খোলা বাজার২৪, রোববার, ১৫ মে ২০১৬: মাইক্রোমেটিওরাইটস। মহাজাগতিক ধূলিকণার প্রাচীনতম ফসিলস। আপাতত বিশ্বের তামাম বিজ্ঞানীদের নজর এই ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণার উপরেই। কারণ, এই মহাকাশের এই ধূলিকণাই নতুন করে তাদের ভাবাচ্ছে। পৃথিবীর চারপাশে অক্সিজেনের স্তর নিয়ে মানুষের চলতি ধারণাকে চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড় করিয়েছে এই কণার রাসায়নিক গঠন।
সবুজ ধ্বংসের ফলে পৃথিবীর উপর অক্সিজেনের স্তর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে—এহেন সতর্কবাণী প্রায়ই শোনা যায়। কিন্তু ‘জার্নাল নেচার’-এ অস্ট্রেলিয়া এবং ব্রিটেনের দুই ইউনিভার্সিটির সাম্প্রতিক সমীক্ষা বলছে, পৃথিবীর উপরিভাগে অক্সিজেন স্তরের মাত্রা যা ছিল, তা-ই রয়েছে। কিন্তু নিজেদের স্বার্থেই আমাদের সবুজ রক্ষা করতে হবে। মোনাস ইউনিভার্সিটি, অস্ট্রেলিয়ান সিনক্রোট্রোন এবং ইম্পেরিয়াল কলেজ অব লন্ডনের এই গবেষণা সেই মাইক্রোমেটিওরাইটসকে ঘিরেই।
কী বলছে সমীক্ষা? জানা যাচ্ছে, পৃথিবীর উপরিভাগে অক্সিজেনের দু’টি স্তর রয়েছে। এই দু’টিকে পৃথক করেছে মিথেন গ্যাসের একটি পাতলা চাদর। এখন নিম্ন স্তরে অক্সিজেনের যা ঘনত্ব ছিল ২৭০ কোটি বছর আগে, এখনও তাই রয়েছে। আর পৃথিবীর জন্মের সময় থেকেই অক্সিজেনের উপরের স্তরে ঘনত্ব বেশি ছিল। এখনও তাই রয়েছে।
কীভাবে পাওয়া গেল এই তথ্য? পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায় প্রাপ্ত একটি প্রাচীন চুনাপাথর থেকে এই মাইক্রোমেটিওরাইটস সংগ্রহ করা হয়েছিল। তারপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হয় সেটির উপর। মোনাস ইউনিভার্সিটির অ্যান্ড্রু টমকিনস বলেন, ‘কাটিং এজ মাইক্রোস্কোপে মাইক্রোমেটিওরাইটস পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, অক্সিজেনের উপরের স্তরে যাওয়ার পরই সেটি আয়রন অক্সাইড খনিজে পরিণত হয়েছে। অথচ, নিম্নস্তরে এই কণার রাসায়নিক কোনও পরিবর্তন হয়নি। এর কারণ একটাই। উপরের স্তরে অক্সিজেনের ঘনত্ব অনেক বেশি। প্রাচীনতম এই মহাকাশ ধূলিকণার গঠন থেকেই প্রমাণিত, তখনও পৃথিবীর উপরিভাগের নিম্নস্তরে অক্সিজেনের ঘনত্ব বেশ কম ছিল। প্রায় এখনকার মতোই।’
কিন্তু উপরিভাগে অক্সিজেনের ঘনত্ব এত কেন? উত্তরে টমকিনস জানিয়েছেন, ‘সম্ভবত মিথেন গ্যাসের স্তরের জন্যই এটা হচ্ছে। সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি শোষণ করে মিথেন স্তর যে উত্তাপ তৈরি করছে, তার ফলে কার্বন-ডাই অক্সাইড ভেঙে গিয়ে অক্সিজেনে পরিণত হচ্ছে।’