অজয় দাশগুপ্ত ।। খোলা বাজার২৪, শনিবার, ৩০ এপ্রিল ২০১৬: দেশ ও দেশের মানুষেরা আসলেই খুব অসহায়। দেশের মূল জায়গাই নড়ে গেছে। যে যাই বলুক, এই যে খুনোখুনি বা মগজ ধোলাই হয়ে যাওয়া জেনারেশান এরা কিছুতেই বাগে আসবে না। এর দায় একক কোনো দল বা রাজনীতির ওপর চাপিয়ে দিলে হবে না। তাতে কাকের মতো চোখ বুজে মল খাওয়া যাবে কিন্তু পরিত্রাণ মিলবে না। পুরো সমাজ ও জাতির যে ভ্রান্তিবিলাস তার পেছনে আছে আপোসকামিতা আর বদলে যাওয়া বোধ।
কোনটা আসলে আমাদের চরিত্র? পহেলা বৈশাখের মাতমে ফুল, গান, নাচের বাঙালি, না আমরা চাই সংস্কৃতিহীন এক অন্যজীবন। এতবছর পেরিয়ে বিশ্বায়নের এই যুগে এতটা হিংস্রতা বা এমন খুনের নেশা সহজ কিছু নয়। এজন্য আমরা সবাই দায়ী।
এইটুকু একটা দেশ। মানুষগুলো এখানে জড়াজড়ি করে থাকে। ভালোবাসা না থাকলে বিশ্বাস না থাকলে যে কেউ কাউকে মেরে ফেলা সম্ভব। বিশেষত যখন কোনো নিরাপদ বেষ্টনী নেই। তাই বলি, একটা সিরিয়াস বিষয়কে ‘বিচ্ছিন্ন’ বলে এড়িয়ে যাওয়া সরকারি লোকেরা আসলে সব বোঝেন। তারা জানেন এটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে। ধামাচাপা দিয়ে রাখাটাই তাদের কাজ।
রাজনীতি একে বাগে আনতে পারবে না। এর থেকে বের হবার শক্তি নেই জাতির। যারা পারতেন তারা রিস্ক নেবেন না। তারা লাখো মানুষ জড়ো হলে তখন আলোকিত হতে আসবেন। বাকি সময় থাকবেন পাহারায় বা আড়ালে। সংস্কৃতির ধারক-বাহকরা তাই চুপ। এদিকে যারা মরছেন তাদের জন্য শোক করার মানুষও কমছে। ভয় আর জান বাঁচানো ফরজের দেশে কোনো লীগ, কোনো দল, কোনো শক্তি কি আসলে এগিয়ে আসবে?
সবার ভেতরটাই যে আখের আর এখনকার ধান্দায় অন্ধকার। একসময় যে দলের, যে মানুষদের, যে কাজ বা প্রক্রিয়ার নাম শুনলে গায়ের রক্ত টগবগ করত, চেতনায় শরীরে কাঁটা দিত, এখন তা ভয়ের কাঁটা হয়ে গেছে। মনে হয়, একদিন এবং অচিরেই তা হবে গলার কাঁটা।
এ কাঁটা জাতি গিলবে না উগরে দেবে? কিসে মিলবে তার পরিত্রাণ?