Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

42খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ১৭ জুন ২০১৬: টুইটার, ফেইসবুক এবং গুগলই প্যারিস হামলার জন্য দায়ী।
প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে আইনগত ব্যবস্থার সম্মুখীন করেছেন ২০১৫ সালের নভেম্বরে প্যারিসে হওয়া সন্ত্রাসী হামলায় নিহত এক নারীর বাবা।
রেইনাল্ডো গঞ্জালেস নামের ওই ব্যক্তি অভিযোগ করেন, গুগল, ফেইসবুক এবং টুইটার চরমপন্থীদের ‘ম্যাটিরিয়াল সাপোর্ট’ প্রদান করেছে। প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো তথাকথিত ইসলামিক স্টেট গ্রুপ বা আইএস-কে তাদের বিনিয়োগ বাড়াতে এবং উগ্রপন্থী প্রচারণাতে জেনেশুনে অনুমতি দিয়েছে।
অন্যদিকে, চরমপন্থী ‘ম্যাটিরিয়াল’-এর বিষয়ে নীতিমালা থাকার কথা জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো, জানিয়েছে বিবিসি।
চরম্পন্থীরা যখন প্যারিস বাটাক্ল্যান সঙ্গীতানুষ্ঠান, বার, রেস্টুরেন্ট এবং সেইন্ট ডেনি-এর অদূরে জাতীয় ফুটবল স্টেডিয়ামে হামলা করলে ১৩০ জন নিহত হয়। নিহতদের মধ্যে একজন ছিলেন গঞ্জালেস-এর মেয়ে নোয়েইমি।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার আদালতে দায়ের করা এ সংক্রান্ত মামলার নথিতে বলা হয়, সন্ত্রাসী গ্রুপ আইএসআইএস বছরের পর বছর ধরে তাদের প্রচারণায়, তহবিল গঠনে এবং নতুন কর্মী নিয়োগ দিতে প্রতিষ্ঠানগুলোর সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করছে এবং প্রতিষ্ঠানগুলোও সবকিছু জেনেই অনুমতি দিয়েছে। এই ম্যাটিরিয়াল সাপোর্ট আইএসআইএস-কে আরও শক্তিশালী করতে সহায়তা করে, যার ফলে ১৩ নভেম্বরের প্যারিস হামলা ঘটে, এতে নোয়েইমি গঞ্জালেসসহ ১২৫ জন নিহত হয়েছিল।
গঞ্জালেস অভিযোগ করেন, টুইটার, ফেইসবুক এবং গুগল-এর মালিকানাধীন ইউটিউব-এর কারণে আইএসআইএস শেষ কয়েক বছরে আগের থেকে অনেক বেশি বিপদজনক হয়ে উঠেছে, যা এই প্রতিষ্ঠানগুলো ছাড়া সম্ভব ছিল না। কারণ, তারা এইসব গ্রুপের বার্তাগুলো ছড়িয়ে দিতে সহায়তা করছে।
তিনি ব্র“কিংস ইনস্টিটিউশন-এর এক গবেষণা থেকে উদ্ধৃত করে বলেন, “টুইটার ব্যবহারের মাধ্যমে তারা তাদের চরমপন্থী প্রচারণা, বিশ্বে তাদের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া এবং মৌলবাদীদের প্রভাবিত করেছে।”
ফেইসবুক এবং টুইটার দাবি করেছে, এই বিষয়ে তারা অবগত ছিল না এবং এ নিয়ে তাদের একটি সুস্পষ্ট নীতিমালা রয়েছে। মাইক্রোব্লগিং সাইটটির পক্ষ থেকে বলা হয়, “সারা বিশ্বজুড়ে অনেকগুলো দল এইসব নীতিলঙ্ঘনের অভিযোগ পর্যালোচনা করছে, সহিংসতামূলক আচরণ চিহ্নিত করছে এবং প্রয়োজনে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।”
ফেইসবুক এর বিবৃতিতে বলা হয়, “যদি কোনো আসন্ন হুমকি বা সন্ত্রাসী হামলার প্রমাণ পাওয়া যেত, তবে তারা আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করত।”
গুগল তাদের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি, কিন্তু তাদের দাবি, যাবতীয় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিষয় গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয় এবং সহিংসতা সৃষ্টিকারী ভিডিওগুলো দ্রুত মুছে ফেলা হয়।
মার্কিন আইন অনুযায়ী, সাধারণত ইন্টারনেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের নেটওয়ার্কে যদি ব্যবহারকারীরা কিছু পোস্ট করে তবে তাদের সেই দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় এবং কমিউনিকেশনস ডিসেন্সি অ্যাক্ট-এর ২৩০ ধারা এইসব প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য “নিরাপদ আশ্রয়”। কারণ এতে বলা হয়ছে যে, কোনো ইন্টারঅ্যাকটিভ কম্পিউটার সেবাদাতা বা গ্রাহককে প্রকাশক বা স্পিকার হিসেবে গণ্য করা যাবে না।
যদিও এখনও এটা পরিষ্কার নয় যে আইনি প্রতিরক্ষা তাদের কতটুকু সহায়তা করতে পারবে।
গঞ্জালেস-এর আইনজীবী বলেছেন, “এই অভিযোগ আইএসআইএস-এর বার্তা কী বলে তা নিয়ে নয়। এটা গুগল, টুইটার এবং ফেইসবুক-এর প্রতি যারা আইএসআইএসকে অনুমতি দিয়েছে তাদের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করার।”
ইউটিউবের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে আয় ভাগের অভিযোগও আনা হয়েছে।
ব্র“কিংস ইনস্টিটিউশন-এর সিনিয়র সহকর্মী একমত যে, এই আইনি নিরাপদ আশ্রয় সামাজিক মাধ্যমগুলোকে এবার নিরাপত্তা নাও দিতে পারে। কিন্তু তিনি এটাও জানান, সমর্থকদের মধ্যে কার্যকরী লিঙ্ক এবং আক্রমণ দূর্বল ছিল।