খোলা বাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ০৬ অক্টোবর, ২০১৬: প্রখর রোদ আর প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা । প্রকৃতির বিমুখতায় সকলের অবস্থা কাহিল। ফলে আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়ছে অনেকে। হচ্ছে হিটস্টোক। এ থেকে বাঁচতে জেনে নিতে পারেন কয়েকটি উপায়।
প্রবল গরমে বাইরের তাপমাত্রার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের অভ্যন্তরের তাপমাত্রাও বেড়ে যায়। ফলত বেসাল মেটাবলিক রেট (বিএমআর) বেড়ে গিয়ে নানান রকম শারীরিক গোলোযোগ হবার সম্ভাবনা থাকে। হরমোন এবং এনজাইমগুলির স্বাভাবিক কাজ ব্যাহত হয়।
সরাসরি রোদ লাগলে চোখ এবং ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, তাই সকাল ১১ টার পর এবং বিকেল ৪ টার আগে নিতান্ত প্রয়োজন না হলে বাইরে না যাওয়াই ভাল । একান্ত বের হতে হলে ছাতা, সানগ্লাস ব্যবহার করতে পারেন । শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত গাড়ি থেকে বেরোতে হলে ছায়াতে নামতে পারলে ভালো হয়।
গরমে সব থেকে বেশি অসুস্থ হবার সম্ভাবনা থাকে শিশু ও বয়স্ক মানুষদের। তাদের জন্য পরামর্শ সকাল ১১ টা থেকে বিকেল ৪ টার মধ্যে বাড়ির বাইরে যাবেন না। জরুরি কাজ থাকলে সকালে বা বিকেলে সারতে পারেন।
এবারের গরমে আপেক্ষিক আর্দ্রতা কম থাকায় হিটস্ট্রোকের সম্ভাবনা অনেক বেড়ে গেছে। তাই সাবধান থাকতে হবে। রোদ এড়িয়ে চলার পাশাপাশি পর্যাপ্ত পানি পান, ফলের রসসহ জলীয় খাবারের পরিমাণ বাড়াতে হবে। শরীরে অস্বস্তি হলে, মাথা ঝিমঝিম করলে ঠাণ্ডা জায়গায় গিয়ে লবণ চিনির জল পান এবং প্রয়োজনে ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করে নিতে হবে। রাস্তাতে অসুস্থ বোধ করলে অবিলম্বে ছায়াতে গিয়ে পানি পান করতে হবে। হাল্কা রঙের সুতির পোশাক পরা উচিত। পুরো শরীর ঢাকা পোশাক পরলে ত্বক বাঁচানো যায়।
শুকনো গরম বলে অনেকে ভাবছেন ঘাম হয় না। কিন্তু ঘাম হয়েই শুকিয়ে যায় বলে অস্বস্তি কম হয়। শরীরের অভ্যন্তরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখতে ঘাম হয়। অন্য সময় প্রতি কেজি দেহের ওজন পিছু ৫ থেকে ১০ মিলি ঘাম নির্গত হয়। কিন্তু প্রখর দাবদাহের সময় এই পরমাণ বেড়ে দাঁড়ায় কেজি প্রতি ২০ থেকে ৩০ মিলিতে। সুতরাং, প্রচুর জল ও মিনারেল শরীর থেকে বেরিয়ে যায় বলে মানুষ দ্রুত ক্লান্ত হয়ে পড়েন। ফলে কিডনিসহ শরীরের অভ্যন্তরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গের কাজ কমতে শুরু করে। তাই এই সময় প্রচুর পানিসহ নানান ফল, টাটকা ফলের রস, ডাবের পানি, লেবুর সরবত পান করতে হয়।
যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে তাদের কম লবণ খেতে বলা হয়, ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে লবণ বেরিয়ে গিয়ে শরীর খারাপ লাগতে পারে। তাই এই সময়টায় সঠিক মাত্রায় ওআরএস বা ডাবের পানি পান করতে হবে।
ঘামের সঙ্গে সোডিয়াম পটাশিয়াম বেরিয়ে গেলে মাথা ঝিমঝিম করা ছাড়াও মেজাজ খারাপ হতে পারে। তাই এই সময় যারা গাড়ি চালান তাদের দুর্ঘটনা ঘটানোর সম্ভবনা কম থাকে। তাই প্রত্যেক গাড়ির চালকের মাথা ঠাণ্ডা রেখে গাড়ি চালানো উচিত।
গরমে জ্বর ও পেটের সংক্রমণের সম্ভবাবনা থাকে। জ্বর হলে ঠাণ্ডা জলে গোসল আবশ্যক। জ্বরে ডিহাইড্রেশনের সম্ভবনা বাড়ে। তাই তরল খাবারের পরিমাণ বাড়াতে হবে। পেটের সমস্যা এড়াতে বাইরে খাওয়া এবং ভাজা ও মশলাদার খাবার এড়িয়ে চলুন।
ঘাম হয়ে বা অন্য কারণে ডিহাইড্রেশন হলে পাসহ শরীরের বিভিন্ন পেশীতে ক্র্যাম্প হয়। অল্প অল্প করে বারে বারে সরবত খেলে সমস্যা থেকে রেহাই পাবেন।