারী অবয়ব খুঁজে বের করেছে। ‘কিউরিসিটি’ রোভারের পাঠানো একটি ছবিতে নাকি তারা এসব দেখেছে! । ফেবুতে এসব শেয়ারের জন্য গরম খবর। তাই কাঁকড়া ও নারীর ছবি আজ আপনাদের জন্য শেয়ার করলাম। অন্যদের এই বিরাট তথ্যটি জানাতে ভুল করবেন না কিন্তু!
আচ্ছা দেখুন তো ছবিটিতে আপনি কোন নারী খুঁজে পান কি না?
মঙ্গল আসলে কি?
সৌরজগতের চতুর্থ গ্রহ মঙ্গল। পৃথিবী থেকে অনেকটা লাল দেখানোর কারণে এর অপর নাম লাল গ্রহ। মঙ্গল সৌর জগতের শেষ পার্থিব গ্রহ। অর্থাৎ এরও পৃথিবীর মত ভূ-ত্বক আছে। এর অতি ক্ষীণ বায়ুমণ্ডল আছে এর ভূ-ত্বকে রয়েছে চাঁদের মত অসংখ্য খাদ আর পৃথিবীর মত আগ্নেয়গিরি, মরুভূমি এবং মেরুদেশীয় বরফ। সৌর জগতের সবচেয়ে বড় পাহাড় এই গ্রহে অবস্থিত। যার নাম ‘অলিম্পাস মানস’। সবচেয়ে বড় গভীর গিরিখাতটিও এই গ্রহে, যার নাম ভ্যালিস মেরিনারিস। মঙ্গলের ঘূর্ণনকাল এবং ঋতু পরিবর্তনও অনেকটা পৃথিবীর মত।
১৯৬৫ সালে মেরিনার-৪ মহাকাশযান প্রথমবারের মত মঙ্গল গ্রহ অভিযানে যায়। এই অভিযানের পর থেকে অনেকেই ধারণা করে আসছিলেন যে মঙ্গলে তরল পানির অস্তিত্ব আছে। মঙ্গল থেকে পাওয়া আলো এবং আঁধারের তরঙ্গের মধ্যে পর‌্যাবৃত্ত পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ করে এই ধারণা করা হত।
বিশেষত মঙ্গলের মেরু অঞ্চল থেকে এ ধরণের পরিবর্তন চোখে পড়ে, যা মহাসাগর বা জলাশয়ের প্রমাণ হিসেবে অনেকেই গ্রহণ করেছিল। কিন্তু এসবের সবই অনাবিষ্কৃত।
বর্তমান গবেষণায় দেখা গেছে যে, গ্রহিয় বাসযোগ্যতা বা একটি গ্রহে প্রাণের বিকাশ ঘটার সম্ভবনার পরিমাণ বহুলাংশে এর পৃষ্ঠতলে পানির অস্তিত্বের উপর নির্ভর করে। এই শর্তটি পূর্ণ করার জন্য মঙ্গলকে অবশ্যই সৌরজগতের বাসযোগ্য অঞ্চলে থাকতে হবে। বর্তমানে সূর্যের বাসযোগ্য অঞ্চলের ভিতর পৃথিবী অবস্থান করছে। কিন্তু মঙ্গল গ্রহ এই অঞ্চল থেকে মাত্র অর্ধেক দূরে অবস্থিত। এই কারণে এর পৃষ্ঠতলের সব পানি জমে যায় এরকম ধারণা পূর্বে থাকলেও ২৮শে সেপ্টেম্বর ২০১৫ তে নাসা ঘোষণা দেয় মঙ্গলে তরল পানি প্রবাহের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। সেই থেকে প্রাণীর অস্তিত্ব নিয়ে গবেষণা চলছে।