Thu. Sep 18th, 2025
Advertisements

44খোলা বাজার২৪, বুধবার, ২৫ মে, ২০১৬: মতিউর রহমান নিজামীসহ একাত্তরের যুদ্ধাপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতাদের পাকিস্তানের সর্বোচ্চ বেসামরিক খেতাব ‘নিশান-ই-পাকিস্তান’ এ ভূষিত করার প্রস্তাব এনেছে পাঞ্জাবের প্রাদেশিক পরিষদ।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ‘নাক না গলাতে’ বার বার আহ্বান জানানো হলেও পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) সদস্য আলাউদ্দিন শেখ মঙ্গলবার পাঞ্জাবের প্রাদেশিক পরিষদে ওই প্রস্তাব তোলেন।
এরপর ওই প্রস্তাব প্রাদেশিক পরিষদে গৃহীত হয় বলে পাকিস্তানের দুনিয়া টিভির খবর।
ওই প্রস্তাবে বলা হয়, পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের ফাঁসি হচ্ছে। তাই তাদের ‘নিশান-ই-পাকিস্তান’ সম্মাননায় ভূষিত করা উচিত।
একাত্তরে বুদ্ধিজীবী গণহত্যা, হত্যা ও ধর্ষণের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধে গত ১১ মে জামায়াতে ইসলামীর আমির নিজামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয় বাংলাদেশে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নিজামী ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর তখনকার ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘের সভাপতি। সেই সূত্রে তিনি আল বদর বাহিনীরও নেতৃত্ব দেন।
ওই বাহিনী বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সহায়তা দেয় এবং ব্যাপক যুদ্ধাপরাধ ঘটায়। যুদ্ধের শেষভাগে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করতে বুদ্ধিজীবী হত্যার নকশা বাস্তবায়ন করা হয় আল-বদর বাহিনীর মাধ্যমেই। আর সেই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা, নির্দেশদাতা হিসেবে দোষী সাব্যস্ত হন নিজামী।
নিজামীর ফাঁসি কার্যকরের পর পাঞ্জাবের প্রাদেশিক পরিষদেই একটি নিন্দা প্রস্তাব পাস হয়েছিল।
ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের নেতা মেহমুদুর রশিদের আনা ওই নিন্দা প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, পাকিস্তানের প্রতি ‘ভালোবাসার’ কারণেই বাংলাদেশে জামায়াত নেতাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর কাছে তুলে ধরতে পাকিস্তান সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছিল ওই প্রস্তাবে।
যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিরোধিতা করে পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর প্রধান সিরাজ-উল হক সে সময় বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘ভারত সরকারের নির্দেশনায়’ কাজ করছেন।
নিজামীর ফাঁসি কার্যকরের নিন্দা জানিয়ে পাকিস্তান পার্লামেন্টেও একটি প্রস্তাব পাস হয়। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে সে সময় বলা হয়, “পাকিস্তানের সংবিধান সমুন্নত রাখাই নিজামীর একমাত্র অপরাধ।”
নিজামীর আগে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মো. মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লা ও মো. কামরুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সময়ও একই প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল পাকিস্তান।
ইসলামাবাদের এই প্রতিক্রিয়াকে ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ’ বিবেচনা করে এ বিষয়ে পাকিস্তানের কাছ থেকে দায়িত্বশীল আচরণ প্রত্যাশা করা হয় ঢাকার পক্ষ থেকে।