খোলা বাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ১৪ এপ্রিল ২০১৬: প্রকৃতি সেচ্ছায় বলে দিয়েছে বৈশাখের আগমনী বার্তা। গ্রীস্মের প্রচন্ড দাবদাহ, পলাশ-শিমুল গাছে আগুনের শিখা সে কথাই বলেছে। কালিমাকে দূরে সরিয়ে বিভিন্ন আনন্দ-উৎসবের মাধ্যমে নতুন বছরকে বরণ করে নেয় বাঙালিরা। এ দিন পুরনো বছরের সব অন্ধকার ধুয়ে মুছে বিচিত্র সব আয়োজনে ভরে ওঠে পুরো দেশ।
ঢাকাই চলচ্চিত্রের তারকারাও এ দিনটি বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উদযাপন করে থাকেন। সম্প্রতি ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় আট তারকা অভিনয়শিল্পীর সঙ্গে কথা হয় রাইজিংবিডির বিনোদন বিভাগের। আলাপকালে তাদের বৈশাখ নিয়ে জানিয়েছেন নানা কথা।
অমিত হাসান : পয়লা বৈশাখ বাঙালি জাতির অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। এ দিনটি সব বাঙালি উদযাপন করেন। আমারও বিএফডিসিতে মেলার আয়োজন করেছি। সকালে বিএফডিসিতে পান্তা-ইলিলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়া বিকালে শিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি। সারা বছর সব শিল্পী ও চলচ্চিত কলাকুশলীদের সঙ্গে দেখা হয় না। বর্ষবরণের মাধ্যমে অনেক শিল্পী ও চলচ্চিত্র কলাকুশলীদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ হয়। আর এই দিনে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে আমরা সবাই এই দিনে বাঙ্গালি পোশাক পরিধান করি এবং বাঙালি খাবার খেয়ে থাকি।
পপি : বর্ষবরণ সব সময়ই আনন্দের। এদিন খাটি বাঙালিনার পরিচয় পাওয়া যায়। সবার মতো আমিও বাঙালি পোশাক পরিধান করি। এ দিন বাইরে তেমন যাওয়া হয় না। ঘরোয়াভাবেই দিনটি উদযাপন করে থাকি। এ দিন কাছের মানুষদের শুভেচ্ছা জানাতেও ভালো লাগে।
আমিন খান : বাংলা নববর্ষের প্রস্তুতি আরো এক সপ্তাহ আগে থেকে শুরু হয়েছে। বাসার সবাই খুব এক্সসাইটেড। আসলে আমরা জাতি হিসেবে আনন্দ উৎসব করতে ভালোবাসি। আজ থেকে দশ বছর আগে পয়লা বৈশাখ সবাই একসঙ্গে এভাবে উদযাপন করত না। এখন সবাই ভেদাবেদ ভুলে একসঙ্গে আনন্দ-উৎসব করেন। আমি নিজেও পরিবারের লোকজনদের সঙ্গে আনন্দ করব। ইতোমধ্যে পদ্মার ইলিশ, কক্সবাজার থেকে ফ্রেস শুটকি, ভর্তা খাবারের জন্য রংপুর থেকে সরিষার তৈল সংগ্রহ করেছি। এসব বিষয়গুলো আমার অনেক ভালো লাগছে। বাঙালিদের আনন্দ করার অনেক বিষয় আছে। আমরা আগে এগুলো করতাম না। কিন্তু এখন মানুষ এগুলো করছেন।
ফেরদৌস : পয়লা বৈশাখে দুই মেয়ে, মা, স্ত্রী ও কিছু কাছের বন্ধুদের সঙ্গেই থাকি। সকালে আমি যে এলাকায় থাকি সে এলাকায় একটি কমিউনিটি অনুষ্ঠান থাকে। এখানে সবার সঙ্গে সকালের নাস্তা করি। দুপুরে প্রচন্ড গরম তাই দুপুরে বাসাই থাকি। বিকালে চ্যানেল আইয়ে’র অনুষ্ঠানে অংশ নেই। তারপর সন্ধ্যায় গলফ ক্লাবে যাই। এখানে রাতে ডিনার করে বাসায় ফিরি। এবারতো প্রচন্ড তাপদাহ হচ্ছে, তাই বাচ্চাদের নিয়ে বেশি দূরে যেতে চাচ্ছি না। বৈশাখ এমন একটা উৎসব হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, জাত, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে উৎসবটি পালন করে। প্রত্যেকের উচিৎ নিজের মতো করে নিজের সংগঠন বা গোষ্ঠী থেকে উদযাপন করা। অন্যকে বিরক্ত না করা। যার যেভাবে ভালো লাগে, সে সেভাবেই আনন্দ করবে অন্যের ক্ষতি না করে। এটাই হোক নতুন বছরের প্রতিজ্ঞা।
কেয়া : কিদিন ধরেই প্রচন্ড গরম পরেছে। তার পরও বৈশাখের আনন্দ একটুও কমেনি। পয়লা বৈশাখ বাঙালি ড্রেস পরে পান্তা-ইলিশ খাওয়ার আন্দটাই বেশি উপভোগ করি। এছাড়া মোবাইল, ফেসবুকে শুভেচ্ছা বিনিময় করাটাও আনন্দের। বিকালে বন্ধু-বান্ধব ও পরিবারের লোকজনদের সঙ্গে ঘুরতে বের হয়ে থাকি। সব মিলিয়ে বর্ষবরণের এ দিনটি সত্যিই একটা বাড়তি আনন্দ দেয়।
আঁচল আঁখি : পয়লা বৈশাখ মানেই বাঙালিয়ানা ভাব। সারা বছর শুটিংয়ে প্রয়োজনে ওয়েস্টার্ণ ড্রেস পরিধান করলেও এ দিনে বাঙালি পোশাক পরিধান করি। এ দিন পরিবারের লোকজনদের সঙ্গে সময় কাটাই। বিকালে বিএফডিসিতে মেলা হবে। তাই বিকালে বিএফডিসিতেই থাকব। খাবারের আয়োজনটা কয়েকদিন আগে থেকে করতে হয় বলে আনন্দটা শুরু হয়ে কয়েকদিন আগে থেকেই।
সাইমন সাদিক : বাঙালি উৎসব প্রিয় জাতি। আর বাঙালি জাতীর অন্যতম প্রধান উৎসব হলো বাংলা নববর্ষ। এ দিন সকল শ্রেণীর মানুষ উৎসব করেন। আমিও এ দিনে বাঙালি পোশাক পরব। সকালে বাসায় পরিবারের সঙ্গেই সময় কাটাব। বিকালে বিএফডিসিতে যাব। সেখানে অন্যান্য শিল্পীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করব। এটা অনেক আনন্দের।
ববি হক : বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন পয়লা বৈশাখ। এ দিনটি বাঙালি জাতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই বিশেষ এই দিনটি একটু ভিন্নভাবে উদযাপন করে থাকি। প্রতি বছরই এ দিনে সাদার সঙ্গে লাল ড্রেস পরিধান করি। এবারও তাই করব। আমার কাছে সব উৎসবই ভালো লাগে। তবে এবার বাইরে তেমন বের হব না। কারণ আমার বোনেরা দেশের বাইরে চলে যাবে। ওদের একটু বেশি সময় দিতে হবে।