খোলা বাজার২৪, শনিবার, ১২ মার্চ ২০১৬ : আমাদের ব্যাংকিং খাত আস্তে আস্তে উন্নত হচ্ছে। আর এর সেবা দ্রুত থেকে দ্রুততর করার জন্য টেকনোলজির মাধ্যমে ইলেক্ট্রিক মানি তৈরি করে আমরা টাকা দ্রুততার সাথে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে পাঠাচ্ছি। আর এর মাধ্যমেই কিছু অসাধু লোক এই সিস্টেমগুলোর বিভিন্ন ত্রুটি কাজে লাগিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার। সম্প্রতি ফিলিপাইনে বাংলাদেশের ১০০ মিলিয়ন ডলার ট্রান্সফার হওয়াতে ব্যাপারটা নিয়ে অনেকেই আলোচনা করছেন। কিন্তু কীভাবে করে? কার মাধ্যমে টাকা তোলে এইগুলো অনেকের অজানা। এইগুলো নিয়ে আলোচনার একটা ছোট্ট প্রয়াস হচ্ছে এই লেখাটা।
কার্ডিং কি?
কার্ডিং শব্দটা অনেকের কাছে নতুন মনে হতে পারে। আসলে কার্ডিং একটা প্রচলিত শব্দ। আপনি কোনো অভিধানে এই শব্দ পাবেন না। এই শব্দটা সাধারণত ব্যবহার হয় অনলাইন ফ্রড ট্রানজেকশন-এর বিকল্প হিসাবে। কারণ যারা ফ্রড ট্রানজেকশন করে তারা আপনার কার্ডের ইনফরমেশন চুরি করে বিভিন্ন অনলাইন স্টোরের মাধ্যমে পণ্য কিনে আপনার টাকা তার নিজের মনে করে ব্যবহার করে।
অর্থাৎ আপনার ক্রেডিট কার্ড বা ডেবিট কার্ডের তথ্য ব্যবহার করে বিভিন্নভাবে আপনার টাকা হাতিয়ে নেওয়াকে কার্ডিং বলে। কার্ডিং শব্দটা সাধারণত ব্যবহৃত হয় যারা এই কাজ করে তাদের মধ্যে সাংকেতিক ভাষা হিসাবে। আমাদের প্রচলিত ভাষায় ‘ফ্রড ট্রানজেকশন’।
আপনার কার্ডের তথ্য পায় কীভাবে?
এটা একটা বড় প্রশ্ন। অনেকেই বলে আমার কার্ডের তথ্য পায় কীভাবে? আমি তো বাংলাদেশে থাকি একজন আফ্রিকা থেকে আমার তথ্য পায় কীভাবে? তাহলে ব্যাংকিং সিস্টেম কী নিরাপদ না? আপনার তথ্য কি ব্যাংকের কাছে নিরাপদ না। হাজার হাজার আইটি সিকিউরিটি প্রফেশনাল কী করেন? এই সবগুলোর উত্তর আমি দিচ্ছি ও বলে দিচ্ছি কীভাবে আপনার তথ্য তাদের কাছে চলে যায়?
আপনার সব তথ্য ব্যাংকের কাছে নিরাপদ। তারা লাখ লাখ ডলার বিনিয়োগ করছে আপনাকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য। এবং তাদের সিস্টেমগুলো যথেষ্ট নিরাপদ। তারা কোনো পাবলিক হোস্টিং কোম্পানি থেকে সার্ভার স্পেস ভাড়া নেয় না, যাতে সার্ভার কোম্পানির থ্রুতে আপনার তথ্য ফাঁস না হতে পারে। তাদের পুরো সার্ভার নিজেদের কন্ট্রোলে থাকে ও নিজেদের ইনফ্রাস্ট্রাকচারে থাকে এবং ফিজিক্যাল সিকিউরিটি যথেষ্ট থাকে। সফটওয়ারে সিকিউরিটিও থাকে। এরপরেও অনেক উচ্চ মানের হ্যাকার হলে সেটাও হ্যাক করা যেতে পারে।
বাংলাদেশে সম্প্রতি যে সকল এটিএম কার্ডের কেলেংকারি হয়েছে তা ফিজিক্যাল সিকিউরিটির অভাবে। মানে একজন এসে এটিএম বুথে স্কিমিং ডিভাইস বসিয়ে গেল আর আপনি দেখলেন না, এটা তো একেবারেই বাচ্চাদের মতো কাজ। তাই সার্ভারের নিরাপত্তার জন্য ফিজিক্যাল সিকিউরিটি ও সফটওয়্যার সিকিউরিটি সমান গুরুত্বপূর্ণ।
তাহলে ব্যাংকে যেহেতু তাদের সার্ভারের ফিজিক্যাল ও সফটওয়্যার পুরো নিরাপত্তা দিয়েছে তাহলে কীভাবে আমার তথ্য কার্ডিং যারা করে তাদের হাতে চলে যায়?
এর একটা সাধারণ উত্তর হচ্ছে, এর জন্য আপনি দায়ী।
খুবই কম ক্ষেত্রে আপনি যদি আপনার কার্ডের তথ্য কাউকে না দেন তাহলে ব্যাংকের ডাটাবেইজ থেকে সরাসরি কার্ডারদের হাতে চলে যাওয়ার চান্স থাকে। তাহলে কীভাবে যায়?
এটার উত্তর হচ্ছে আপনি কোনো না কোনোভাবে আপনার কার্ডের তথ্য তাদের দিচ্ছেন। আসুন জেনে নিই কীভাবে দিচ্ছেন আপনার কার্ডের তথ্য। তার আগে জেনে নিই আপনার কার্ডের কতটুকু তথ্য তাদের হাতে থাকলে আপনার কার্ড যে কেউ ব্যবহার করতে পারে। এই জন্য আপনাকে একটা কার্ডের ছবি দেখাই।