মুন্নি সাহা: আমি একজন শফিক রেহমানের প্রতি আমার ব্যক্তিগত কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার জন্য আজ এ ছবিটি বেছে নিয়েছি। হ্যা, শফিক রেহমানের সাথে আমার কাজ করা হয়নি, কিন্তু সেই নব্বইয়ের দশকে আমার মতো এক নবিস লেখকের লেখা যাযাদি-তে ছাপা হওয়ার পর ডেকে পাঠিয়েছিলেন। চেহারা ছবি দেখে, তার সহজাত স্মার্টনেসে বলেছেন, তুমি তো ছোট্ট একটা মেয়ে, কিন্তু ঝাঁঝালো হাত। লিখবে।
শফিক রেহমানের যাযাদি-তে নিয়মিত লেখা হয়নি, কিন্তু সাংবাদিকতায় ভীরু পায়ের নবাগতা এই আমি শিখেছি, প্রশংসা করতে বড় মন লাগে, লাগে উদারতা। যা আমি খুব বেশি সিনিয়রদের মধ্যে দেখিনি, কাগজে কাজ করার সময়টায়।
টেলিভিশনেও শফিক রেহমানের সাথে যোগাযোগ ওয়ানওয়ে। ওনার লালগোলাপ অনুষ্ঠানের আমি নিয়মিত দর্শক। শিখেছি, রিসার্চ, সিনেমা, গান বা কোনো জোকস কিভাবে সহজ করে রিলেট করা যায়। আর দ্বি-পাক্ষিক যোগাযোগ পরবর্তীতে যতবারই টেলিভিশনে হয়েছে, ততবারই আমি ‘মারমুখী’। শফিক রেহমানকে পর্দায় কিছুটা অপদস্থ করে, বেকায়দা প্রশ্ন করে, যেন আমি আমাকে- প্রতিনিয়ত হাজারো মানুষ যে হেনস্তার চেষ্টা করছে, তার প্রতিশোধ নেবার চেষ্টা করেছি। প্রতিবারই শফিক রেহমান, হাল্কা অনুযোগ করেছেন, এবং পরের বাক্যেই বলেছেন শববঢ় রঃ ঁঢ়! এইতো এবারও ভালোবাসা দিবসেও শফিক রেহমান আমার ফোন পেয়ে বললেন, তুমি যদি স্রেফ প্রেম-ভালোবাসা নিয়ে প্রশ্ন করো, তাহলে তোমার অনুষ্ঠানে থাকছি, কানেক্টিভিটিতে। তিনি আমাদের পর্দায় হাজির হয়েই, বললেন- জানি তুমি অন্যপ্রশ্ন জিজ্ঞেস করবে, পলিটিক্যাল করবেৃ। তার এই জিজ্ঞাসায় কিছুটা লাই ছিল। লাই পেয়ে শফিক রেহমানকে একহাত নিয়েছেন, আমার শো-এর অতিথিরা। শো হিট্, কিছু ব্যাসিক প্রশ্নও উঠে এসেছে, শফিক রেহমান কি ইচ্ছে করেই স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস ভোলোানোর জন্য, ১৪ ফেব্র“য়ারি আমদানি করা ভালোবাসা দিবস উদযাপন শুরু করেছেন?
আমি জানি, ওই অনুষ্ঠানের পরেও যদি শফিক রেহমানের সাথে দেখা হতো, তিনি আমার ভঙ্গী, কন্টেন্ট নিয়ে সমালোচনা করতেন এবং শেষে বলতেন শববঢ় রঃ ঁঢ়!
ধারালো, সাহসী এবং ক্রিয়েটিভ সাংবাদিকতার তিনি একজন ভক্ত, সেটা মুন্নী সাহা বা শাকচুন্নি সাহা যেই হোক না কেন। তার এই উৎসাহটুকু, উদারতা এবং লাই দেওয়ার প্রতি কৃতজ্ঞতা আমার!
তাকে গ্রেফতারের পেছনের কারণ- যৌক্তিকতা, ন্যায়-অন্যায় কোনো কিছু নিয়ে তর্ক-কুতর্কের রুচি আমার নেই, নেই মেধাও। নির্বিকার একটা প্রফেশনাল দূরত্ব থেকে, শফিক রেহমানের গ্রেফতারের খবর দিচ্ছি, দেখছি। তবে যতবারই পর্দায় দেখছিলাম, শফিক রেহমান কে, ততবারই আমার প্রতি তার এই স্নেহ বা ঝাঁঝালো সাংবাদিক হিসেবে এগিয়ে যাবার অনুপ্রেরণার কথাগুলো মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল। কৃতজ্ঞতা শফিক রেহমান, আপনিও অবিচল থাকুন শববঢ় রঃ ঢ়ঁ!
(উপরের ছবিটা গত বছর রোজার সময়, ইফতার পার্টিতে। বিএনপি চেয়ারপারসন-এর কাছে শফিক ভাইই নিয়ে যান। আমি, বেগম খালেদা জিয়াকে বলি, ম্যাডাম ইন্টারভ্যু দেবেন না? শফিক ভাই, ম্যাডাম কে হুঁশিয়ার করে দেন ও কিন্তু দুষ্টু মেয়ে, কঠিন প্রশ্ন করে!) সূত্র : মুন্নী সাহার ফেসবুক থেকে নেওয়া।
খোলা বাজার২৪, বুধবার, ২০ এপ্রিল ২০১৬ :