Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

43kখোলা বাজার২৪, সোমবার, ৭ মার্চ ২০১৬ : উত্তেজনাকে সঙ্গী করেই গতকাল ঘুম ভেঙেছিল বাংলাদেশের। এ এক অন্যরকম উত্তেজনা। একটা স্বপ্নকে সত্যি করার উত্তেজনা। কর্মব্যস্ত রোববারের সকালে ঢাকাসহ সারা দেশে ছিল একটাই জিজ্ঞাসা—পারবে কি বাংলাদেশ, পারবে কি সেই স্বপ্নকে সত্যি করতে!
এশিয়া কাপ ক্রিকেটে ফাইনালটা নতুন কিছু ছিল না বাংলাদেশের জন্য। চার বছর আগে, এশিয়া মহাদেশের ক্রিকেটীয় শ্রেষ্ঠত্বের মুকুটটা ছিনিয়ে নেওয়ার লড়াইয়ে শামিল ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু পাকিস্তানের বিপক্ষে ২ রানের সেই দুঃসহ হারের ক্ষতটা ছিল ভয়ংকর গভীর। এবারের এশিয়া কাপ ফাইনাল নিয়ে মানুষের উত্তেজনা, উন্মাদনা সেই দুঃখের স্মৃতিকে ভুলিয়ে দিয়ে নতুন দিনের আবাহনের।
কী সেই উত্তেজনা! শনিবার সন্ধ্যার মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে গোটা বাংলাদেশের প্রোফাইল ছবি হয়ে গেল ‘ক্রিকেটময়।’ প্রতিটি মানুষ নিজেদের প্রোফাইল ছবিটিতে দিলেন জাতীয় দলকে সমর্থনের ছোঁয়া। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ব্যাঘ্র-খচিত লোগোটি যেন হুংকার দিয়ে জানান দিচ্ছিল গোটা দেশের স্বপ্নের।
কেবল কি প্রোফাইল-ছবি পরিবর্তন? পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠার পর থেকেই চলছে অন্তর্জালে নানামুখী তৎপরতা। দলকে উৎসাহ দিতে গিয়ে চলল কিছু অতি-উৎসাহী ব্যাপার-স্যাপারও। তাতে কী! স্বপ্নের আকুতিটা তো তাতে তীব্রভাবেই প্রকাশিত।
দুপুর হতেই রোদের হাসি মিলিয়ে আকাশের মুখ গোমড়া। আরাম করে বাড়িতে বসে খেলা দেখার জন্য নগরের ঘরমুখী জনস্রোতেও ক্ষণিকের উৎকণ্ঠা। খেলা হবে তো। আশাবাদীরা উড়িয়ে দিচ্ছিলেন সেই শঙ্কা, ধুর, খেলা না হয়ে যায় না। এই মেঘ কেটে যাবে। কিন্তু একী! দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতেই আকাশ গোমড়া থেকে বিষণœ। ২৩ ফাল্গুনের সন্ধ্যায় হঠাৎ কালবৈশাখী যেন তেঁড়েফুড়ে এসে বাগড়া দিতে চাইল ক্রিকেট-উৎসবে। বিকেল থেকে সন্ধ্যা হতেই তীব্র ধূলি ঝড়ের সঙ্গে আকাশ ভেঙে বৃষ্টি এল।
হতচকিত সবাই। এমন তো হওয়ার কথা ছিল না। স্বপ্ন-পূরণের সন্ধ্যাটা এমন বৃষ্টিস্নাত হয়ে উঠবে তা কেউ বুঝতেই পারেননি।
আকাশে রোদ-মেঘের লুকোচুরি খেলা দেখতে দেখতে যাঁরা মিরপুরে পৌঁছেছিলেন তাঁদের অবস্থাটা একবার ভাবুন। কোথায় আনন্দ-উৎসবের আয়োজন নিয়ে তাঁরা মাঠে গিয়েছিলেন, তাঁরা তখন ব্যস্ত মাথা বাঁচাতে। মিরপুরে শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ঢোকার অপেক্ষায় যাঁরা লাইনে দাঁড়িয়ে, তাঁদের অবস্থা তো আরও খারাপ। উৎসবের আবহে রীতিমতো ছন্দপতন। কালবৈশাখীর রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে মাঠে শেষ পর্যন্ত বল গড়ালেও টস-ভাগ্যটা মাশরাফির সঙ্গে ছিল না। সঙ্গে ছিল না ফলও। শেষপর্যন্ত বৃষ্টিভেজা সন্ধ্যাটা কান্নাভেজা রাতে পরিণত হলো।