Wed. Sep 24th, 2025
Advertisements

12kখোলা বাজার২৪, শনিবার, ২৮ মে ২০১৬: সরকার উৎখাত ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে ইসরায়েলের ক্ষমতাসীন লিকুদ পার্টির নেতা মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে বৈঠক করার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় কারাবন্দি বিএনপি নেতা আসরাম চৌধুরী। সেই ইসরায়েলি নেতা এবার জানালেন, প্রধানমন্ত্রীপুত্র সজীব ওয়াদের জয়ের সঙ্গেও তার বৈঠক হয়েছে। আর ভারতে আসলামের সঙ্গে বৈঠকের মাস দুই আগেই ওয়াশিংটনে জয়ের সঙ্গে বৈঠকটি হয় বলে জানান তিনি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ সম্পর্কিত একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশের সূত্র ধরে কয়েকটি অনলাইন পত্রিকায় সংবাদও পরিবেশন করা হয়। শুক্রবার বিবিসি বাংলা মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে কথা বলে জয়ের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে।
বিবিসির কাছে সাফাদি দাবি করেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ও তার তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদের সঙ্গে গত বছর তার সাক্ষাৎ হয়েছিল। বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীর সঙ্গে দেখা হওয়ার আগেই যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে জয়ের দপ্তরে দুজনের কথাবার্তা হয়।
জয়ের সঙ্গে বৈঠকের পটভূমি ব্যাখ্যা করে সাফাদি জানান, ৪/৫ মাস আগে তিনি যখন শেষবার ওয়াশিংটন ডিসিতে যান, সে সময় একজন আমেরিকান বন্ধু দু’জনের মধ্যে এই বৈঠকটির আয়োজন করেন। ওই বন্ধু তাকে জানান, যার সাথে দেখা হবে তিনি বাংলাদেশের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। এরপর তিনি ওয়াশিংটন ডিসিতে সজীব ওয়াজেদের অফিসে যান। সাক্ষাতের শুরুতে জয় তাকে বলেন যে তিনি বাংলাদেশে একজন উচ্চপদস্থ ব্যক্তি। কিন্তু তিনি যে প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সেটা সাফাদি তখনও তা জানতেন না বলে উল্লেখ করেছেন।
সাফাদি আরো জানান, বৈঠকে সজীব ওয়াজেদই মূলত কথা বলেন। তিনি শুধু শোনেন। জয় তার কাছে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেন বাংলাদেশের সরকার কত ভালো কাজ করছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতের সঙ্গে বর্তমান সরকারের সম্পর্কে কত ভালো।
সাফাদি দাবি করেন, সারা বিশ্বে তার ব্যক্তিগত যোগাযোগের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে জয় সরকারের পক্ষে সমর্থন বাড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করেন। তখন তিনি বলেন, তার (জয়) বক্তব্যের সাথে তিনি একমত হতে পারছেন না। তিনি তাকে বলেন, বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে সংখ্যালঘু বিশেষ করে হিন্দুদের হত্যার খবর দেখতে পাচ্ছেন। জয় তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে এ খবরগুলো ভুল।
সব মিলিয়ে বৈঠকটির স্থায়িত্ব ১৫ থেকে ১৬ মিনিটের বেশি ছিল না বলে জানান সাফাদি।
তবে সাফাদির এই দাবির ব্যাপারে তাৎক্ষণিকভাবে জয়ের কোনো মন্তব্য নিতে পারেনি বিবিসি।
এই সাফাদির সঙ্গে সাক্ষাতের সূত্র ধরে বাংলাদেশের পুলিশ সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করেছে। আসলাম ভারতে গিয়ে সাফাদির সঙ্গে বৈঠক করেছেন এমন খবর সংবাদপত্রে প্রকাশের কয়েকদিন পর গত ১৫ মে তাকে ঢাকায় আটক করা হয়। সাফাদিকে ইসায়েলের গোয়েন্দা সংস্থার (মোসাদ) সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলেও উল্লেখ করে কয়েকটি পত্রিকা।
আসলামকে আটকের পর সাফাদি একাধিক গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, ভারতে আসলাম চৌধুরীর সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয়েছিল ঠিকই, তবে তাদের মধ্যে কোনো গোপন বিষয় নিয়ে কথা হয়নি।
কিন্তু পুলিশের বলছে, সাফাদি যাই বলুন না কেন তারা আসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে সরকারের উৎখাতের ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছেন।