খোলা বাজার২৪, সোমবার, ৭ মার্চ ২০১৬ : ৭ মার্চের ভাষণ একটি অসাধারণ বুদ্ধিদীপ্ত বক্তৃতা। এরমধ্যে সবকিছুই আছে। বাঙালি জাতিকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্র¯‘ত হওয়ার আহ্বানও আছে, একইসঙ্গে পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনার কতগুলো শর্তও তিনি দিয়েছেন। কারণ তখনও পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের জাতীয় সংসদের এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা। কিন্তু সেই অধিবেশন ডাকা হয়নি। পরে তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীও হতে পারেন আবার ছয়দফাভিত্তিক কর্মসূচিও ঘোষণা করতে পারেন। সেই সাংবিধানিক অধিকারটা কিন্তু রয়ে গেছে। সেই সময়ের প্রেক্ষাপটে এ অধিকার থাকাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এই সাংবিধানিক অধিকার যদি তার না থাকত, তাহলে চট করে স্বাধীনতার ডাক দেওয়াটা কঠিন ছিল। সেদিক থেকে তিনি ওই সুযোগটা রেখেছেন। এবং পশ্চিম পাকিস্তানিদের সাথে আলোচনার জন্য তিনি চারটা পয়েন্টও উল্লেখ করেছেন।
সরাসরি স্বাধীনতার ঘোষণা তিনি দেননি, কিন্তু জনগণ ধরে নিয়েছে স্বাধীনতার ঘোষণা এসেছে। ফলে বাস্তবতা ও কৌশলগত দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে গেলে এটা অসাধারণ বুদ্ধিদীপ্ত বক্তৃতা। বঙ্গবন্ধুর বক্তৃতার মধ্যে ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম’ এই জায়গাটাতে দুটো কথা কিন্তু খেয়াল করতে হবে। ‘মুক্তি’ এবং ‘স্বাধীনতা’। এটা আলাদা আলাদা করে বলেছেন। ‘স্বাধীনতা’ বলতে আমরা পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আলাদা রাষ্ট্র গঠনের কথা বুঝি। আর মুক্তি কথাটার অর্থ কিন্তু আরও ব্যাপক। যে মুক্তি এখনও আসেনি। সেই সংগ্রাম এখনও অব্যাহত রয়েছে। অর্থনৈতিক মুক্তি হয়নি, শোষণ থেকে মুক্তি হয়নি। সমাজতন্ত্র না হওয়া পর্যন্ত এটা হবেও না। তাহলে ওনার সেই বক্তব্য ঠিক এখনও পর্যন্ত প্রাসঙ্গিক রয়ে গেছে।
পরিচিতি : হায়দার আকবর খান রনো, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, সিপিবি