খোলা বাজার২৪ শনিবার,২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬: মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচনী মনোনয়ন দৌড়ে রিপাবলিকানদের মধ্যে অনেকটা এগিয়ে আছেন বটে, তবে তাঁর অনেক মন্তব্য নিয়েও সমালোচনা কম হচ্ছে না। সম্প্রতি উচ্চশিক্ষিত অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তির বাজারে চাকরি দিতে বিশেষ সুবিধার এইচওয়ানবি ভিসা প্রদানের কড়া সমালোচনা করেন ট্রাম্প। সেটা না হয় ট্রাম্পের স্বভাব, কিন্তু এর মধ্য দিয়ে যে যুক্তরাষ্ট্রের বিশালত্বকেই কটাক্ষ করে বসলেন, তার কী হবে! সাম্প্রতিক এক সমীক্ষার হিসাবে বলছে, দেশটির প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের এক-তৃতীয়াংশের বেশি অবদান রেখেছেন বাইরে থেকে আসা অভিবাসীরা।
ওয়াশিংটন ডিসি-নির্ভর একটি সংস্থা দেশটির হয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণায় অংশ নিয়ে মার্কিন অর্থনীতিতে অবদান রেখেছেন এমন ব্যক্তিদের ওপর এক সমীক্ষা চালিয়েছে। দেখা গেছে, এঁদের মধ্যে সাড়ে ৩৫ শতাংশই বাইরে থেকে আসা অভিবাসী। ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড ইনোভেশন ফাউন্ডেশনের বুধবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আরও জানা গেছে, এই সংখ্যাটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রজন্মের অভিবাসীদের সংখ্যার (১৩ দশমিক ৫ শতাংশ) চেয়েও অনেক বেশি।
এমন এক সময়ে এই সমীক্ষার ফল প্রকাশিত হলো, যখন প্রেসিডেন্ট মনোনয়নপ্রত্যাশী ট্রাম্প এবং ক্রুজ দুজনই তাঁদের নির্বাচনী প্রচারণায় অভিবাসী আইন নিয়ে কঠোর সমালোচনায় ব্যস্ত। তাঁদের দুজনই এইচওয়ানবি ভিসা প্রোগ্রামের সমালোচনায় মুখর। কিন্তু সমীক্ষা স্পষ্টই বলে দিচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে অভিবাসীদের অবদান কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
আইটিআইএফের অর্থনৈতিক নীতির বিশ্লেষক এবং এই সমীক্ষার প্রধান অ্যাডামস নেগার বলেছেন, মানুষ হয়তো ভাবতে পারে, বিল গেটস এবং মার্ক জাকারবার্গের মতো কলেজের গণ্ডি না পেরিয়ে ঝরে পড়াদের তৈরি দামি প্রতিষ্ঠানগুলোই হয়তো দেশের প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের মূল চালিকাশক্তি দুনিয়াটা চলে গেছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, যুক্তরাষ্ট্রের উদ্ভাবকদের অধিকাংশই এসেছেন উচ্চশিক্ষিত অভিবাসীদের ভেতর থেকে। যাঁরা বছরের পর বছর ধরে বড় বড় প্রতিষ্ঠানে কঠোর পরিশ্রম করে অনেক আগেই তাঁদের ‘ঋণ’শোধ করেছেন।
সমীক্ষাটি প্রযুক্তির ব্যবসায় লিঙ্গ এবং সংখ্যালঘুদের অসামঞ্জস্যপূর্ণ উপস্থিতির কথাও উল্লেখ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের উদ্ভাবকদের মধ্যে নারীদের উপস্থিতি মাত্র ১১ দশমিক ৭ শতাংশ এবং যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া সংখ্যালঘু এখানে মাত্র ৮ শতাংশ। এর ভেতর আবার কালোদের আনুপাতিক হার মাত্র শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ।