Wed. Sep 17th, 2025
Advertisements

24খোলা বাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ৭ এপ্রিল ২০১৬: বাড়ির মালিক ও ভাড়াটিয়াদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহের প্রেক্ষাপটে ডিএমপির বিধিমালা নিয়ে জারি করা রুল ৩১ মের মধ্যে হাই কোর্টে নিষ্পত্তি করতে বলেছে আপিল বিভাগ।
ওই রুলের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের এক আবেদনের শুনানি করে প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এই রায় দেয়।
রুল নিষ্পত্তির জন্য আপিল বিভাগ বিষয়টি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাই কোর্ট বেঞ্চে পাঠিয়েছে।
আপিল বিভাগে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তার সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একরামুল হক টুটুল।
অন্যদিকে রিট আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রফিকুর রহমান ও ব্যারিস্টার অনীক আর হক।
আদেশের পর একরামুল হক টুটুল বলেন, “এ বিষয়ে হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ একটি রিট খারিজ করেছিল, আরেকটি বেঞ্চ রুল দেয়। একই বিষয়ে দুই রকম আদেশ চলতে পারে না। এ কারণে আমার রুলের আদেশ বাতিল চেয়ে আবেদনটি করি।”
যে বেঞ্চ এর আগে রিট খারিজ করেছিল, সেই বেঞ্চকেই বিষয়টি নিষ্পত্তির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জানান।
ঢাকার বিভিন্ন বাড়িতে জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের আস্তানা ও বোমা তৈরির কারখানার সন্ধান পাওয়ার পর গত বছর নভেম্বরে বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করে মহানগর পুলিশ।
এভাবে ব্যক্তিগত তথ্য চাওয়ার মতো কোনো আইনি সুযোগ পুলিশের নেই দাবি করে তথ্য সংগ্রহের কার্যক্রম বন্ধে গতমাসে একটি রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জোতির্ময় বড়ুয়া।
ডিএমপি রুলস-২০০৬ অনুসারে সন্ত্রাস দমনে মহানগর পুলিশ ‘যে কোনো’ পদক্ষেপ নিতে পারে- এই যুক্তিতে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের বেঞ্চ ১৩ মার্চ ওই রিট খারিজ করে দেয়।
এদিকে ২০০৬ সালের ১৯ অক্টোবর জারি হওয়া ঢাকা মহানগর পুলিশ (নির্দেশনা ও নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালার ৪ (খ) বিধির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০ মার্চ আরেকটি রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের তিন আইনজীবী আইনুন নাহার সিদ্দিকা, এস এম এনামুল হক ও সুপ্রকাশ দত্ত।
প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি এ কে এম সাহিদুল হকের বেঞ্চ ২৭ মার্চ রুল জারি করে।
ঢাকা মহানগর পুলিশ (নির্দেশনা ও নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালার ৪ (খ) ধারায় যুক্ত ‘যেকোন’ শব্দটি কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে না তা জানতে চাওয়া হয় রুলে।
পুলিশ বিধিমালার ৪ (খ) ধারায় বলা হয়েছে, জনসাধারণের শান্তি বিঘœকারী যে কোনো উদ্যোগ প্রতিহতকরণসহ শান্তিপূর্ণ অবস্থা বজায় রাখার স্বার্থে ‘দ্রুত যে কোনো’ পদক্ষেপ গ্রহণ করা যাবে। ওই ধারা সংবিধানের ২৬, ২৭, ৩২ ও ৪৩ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক দাবি করে এই রিট আবেদনটি করা হয়।
ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহের বিষয়ে কোনো ধরনের স্থগিতাদেশ না দিলেও আইন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক ও ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারকে এক সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলেছিল হাই কোর্ট। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষ রুল বাতিল চেয়ে আপিল বিভাগে যাওয়ার পর বিষয়টি নিষ্পত্তির এই আদেশ এলো।