খোলা বাজার২৪,বৃহস্পতিবার, ২১ জুলাই ২০১৬: তথ্য সংরক্ষণের ক্ষেত্রে নতুন নতুন সুবিধা যুক্ত হচ্ছে। মাত্র কিছুদিন আগেই আমরা জেনেছিলাম মেমোরি স্টোরেজ হিসেবে ক্রিস্টালের ব্যবহার।
ক্রিস্টালের সেই মেমোরি ডিস্কে তথ্য থাকবে কোটি কোটি বছর! অর্থাৎ তথ্যের অমরত্ব নিশ্চিত হয়েছিল। এবার তথ্যের সমগ্রতাও নিশ্চিত হবে।
ডাচ বিজ্ঞানীরা ক্লোরিন পরমাণু ব্যবহার করে এমন এক তথ্যের সংরক্ষণ পদ্ধতি আবিষ্কার করেছে যা কিনা একটি স্ট্যাম্প সাইজ জায়গায় এখন পর্যন্ত পৃথিবীতে যত বই মুদ্রিত হয়েছে তা সব ধারণ করতে সক্ষম! অর্থাৎ অতি অল্প জায়গায় অনেক অনেক বেশি ডাটা সংরক্ষণ সম্ভব।
টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি অব ডেলফট এর বিজ্ঞানীরা ক্লোরিনের প্রতিটি পরমাণুকে একেকটি ডাটা হাউজ বানাতে সক্ষম হয়েছেন। তাদের গবেষণায় অতি সূক্ষ্ম মাইক্রোস্কোপ ব্যবহার করা হয়েছে। যার দ্বারা পরমানুতে সূক্ষ্ম ছিদ্র করা হয়েছে। বিজ্ঞানীরা প্রতিটি পরমাণুর উভয় পৃষ্ঠকেই ডাটা সংরক্ষণে ব্যবহার করেছেন। ফলে একেকটি পরমাণু তার উপরি পৃষ্ঠ এবং নিম্ন পৃষ্ঠ অর্থাৎ উভয় পিঠেই ডাটা বহনে সক্ষম।
গবেষক দলের প্রধান সান্ডার ওটি বলেন, প্রতিটি ক্লোরিন পরমাণু থিউরিক্যালি ৫০০ ট্যারাবাইট তথ্য সংরক্ষণে সক্ষম। বিজ্ঞানীরা স্ক্যানিং টানেলিং মাইক্রোস্কোপ (এসটিএম) দিয়ে প্রতিটি পরমাণুকে অতি সূক্ষ্ম সুঁই দ্বারা ছিদ্র করে একে ডাটা সংরক্ষণের উপযোগী করেছেন।
বিজ্ঞানী অটির ভাষায়, স্টোরেজের এই পদ্ধতিতে প্রতিটি পরমাণু একে অপরের সঙ্গে লেগে থেকে দুটি পৃষ্ঠ সৃষ্টি করবে যার উভয় পিঠেই ডাটা সংরক্ষিত হবে। যে ক্লোরিন পরমাণুর নিচের দিকে ছিদ্র থাকবে বিজ্ঞানীরা তার নাম দিয়েছে ১( ওয়ান) আর যে ক্লোরিন পরমাণুর ওপরের দিকে ছিদ্র থাকবে তাকে ০ ( জিরো) হিসেবে ডাকা হয়। প্রতিটি ক্লোরিন পরমাণু একে অপরকে জড়িয়ে থাকে শুধুমাত্র ছিদ্রের প্রান্ত ছাড়া। আর এভাবেই একটি স্টোরেজ ব্যবস্থা গড়ে উঠে।
টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি অব ডেলফট এর বিজ্ঞানীরা মনে করেন এটা বাস্তবায়ন করা খুব সম্ভব। তাদের কাছে এটাকে আগের যেকোনো পদ্ধতির তুলনায় অনেক বেশি বাস্তবিক এবং বাণিজ্যিক বলে মনে হচ্ছে। যদিও এটির বেশকিছু দুর্বল দিকও আছে। যেমন একে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় রেখে ডাটা সংরক্ষণ করতে হবে। আর তুলনামূলক ভাবে ডাটা কপি করার সময় একটু বেশি নেয়। তারপরেও ড. ওটির মতে, এটি একটি অনেক বড় অর্জন বড় কিছু করার পথে। বলা যায় এটি বিশাল এক উদ্যোগের পথে অনেক দূর এগিয়ে যাওয়া। এখন দেখার বিষয় এতো বড় সম্ভবনার দুয়ার সামান্য কিছু দুর্বলতাকে অতিক্রম করে সকলের জন্য উম্মুক্ত হতে পারে কিনা