Wed. Mar 12th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

56খোলা বাজার২৪,বৃহস্পতিবার, ২৮ জুলাই ২০১৬: প্রসেস আউটসোর্সিং বা ‘বিপিও সামিট বাংলাদেশ-২০১৬’। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের অধীনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কলসেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্য)-এর উদ্যোগে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে দুদিনের আন্তর্জাতিক এ সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সজীব ওয়াজেদ বলেন, ‘দ্বিতীয়বারের মতো ঢাকায় বিপিও সম্মেলন আয়োজন করতে পেরে আমরা আনন্দিত। গত সাত বছরে প্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশ অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে, যা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে নতুনভাবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। স্থানীয় উন্নয়ন না হলে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নিজেদের অবস্থান তৈরি করা সম্ভব হবে না। আর তাই এবারের বিপিও সামিটের স্লোগান ঠিক করা হয়েছে, স্থানীয় অভিজ্ঞতা, বৈশ্বিক ব্যবসা।’
সজীব ওয়াজেদ আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের তরুণ-তরুণীরা এখন গুগল, ফেসবুক, মাইক্রোসফটের মতো পৃথিবীসেরা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন, অর্থাৎ আমরা বিশ্বমানের প্রযুক্তিবিদ তৈরি করতে পেরেছি। আগামী ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশে প্রতিবছর বিপিও (বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং) খাতে দুই লাখ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে। বাংলাদেশে বর্তমানে ১৬ মিলিয়নের বেশি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন। তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করার জন্য দেশের স্কুলগুলোতে স্বয়ংসম্পূর্ণ কম্পিউটার ল্যাব গড়ে তোলা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত দেশজুড়ে তিন হাজারের বেশি কম্পিউটার ল্যাব তৈরি করা হয়েছে।’
সজীব ওয়াজেদ পাঠ্যবই নিয়ে বলেন, ‘স্কুলগুলোতে ছাপা পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি ওয়েবসাইটে এসব বইয়ের পিডিএফ সংস্করণ পাওয়া যায়। খুব শিগগির আমরা পাঠ্যবইগুলোর ই-বুক সংস্করণ নিয়ে আসতে যাচ্ছি। অর্থাৎ শুধু পিডিএফ নয়, সত্যিকারের ইলেকট্রনিক সংস্করণ তৈরি করা হবে পাঠ্যবইয়ের।’
বিপিও ও প্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের আগামী দিনের লক্ষ্য সম্পর্কে সজীব ওয়াজেদ বলেন, ‘২০১৮ সালে বাংলাদেশ থেকে তথ্যপ্রযুক্তি রপ্তানি এক বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে।’
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ‘গেস্ট অব অনার’ হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন সংস্থার (আইটিইউ) মহাপরিচালক হাওলিন ঝাও। আরো উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থার (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ, আইসিটি বিভাগের সচিব শ্যামসুন্দর সিকদার, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সংসদ সদস্য ইমরান আহমেদ ও বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কলসেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্য)-এর সভাপতি আহমাদুল হক প্রমুখ।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘বিশ্বের যেসব দেশ বিপিও খাতে ভালো করছে, তারা সবাই নিজেদের অভ্যন্তরীণ খাতের বিপিওকে শক্তিশালী করেছে। আমাদের দেশের কলসেন্টারগুলোর একটা বড় অংশই অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাচ্ছে। বৈশ্বিক পর্যায়েও আমাদের অনেক প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি সুনামের সঙ্গে কাজ করছেন।’
জুনাইদ আহমেদ আরো বলেন, ‘এ মুহূর্তে বাংলাদেশ ৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করছে, যার মধ্যে শুধু পোশাক রপ্তানি থেকেই আসে ২৮ বিলিয়ন ডলার। রপ্তানি বাণিজ্য থেকে এক বিলিয়ন ডলার আয় হয়, এ রকম কোনো খাত আমাদের নেই। আমরা সে সুযোগটাই নিতে চাই। আমাদের আইসিটি খাত খুবই ভালো করছে এবং এর প্রবৃদ্ধিও আশাব্যঞ্জক। ২০২১ সালের মধ্যে আইসিটি খাত থেকে পাঁচ বিলিয়ন ডলার আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে সরকার কাজ করছে, তার মধ্যে শুধু বিপিও খাত থেকেই এক বিলিয়ন ডলার আয় করার ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।’
আজ সম্মেলনের প্রথম দিনে বেশ কয়েকটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে। এসব সেমিনারের ও ওয়ার্কশপের মধ্যে রয়েছে ‘গভর্নমেন্ট প্রসেস আউটসোর্সিং : গ্লোবাল বেস্ট প্র্যাকটিসেস’, ‘প্রোটেক্টিং বিগ ডাটা অ্যান্ড প্রাইভেসি ইন কানেক্টেড ওয়ার্ল্ড’, ‘অপরচুনেটিজ ইন লোকাল অ্যান্ড গ্লোবাল বিপিও ফর ইউথ’, ‘বিগ ডাটা অ্যানালাইসিস ফর নিউ হরাইজন ইন বিজনেস ইন্টেলিজেন্স’, ‘ট্রেনিং ওয়ার্কশপ ফর কলসেন্টার এজেন্টস’ ও ‘চ্যালেঞ্জ অ্যান্ড সলিউশন্স ফর ওভারকামিং হার্ডেলস ইন আউটসোর্সিং অব গর্ভনমেন্ট সার্ভিসেস’ শীর্ষক সেমিনার ও কর্মশালা।
শুক্রবার সামিটের দ্বিতীয় দিনে সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এ ছাড়া সমাপনী দিনে দেশের বিপিও খাতের সফল উদ্যোক্তাদের পুরস্কৃত করা হবে। এবারের আয়োজনে দুদিনে মোট ১২টি সেমিনার ও কর্মশালা অনুষ্ঠিত হবে। এ সেমিনার ও কর্মশালায় দেশ-বিদেশের প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা অংশগ্রহণ করবেন। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের নিয়ে থাকবে বিশেষ আয়োজন।