Sun. Sep 28th, 2025
Advertisements

6খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ২২ জুলাই ২০১৬: অর্থ পাচার মামলায় দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে সাজা দেওয়ায়র প্রতিবাদে শনিবার সারা দেশে বিক্ষোভ করবে বিএনপি। এ ছাড়া রোববার কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকায় প্রতিবাদ সমাবেশ করবে। দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোও পৃথকভাবে কর্মসূচি পালন করবে।
বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি নেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের বৈঠকে এই কর্মসূচি চূড়ান্ত হয়েছে বলে সূত্রে জানা গেছে। শুক্রবার সকালে সংবাদ সম্মেলন করে কর্মসূচির ঘোষণা করা হবে।

বৈঠকে অংশ নেওয়া দুজন নেতা জানিয়েছেন, বৈঠকে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলার রায় নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়েছে। সরকার যে তাকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে এবং প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে দুদক এবং আদালতকে ‘প্রভাবিত করেছে’ সেটি আলোচনায় প্রধান্য পেয়েছে।
তারা জানান, বিএনপি নেতারা মনে করেছেন, সরকার জঙ্গি ইস্যুকে আড়াল করতে তারেক রহমানের মামলাকে সামনে এনেছে। তবে বিএনপি জঙ্গি ইস্যুতে তাদের জাতীয় ঐক্য গঠনের প্রক্রিয়া থেকে সরে আসবে না বলেও বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়।
বৈঠকে দলটির শীর্ষ নেতাদের মধ্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, মির্জা আব্বাস, আ স ম হান্নান শাহ, নজরুল ইসলাম, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, আবদুল্লাহ আল নোমান, সেলিমা রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদিন, শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
নিম্ন আদালতের খালাসের রায় বাতিল করে বৃহস্পতিবার তারেক রহমানকে সাত বছরের কারাদণ্ড ও ২০ কোটি টাকার অর্থদণ্ড দেন হাইকোর্ট।
বিএনপি এই রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বলেছে, ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এবং তারেক রহমানকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার’ ষড়যন্ত্র হিসেবে এই রায় হয়েছে।
রায়ের পর দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে প্রতিহিংসা থেকেই এই রায় এসেছে।’
২০০৯ সালের ২৬ অক্টোবর রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় এ মামলাটি করে দুদক। ২০১১ সালের ৮ আগস্ট এ মামলায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন আদালত।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, টঙ্গীতে প্রস্তাবিত ৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য নির্মাণ কন্সট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেডের মালিক খাদিজা ইসালামের কাছ থেকে গিয়াস উদ্দিন আল মামুন ২০ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার ৮৪৩ টাকা নেন। সিঙ্গাপুরে এই টাকা লেনদেন হয়।
এরপর মামুন ওই অর্থ সিঙ্গাপুরের ক্যাপিটাল স্ট্রিটের সিটি ব্যাংক এনএতে তার নামের ব্যাংক হিসাবে জমা করেন। এ টাকার মধ্যে তারেক রহমান ৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকা খরচ করেন।
২০১৩ সালের ১৭ নভেম্বর তারেক রহমানকে বেকসুর খালাস দিয়ে তার বন্ধু গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে অর্থপাচার মামলায় সাত বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালত।
ওই রায়ে কারাদণ্ডের পাশাপাশি মামুনকে ৪০ কোটি টাকা জরিমানাও করা হয়। পাচার করা ২০ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার ৬১৩ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করারও নির্দেশ দেন আদালত।
এ রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরের ৫ ডিসেম্বর আপিল করে দুদক। ২০১৪ সালের ১৯ জানুয়ারি এ আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে তারেক রহমানকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের আদেশ দেন হাইকোর্ট বেঞ্চ।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছেলে দলটির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক বিভিন্ন মামলা মাথায় নিয়ে ২০০৮ সাল থেকে যুক্তরাজ্যে রয়েছেন। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা হত্যাচেষ্টাসহ আরো দুর্নীতি, রাষ্ট্রদ্রোহ ও মানহানীর অভিযোগে কয়েক ডজন মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
আর জরুরি অবস্থার মধ্যে ২০০৭ সালে গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে গিয়াসউদ্দিন আল মামুন কারাগারেই আছেন।