খোলা বাজার২৪,শুক্রবার, ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৬: ফারহানা বৃষ্টি, একটি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। প্রতিদিন বাসা থেকে অফিস করতে বেশ ভোগান্তি পোহাতে হত তাকে। যানজটের নগরী ঢাকায় তাই তিনি খোঁজেন বিকল্প ব্যবস্থা, কিনে ফেলেন স্কুটি।
কেননা গাড়িতে যানজট এড়ানো সম্ভব নয়। তিনি বলেন,স্কুটির সুবিধাজনক দিক হলো, এতে খরচ খুব কম হয়। চলার স্বাধীনতা আছে। অন্যান্য বড় যানবাহনের তুলনায় সময়ের অপচয় কম হয়।
তবে ঢাকার রাস্তায় একজন মেয়ের স্কুটি চালানো কতটা নিরাপদ? এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা বেশ বিশৃঙ্খল। নিজের জন্য একটা ছোট বাহন দরকার। তবে মেয়ে চালক হিসেবে নিরাপত্তা আর দুর্ঘটনার ঝুঁকি তো রয়েছেই।
শুধু বৃষ্টি নন রাজধানীর অনেক তরুণীদেরই প্রিয় বাহন এখন স্কুটি। সকাল বেলায় অফিস টাইমে অনেক মেয়েকেই স্কুটি নিয়ে চলাচল করতে দেখা যায়।
যাতায়াতের অসুবিধার কারণে শিক্ষিত অনেক নারী কর্মবিমুখ হয়ে পড়েন। রাজধানীতে যানজট ও গণপরিবহনের স্বল্পতার কারণে তুলনামূলক নারীদেরই বেশি ভুগতে হয়। বাসের জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা, লোকাল বাসে সিট না পাওয়া, সিট খালি না থাকলে না ওঠানো, বাসে উঠতে না পেরে রিকশা কিংবা সিএনজিতে অতিরিক্ত ভাড়া গুণে গন্তব্যস্থলে পৌঁছানো।
স্কুটিতে এখন তারাই বেশি উৎসাহী। তবে শুধু প্রয়োজনেই নয়, স্কুটি এখন ফ্যাশনেরও অনুষঙ্গ। তাই একটু স্টাইলিশ ও আধুনিক নারীরা স্কুটির প্রতি আগ্রহী হচ্ছেন।
আর স্কুটি এখন বেশ সহজলভ্য। বাংলামোটর, বংশাল, তেজগাঁও এলাকায় মোটর সাইকেলের বেশ কিছু শো-রুম আছে। তা ছাড়া প্রায় সব বাইকের দোকানে এখন স্কুটি বিক্রি হয়। তবে কোম্পানি অনুমোদিত ডিলার থেকে কেনাই ভালো।
বাংলাদেশে হিরো হোন্ডা, টিভিএস, ইয়ামাহা, জিনান, মাহিন্দ্রা, সিঙ্গার, সুজুকি ইত্যাদি ব্র্যান্ডের স্কুটি পাওয়া যায়। মগবাজারের সোনারগাঁও মোটর্সের ম্যানেজার আবদুল আউয়াল বলেন, ‘বর্তমান বাজারে যে কম্পানির স্কুটিগুলো বেশি চলছে, তার ভেতর টিভিএস, হিরো, জিনান ও সুজুকি অন্যতম। বাহনটি সাধারণত ৫০ থেকে ১৫০ সিসির হয়ে থাকে। দাম ৭৫ হাজার থেকে দুই লাখ টাকার মধ্যে।’ শুধু মেয়েদের জন্যই তৈরিকৃত হেলমেটেও রয়েছে বৈচিত্র্যের ছাপ। অপেক্ষাকৃত ছোট ও হালকা এসব হেলমেটের দাম পড়বে ৫০০ থেকে ৮৫০ টাকা। বংশাল, তেজগাঁও, মিরপুর এলাকায় কম্পানিগুলোর বেশ কিছু শোরুম আছে। তা ছাড়া প্রায় সব বাইকের দোকানে এখন স্কুটি বিক্রি হয়। বাজারে যেসব কম্পানির পার্টসগুলো সচরাচর পাওয়া যায়, সেসব বাইকই কেনা উচিত।’
গুলশান, বনানী, বারিধারা, ধানমণ্ডিতে অনেক মেয়েদের স্কুটি চালাতে দেখা যায়। তারা সাধারণত স্কুটি এবং ৫০ সিসি মোটরসাইকেল বেশি চালান।
ফারহানা খান বৃষ্টি
স্কুটি চালানোর সময় ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সব সময় সঙ্গে রাখুন। নিয়মিত স্কুটির যত্নও নিতে হবে। প্রায় সব ধরনের পোশাক পরেই চালানো যায়।স্কুটি চালানোর সময় শাড়ি বা থ্রিপিস অস্বস্তিকর মনে হলে জিনস-গ্যাবাডিনের সঙ্গে ঢিলেঢালা শার্ট বা টি-শার্ট কিংবা ফতুয়া পরে চালানো ভালো। কারণ গাড়ি চালানোর সময় অস্বস্তিবোধ করাটা কখনো দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাড়াতে পারে।
তবে স্কুটি তৈরিই হয় হালকা মেটাল দিয়ে। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও থাকে কম। মোটরসাইকেলের চেয়ে স্কুটি চালানোও বেশ সহজ। স্কুটির গতি কিছুটা কম। তবু সবসময়ই সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।