খোলা বাজার২৪, রবিবার, ২ অক্টোবর, ২০১৬ : যুদ্ধের জন্য নতুন এক যান পাচ্ছে ইউএস মেরিন। ৩৪ টন ওজনের ভবিষ্যতের এই যুদ্ধযানটি রীতিমতো সাঁতার কাটে। অ্যাম্ফিবিয়াস কমব্যাট ভেহিকল নিয়ে পানিতে দাপিয়ে বেড়াবে মেরিন। চলতি সপ্তাহেই মডার্ন ডে মেরিন এ অ্যাম্ফিবিয়াস কমব্যাট ভেহিকল বা এসিভি ১.১ এর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।
এটি বানিয়েছে বিএই সিস্টেমস এবং আইভিইসিও ডিফেন্স। এই যানট উভচর। পানিতে ও স্থলের নিরাপত্তায় লড়াই চালিয়ে যেতে সক্ষম। নতুন এই অস্ত্রে সজ্জিত যানটি একটি জাহাজ থেকে সাগরে নামিয়ে দেওয়া যাবে। এর মাধ্যম পানি থেকে স্থলে আক্রমণ চালানো যাবে।
পানি থেকে স্থলে ওঠার পর শত্রুকে ঘণ্টায় ৭০ মাইলবেগে ধাওয়া করতে পারবে যানটি। বর্তমানে মেরিনরা এএভি-৭এ১ অ্যাম্ফিবিয়াস অ্যাসল্ট ভেহিকলের মাধ্যমে জল থেকে সৈকত পর্যন্ত চলাচল করতে পারে।
এই যান মেরিনদের সেবা দিচ্ছে ৪৫ বছর ধরে। এর অনেক আপগ্রেডও আনা হয়েছে। তবে এ ধরনের যানের সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। আধুনিক মেরিনের জন্য তা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। অদূর ভবিষ্যতে এসিভি ১.১ মেরিন সেনাদের নতুন শক্তি হয়ে দাঁড়াবে।
এর ক্ষমতা : আইভিইসিও ডিফেন্সের বানানো প্লাটফর্মের ওর ভিত্তি করে গড়ে তোলা হয়েছে যানটি। এর মধ্যে রয়েছে ৬ সিলিন্ডারের ৭০০ হর্স পাওয়ার শক্তির ইঞ্জিন। বর্তমান অ্যাম্ফিবিয়াস ভেহিকলের চেয়ে অনেক বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন এবং কার্যকর। এতে ১৩ জন মেরিন সেনা অনায়াসে এঁটে যাবেন। আরো থাকতে পারবেন তিনজন ক্রু। এটি ২৯ ফুট লম্বা, ১০ ফুট চওড়া এবং উচ্চতায় ৯ ফুট। একটি জাহাজ থেকে ছেড়ে দিলে যা পানিতে ঘণ্টায় ১২ নটিক্যার মাইল বেগে ছুটতে পারবে। স্থলে উঠলে ঘণ্টায় ৭০ মাইল বেগে ২৫০ মাইল অনায়াসে ভ্রমণ করতে পারবে। মোট ৩৫০ মাইল পর্যন্ত সীমা রয়েছে এর।
স্থলে : জল থেকে স্থলে আক্রমণকালে অনেক সময় যুদ্ধজাহাজ নানা প্রতিকূলতার সম্মুখীন হয়। জাহাজ থেকে সেনারা স্থলে অবতরণ করার পর ভেজা বালি, নরম মাটি ইত্যাদি কারণে দুর্বল হয়ে পড়েন। এসব অবস্থা সামাল দিতেই এসিভি ১.১। এতে ব্যবহার করা হয়েছে ১৬আর২০ টায়ার যা মেরিনদের অন্যান্য শক্তিশালী যানে ব্যবহার করা হয়। এই যানে রয়েছ বিশেষায়িত এইচ-ড্রাইভ সিস্টেম। এতে কোনো এক্সেল নেই। পরিবর্তে উভয় পাশে তিনটি ড্রাইভ শ্যাফট রয়েছে। যানটি নিয়ন্ত্রণের জন্যে যে প্যানেল দেওয়া হয়েছে তা অনেক সহজ।
প্রতিরক্ষা : এসিভি ১.১ এর মাধ্যমে মাটিতে পুঁতে রাখা মাইন এবং আইইডি থেকে মেরিনদের পুরো নিরাপত্তা দিতে সক্ষম। অন্যান্য হুমকি থেকেও সেনাদের নিরাপত্তা অনেক জোরদার করেছে। এর আসনগুলো বাইরে থেকে আসা শক্তি হজম করতে আরো বেশি সক্ষম। বিস্ফোরণের ধাক্কা সামলাতেও এটি আরো পারদর্শী।
ব্যাকগ্রাউন্ড : গত বছর ইউএস মেরিন কর্পস বিএই সিস্টেমস এবং এসএআইসি কে এই যানের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের জন্য পুরস্কৃত করে। তারা এসিভি ১.১ এর ডিজাইন তৈরি, নির্মাণ এবং অন্যান্য বিষয় তদারকি করে। এসএআইসি তাদের সংস্করণ নিয়ে কাজ করছে যার নাম টেরেক্স ১। বিএই সিস্টেমস এই যানের ১৬টি প্রোটোটাইপ বানাবে যেগুলো পরীক্ষা করে দেখবে মেরিন। ২০১৮ সালে মেরিন সিদ্ধান্ত নেবে তারা কোনটি ব্যবহার করবে, এসিভি ১.১ নাকি টেরেক্স ১?