খোলা বাজার২৪, শনিবার, ৩০ এপ্রিল ২০১৬: আবারও লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনের রাস্তায় মটরবাইক আরোহী বখাটের দ্বারা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের সমালোচনা করে প্রতিবাদের ঝড় তুলেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী একজন শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বৃহস্পতিবার উপাচার্যের বাসভবনের সামনের রাস্তা দিয়ে ক্যাম্পাসের ফটকের দিকে যাচ্ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন ছাত্রী। এ সময় তাদের পিছন দিক থেকে হর্ণ বাজিয়ে আসছিল একটি মটরবাইক। ঐ মটরবাইকে দুইজন আরোহী ছিলেন। তারা মটরবাইকের গতি কমিয়ে দিয়ে পাশাপশি হাটতে থাকা তিনজন ছাত্রীর মধ্যে একজনের নিতম্বে থাপ্পড় মেরে দ্রুত চলে যায়।
লাঞ্ছনার আতঙ্কে দিন পার করছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা। সম্প্রতি কয়েকটি ঘটনায় তাদের মাঝে এ আতঙ্ক বিরাজ করছে। চলতি বছরের শুরু থেকে থেকে এপ্রিল মাস পযর্ন্ত ছিনতাই, মারধর, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে চলাকালে গায়ে রং ছিটিয়ে মারধর করা, এমন কি হত্যার হুমকিরও শিকার হচ্ছেন বাংলা বিভাগের অষ্টম ব্যাচের শিক্ষার্থী নওশাদ আহমেদ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় বার্তা নামের ফেইসবুক গ্রুপে লেখেন, ‘নির্বিকার প্রশাসনের কাছে কতটুকু নিরাপদ কুবির ছাত্র-ছাত্রীরা’, তিনি বিভিন্ন সময় ছিনতাই, লাঞ্ছনা, মারধরের ঘটনার বিরুদ্ধে প্রশাসনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ বলে উল্লেখ করেন।’
কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী তারিক বিন তাসিন নিজ ফেইসবুক প্রোফইলে লেখেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়েল প্রাঙ্গনে আমাদের মেয়েরা কতটুকু নিরাপদ? বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের এলাকার এই ছেলেপেলেগুলোর সাহসিকতা দেখে অবাক হয়ে যাই। তাদের এই সাহস এক দিনে হয়নি। দিনে দিনে প্রশাসনের দুর্বলতা আর হোমরা চোমরাদের তেলবাজি করে তারা নোংরামির সার্টফিকেট নিয়েছে, তারা এখন রাজা। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েরা তাদের নিজেস্ব সম্পত্তি! আঙ্গুলটা প্রশাসনের দিকে তুলছি।’
এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষর্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে সমালোচনার ঝড় তোলেন। এ রকম পরিস্থিতির জন্য তারা প্রশাসনের নির্বিকার ভূমিকাকে দায়ী করেন তারা। পূর্বের ঘটনাসমূহের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ার কারনে এখন হরহামেশাই ছাত্রীদের লাঞ্ছনার শিকার হতে হচ্ছে বলে মনে করেন শিক্ষার্থীরাএ বিষয়ে প্রক্টর মো: আইনুল হক বলেন, ‘মটরবাইক আরোহীর দ্বারা ছাত্রী লাঞ্ছনার ঘটনার বিষয় আমি জানি না এবং কোন অভিযোগও পাইনি। যে অভিযোগগুলো আমরা পাই তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা আমরা নিয়ে থাকি। লাঞ্ছনা রোধে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যদের সচেতনাও জরুরী।’