Wed. Apr 30th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

11খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ০২ ডিসেম্বর ২০১৬:  ঠাকুরগাঁওয়ে শহরের দু’একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছাড়া শিক্ষার মান বৃদ্ধির লক্ষে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে পাঠদানে তেমন কোনো সাড়া পড়ছে না। জেলায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্থরের ৩৩৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় এক লাখ ৩০ হাজার শিক্ষার্থী বঞ্চিত হচ্ছে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক শিক্ষা থেকে।
সরকার সবক’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (প্রজেক্টরভিত্তিক) মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে সব বিষয়ে ক্লাস নেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। কিন্তু নতুন এ তথ্যপ্রযুক্তির আওতায় ক্লাস গ্রহণে শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা থাকলেও পাচ্ছে না এই শিক্ষা।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বিদ্যুৎ, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক ও প্রজেক্টর সঙ্কটসহ প্রতিষ্ঠানগুলোর উদাসীনতার কারণেই মাল্টিমিডিয়া ক্লাস ও আইসিটি শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হওয়ার মূল কারণ বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
এ বিষয়ে বেশ কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, অপরিকল্পিত উপায়ে সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আইসিটি ও কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করেছে। প্রতিটি বিদ্যালয়ে একটি করে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর দিয়েছে তাই নিয়মিত ক্লাস নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাছাড়া প্রতিষ্ঠানে দেয়া হয়নি কম্পিউটার জানা অভিজ্ঞ শিক্ষক।
যার কারণেই মাল্টিমিডিয়া ক্লাসের প্রকৃত উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছে বলে তারা মনে করেন। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে মাসে একবারও মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর ব্যবহার করা হয় না।
ঠাকুরগাঁও মথুরাপুর উচ্চবিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষক মামুন অর রশিদ জানান, আইসিটি ক্লাস নেয়ার জন্য ক্লাসের যে পরিবেশ দরকার, তা নেই আমাদের স্কুলে। এ ছাড়াও একটি ল্যাপটপ ও প্রজেক্টর দিয়ে এত শিক্ষার্থীর ক্লাস নেয়া সম্ভব না। তাই প্রতিদিন একটি করে ক্লাস নেয়া হয় শিক্ষার্থীদের।

বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা অভিযোগ করেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়টি হাতে-কলমে শিক্ষার বিষয়। তবে শিক্ষার্থীর তুলনায় শ্রেণিকক্ষ কম থাকায় প্রতিনিয়ত বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে তাদের। স্কুলে যদি মাল্টিমিডিয়া ক্লাস নিয়মিত হয়, তাহলে যেকোনো বিষয়ে বুঝতে অনেক সহজ হয়। তাই নিয়মিত মাল্টিমিডিয়া ক্লাস নেয়ার দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আদনান সাবাব জানান, মাল্টিমিডিয়া ক্লাসের মাধ্যমে আমরা সহজেই সবকিছু বুঝতে পারি। ভিডিও ও সাউন্ডের মাধ্যমে বিনোদনের পাশাপাশি পড়ালেখাও হচ্ছে। তাই সব ক্লাস যদি মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে নেয়া হয় আমাদের পড়ালেখার আরো উন্নতি হবে এবং যুগের সঙ্গে আমরা পাল্লা দিয়ে এগিয়ে যেতে পারবো।

জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, কেবল ২০১৪ সালে জেলার ৩৩৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ল্যাব স্থাপনসহ মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর ও ইন্টারনেট সংযোগের জন্য মডেম সরবরাহ করা হয়েছে। এর মধ্যে কলেজ হচ্ছে ৩৪টি, স্কুল ২২৫টি, মাদরাসা ১৯টি। উপজেলাভিত্তিক ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় ১৩৯টি, হরিপুরে ৪০টি, বালিয়াডাঙ্গীতে ৪০টি, রাণীশংকৈলে ৫৩টি ও পীরগঞ্জে ৬৫টি।

ঠাকুরগাঁও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শাহিন আক্তার জানান, বিদ্যালয়গুলোতে এ বছর থেকে মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে ক্লাস নেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে সরকার। আগামী বছরের মধ্যে প্রতিটি ক্লাস মাল্টিমিডিয়ার আওতায় আনার জন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। কোনো স্কুলে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস নেয়া হচ্ছে কিনা- তা নিয়মিত তদারকি করা হচ্ছে।