খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ১০ মে ২০১৬: বাহাত্তর বছর বয়সে মা হয়েছেন ভারতের পাঞ্জাবের এক নারী। বিবাহিত জীবনের ৪৬ বছর ও মেনোপজের ২০ বছর পর সন্তান জন্ম দিয়ে রীতিমতো হৈচৈ ফেলে দিয়েছেন তিনি।
হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়, মা হওয়ার তীব্র আকাক্সক্ষা নিয়ে জীবনের এতগুলো বছর পার করে দিয়েছেন দালজিন্দার কউর। সব শেষে ইন-ভিটরো ফার্টিলাইজেশন বা আইভিএফ-টেস্ট টিউব পদ্ধতির শরণাপন্ন হন দালজিন্দার কউর-মোহিন্দার সিং গিল দম্পতি। এই পদ্ধতিতে নারী শরীর থেকে ডিম্বাণু ও পুরুষের শুক্রাণু সংগ্রহ করে শরীরের বাইরে টেস্ট টিউবে নিষিক্ত করা হয়।
আইভিএফ পদ্ধতি ব্যবহার করে গত ১৯ এপ্রিল সুস্থ-সবল একটি ছেলেসন্তানের জন্ম দেন দালজিন্দার কউর। ছেলের নাম রাখা হয়েছে আরমান সিং।
শুধু এই চিকিৎসাসেবা নেওয়ার জন্য ২০১৩ সালে স্ত্রীকে নিয়ে পাঞ্জাবের অমৃতসর থেকে হরিয়ানায় চলে আসেন ৭৯ বছর বয়সী মোহিন্দার সিং গিল। দুই দফা আইভিএফ পদ্ধতিতে গর্ভধারণ করতে ব্যর্থ হন দালজিন্দার। অবশেষে তৃতীয়বারের চেষ্টায় গত বছরের জুলাইয়ে সফল হন তিনি।
হরিয়ানার হিসাররে ন্যাশনাল ফার্টিলিটি অ্যান্ড টেস্ট টিউব বেবি সেন্টারের স্বত্বাধিকারী ডা. অনুরাগ বিষনোই হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেন, ‘পত্রিকা মারফত জানতে পেরে ২০১৩ সালে আমার কাছে প্রথম আসেন এই নারী। বয়স্ক নারীদের আইভিএফ করানোর ক্ষেত্রে আমাদের আগে থেকেই সুনাম ছিল। তবে সব নারীই সন্তান জন্ম দেওয়ার মতো সুস্থ থাকেন না। দালজিন্দারকে দেখেও বেশ দুর্বল মনে হচ্ছিল। সে জন্য আমি তাঁকে প্রথমে একজন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যেতে বলি। সেখান থেকে ফিটনেস সার্টিফিকেট দিলেই কেবল তাঁর চিকিৎসা শুরু সম্ভব বলে জানিয়ে দিই।’
দালজিন্দার কউরের সৌভাগ্য যে, সব ধরনের ডাক্তারি পরীক্ষায় তিনি উতরে যান। দেখা যায়, সন্তান ধারণের জন্য তিনি সক্ষম। এর পর ২০১৩ সালেই কাজ শুরু করেন ডা. অনুরাগ। তবে প্রথম চেষ্টা ব্যর্থ হয়। এটাকে স্বাভাবিক বলেই উল্লেখ করলেন তিনি। এর ছয় মাস পর করা আরো একটি চেষ্টাও ব্যর্থ হয়। তবে সব শেষে গত বছর সাফল্য ধরা দেয়।
সন্তান ধারণে অক্ষম বেশির ভাগ নারীর মতো দালজিন্দারেরও ফেলোপিয়ান টিউব বন্ধ ছিল। সে জন্য সব সময় নিজের ভাগ্যকে দোষারোপ করে এসেছেন তিনি। তবে মা হওয়ার প্রবল আকাক্সক্ষা থেকে মেনোপজ হয়ে যাওয়ার পরও আইভিএফ পদ্ধতির কথা শুনে আগ্রহী হন তিনি। এর পরের ইতিহাস তো জানা হলোই।