Sat. Sep 20th, 2025
Advertisements

38kখোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ১১ মার্চ ২০১৬ : মনের ভাব প্রকাশের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম পরিপূর্ণ বাক্য বলতে পারা। বলা হয়ে থাকে এ কারণেই মানুষ অন্য প্রাণী থেকে আলাদা। কিন্তু শুধু মানুষই নয় পরিপূর্ণ বাক্যে কথা বলতে পারে পাখিও, এমনটাই দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা।
নেচার কমিউনিকেশনস-এ প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, জাপানি টিট প্রজাতির পাখিরা যোগাযোগের জন্য কিছু বিশেষ নিয়ম অনুসরণ করে। গবেষকরা জানিয়েছেন, শব্দবিন্যাস যোগাযোগের ক্ষেত্রে আচরণগত জটিলতা তৈরি করে। ভাষার মূল ভিত্তি হলো কিছু শব্দের মিলনে পরিপূর্ণ বাক্য তৈরি করা।
গবেষণায় আগেই দেখা গেছে, পাখি এবং স্তন্যপায়ী প্রাণীরা তাদের মনের ভাব প্রকাশের জন্য কিছু অনর্থক শব্দ তৈরি করে। কিন্তু পরিপূর্ণ শব্দবিন্যাসের মাধ্যমে যোগাযোগ করা জটিল প্রক্রিয়া, যা মানুষের জন্য সহজ। জাপান, জার্মানি এবং সুইডেনের গবেষকরা জোরালোভাবে দাবি করেছেন, টিট পাখিদের বিচিত্র কন্ঠের আওয়াজে রয়েছে শব্দ বিন্যাস।
আপসালা ইউনিভার্সিটি-এর ড. ডেভিড হুইটক্রফট জানান, এই গবেষণা থেকে বোঝা যায়, শব্দবিন্যাস ক্ষমতা শুধু মানুষের মধ্যেই বিদ্যমান নয়, পাখিরাও শব্দ বিন্যাস করতে পারে।
যোগাযোগ সম্পন্ন করতে জাপানি টিট পাখি বিভিন্ন রকম ডাক দেয়। ছোট প্রজাতির টিট পাখিরা যখন বিপদ বুঝতে পারে বা শিকারির উপস্থিতি বুঝতে পারলে তারা বিভিন্ন রকম ডাক দেয়। এই ডাকগুলো কোনোটি একটি অর্থ আবার কোনটি কয়েকটি শব্দের সমন্বয়ে হয়ে থাকে।
ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড মিরর জানিয়েছে, প্লে-ব্যাক পরীক্ষার মাধ্যমে দেখা গেছে কোনো ‘বিপদ উপলব্ধি করতে পারলে’ তারা ‘এবিসি’ ব্যবহার করে। আবার কোনো খাদ্যের সন্ধান পেলে বা সঙ্গীকে ডাকতে তারা ‘ডি’ ব্যবহার করে। কোনো শিকারির উপস্থিতি বোঝাতে এ দুটির সমন্বয় করে ‘এবিসি-ডি’ শব্দবিন্যাসে ডাক দেয়। এই বিন্যাসে ডেকে তারা অন্য সঙ্গীদের সতর্ক করে দেয়। কিন্তু কৃত্রিমভাবে এই শব্দ বিন্যাসকে উল্টিয়ে দিলে তারা এর কোনো জবাব দেয় না।
টিট পাখির এই শব্দবিন্যাসের ক্ষমতা জানতে পারলে মানবজাতির বিবর্তন সম্পর্কেও ধারণা পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন হুইটক্রফট।