খোলা বাজার২৪, শনিবার, ২৭ আগস্ট ২০১৬: মানুষ মানুষের জন্য। তাই তো অসহায় মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসেন বিত্তবানরা।
ইউরো এবং বিশ্বকাপের পর এমন উদারতা দেখিয়ে অসহায় শিশুদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছিলেন জার্মান ফুটবলার মেসুত ওজিল। বিশ্বকাপ থেকে যতো টাকা পেয়েছিলেন তার সবই দান করেছিলেন তিনি।
তবে ইউরোতে ওজিল সঙ্গী হিসেবে পেয়েছিলেন ফরাসি ফুটবলার পল পগবাকে। তিনিও ইউরোর পর ব্রাজিলের শিশুদের সাহায্যের জন্য টুর্নামেন্ট থেকে যতো টাকা পেয়েছেন তার সবই দিয়ে দিয়েছিলেন।
এবার আরেক মহানুভব ক্রীড়াবিদের নাম উঠে এলো। তিনি পোল্যান্ডের অ্যাথলেট পিয়ত্র মালাচোয়াস্কি। সদ্য সমাপ্ত রিও অলিম্পিকে পাওয়া রৌপ্য পদক বিক্রি করেছেন ৩ বছরের ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুর জন্য।
আর্থিক সমস্যার কারণে শিশুটির চিকিৎসা করাতে পারছিল না পরিবার। ৩৩ বছর বয়সী পিয়ত্রের কাছে আর্থিক সাহায্য চেয়েছিলেন শিশুটির মা।
তাই অলিম্পিকে পাওয়া নিজের রৌপ্য পদক নিলামে চড়ালেন তিনি। পদক বিক্রি করে মানবতার সেবায় অংশ নিলেন তারকা এই খেলোয়াড়।
তিন বছরের ছোট্ট শিশু ওলিক দীর্ঘদিন ধরেই চোখের ক্যান্সারে ভুগছে। রিও অলিম্পিকে ডিসকাস থ্রোতে রূপার পদক জিতেছিলেন পিয়েত্র। নিলাম থেকে পাওয়া অর্থ ওলেক নামে ওই শিশুটির চোখের অস্ত্রপচারে ব্যবহার করা হবে। এমন সিদ্ধান্ত রিও অলিম্পিকে যাওয়ার আগে থেকেই নিয়ে নিয়েছিলেন পিয়েত্র। তার আশা ছিল, তিনি সোনার পদক জিতবেন।
কিন্তু সোনা না জিততে পারলেও তার জেতা রূপার পদকই ছোট্ট ওলিকের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ তুলে আনতে সক্ষম হয়েছে। নিজে টুইট করেই পদক নিলাম করার কথা জানিয়েছিলেন পিওটর।
পদক নিলামে তোলার আবেদনে তিনি লেখেন, ‘রিওতে আমি সোনার জন্য লড়াই করেছিলাম। কিন্তু আজ আমি সবার কাছে আরও বড় কিছু জন্য আবেদন করছি। সবাই যদি আমায় সাহায্য করেন, তাহলে আমার রূপোর পদকটিই ছোট্ট ওলিকের জন্য সোনার থেকে দামি প্রমাণিত হবে।’
নিজের টুইটের সঙ্গেই ছোট্ট ওলিকের ছবি এবং নিজের পদকের ছবিও পোস্ট করেন এই ডিসকাস থ্রোয়ার।
তার এই টুইট দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়। এর পরেই বিভিন্ন দেশ থেকে নিজের পদকের জন্য অগুনতি দর পান তিনি। শেষ পর্যন্ত পোল্যান্ডের দম্পতি ডোমিনিকা এবং সেবাস্তিয়ান কুল্কজিক ৪.১ বিলিয়ন ডলার দিয়ে পিওটরের রূপার পদকটি কিনে নেন। পিয়েত্র জানিয়েছেন, এই অর্থ ওলিকের চিকিৎসার জন্য যথেষ্ট। নিউইয়র্কের একটি বিখ্যাত ক্লিনিকে ওই শিশুটির চিকিৎসা হবে।
পদক বিক্রির পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের পেজে পিয়ত্র লিখেছেন, অবশ্যই সোনা জয় হলো সবচেয়ে সম্মানজনক। আমার সর্বোচ্চটা দেয়ার চেষ্টা করেছি তা জয় করার জন্য। কিন্তু আমি তা পারিনি। তবে ভাগ্য এই রূপার পদকটির মূল্য বাড়িয়ে দেয়ার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে।