খোলা বাজার২৪, রবিবার, ২০ নভেম্বর ২০১৬:
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার হোগলবাড়িয়া পূর্বপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৬৫ বছর বয়সী সেই বাছিরন নেছা প্রাথমিক সমাপনি পরীক্ষা দিচ্ছেন। মহাম্মদপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রের ৯নং কক্ষের প্রথম বেঞ্চেই তার সিট হয়েছে। বাছিরন নেছার রোল নং ৫৯৪১। পরীক্ষার প্রথম দিন ইংরেজি পরীক্ষা ভালোভাবে দিয়েছেন বলে জানালেন বাছিরন নেছা। বাকী পরীক্ষাগুলো সফলভাবে দেবেন বলেও জানালেন তিনি।
জীবনের প্রথম পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে বাছিরন নেছা জানালেন, এটা আমার স্বপ্ন পূরণের প্রথম ধাপ। আমি ভালো রেজাল্ট করে দেশকে দেখাতে চাই, লেখা পড়ার কোন বয়স নেই। আমি মাধ্যমিক বিদ্যালয় পাশ করে কলেজও পড়াশোনা করতে চাই। আমি আমার স্বপ্ন পূরণে সকালের সহযোগিতা কামনা করছি।
পরীক্ষা কেন্দ্রে তাকে সাহস যোগাতে সঙ্গে এসেছেন ভাইয়ের বউ (ভাবী) ইন্দোনেশিয়ার মারনি, নাতি নাহিদ হাসান ও পড়শিরা।
মহাম্মদপুর সরকারী বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে মোট ২৩৯ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। তার মধ্যে বাছিরন নেছা একমাত্র বয়স্ক ছাত্রী বলে জানালেন কেন্দ্র সচীব জিয়া মহাম্মদ আহসান মাছুম।
এদিকে বাছিরন নেছার পরীক্ষার খোঁজ খবর নিতে স্থানীয় মটমুড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল আহমেদ, হোগলবাড়িয়া পূর্বপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির (এসএমসি) সভাপতি ও গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক আহসান উল্লাহ মহন পরীক্ষা কেন্দ্রে যান।
এদিকে বাছিরনের পরীক্ষা কেন্দ্রে মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকরাও ছিলেন সংবাদ কাভারেজের জন্য।
হোগলবাড়িয়া পূর্বপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা আনার কলি জানান, বাছিরন নেছা অন্যান্য শিক্ষার্থীদের মতই সমাপনি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছেন। আমরা আশা করি তিনি ভালো ফলাফল করে নিজের ও স্কুলের সুনাম বয়ে আনবেন।
উল্লেখ্য, হোগলবাড়িয়া গ্রামের মাঠপাড়া এলাকার মৃত রহিল উদ্দীনের স্ত্রী ৬৫ বছর বয়সের বাছিরন নেছা প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হন। দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পর এ বছর সমাপনি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন।