খোলা বাজার২৪, সোমবার, ১৬ জানুয়ারি ২০১৭: বেলাব উপজেলার ৪৭নং গলগলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপুর্ণ ভবন সংস্কার না হওয়ায় শিশুশিক্ষা কার্যক্রম চরমভাবে হুমকির দিকে যাচ্ছে। গ্রামের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত স্কুলটির বেহাল দশার কারণে দিন-দিন ঝড়ে পড়ছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সরকারের গ্রামীণ শিক্ষা নিয়ে উন্নয়ন কার্যক্রম। এলাকাবাসী ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি বারবার উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি চালাচালি করেও কার্যকর কোন সুফল পাননি। জানা যায়, এক সময় শুধুমাত্র নৌ যোগাযোগ সমৃদ্ধ প্রত্যন্ত অঞ্চল গলগলিয়া গ্রামে ১৯৩০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এই স্কুলটি। প্রায় ৮৭ বছর আগে শিক্ষাবান্ধব বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের নেতা কালিপদ চক্রবর্তী ও ভাওয়াল রাজার বংশধর উপেন্দ্র রায়ের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় একটি টিনের ঘরে শুরু হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। তৎসময় এই গ্রামটিতে শিক্ষার আলো প্রজ্জ্বলিত করতে শিক্ষা সমৃদ্ধ সমাজ গড়তে দেশরত্ম কালিপদ চক্রবর্তী এই অঞ্চলে প্রথম এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরীর উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এ প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন সাবেক সেনাপ্রধান, সাবেক সচিব সহ বহু শিক্ষানুরাগী ও গুণীজন। এখনও অনেকেই দেশে-বিদেশে উচ্চ শিখরে অবস্থান করছেন। পরবর্তীতে ১৯৮০ সালে এরশাদ সরকারের শাসনামলে সরকারি উদ্যোগে ঠিকাদারের ব্যপক দুর্নিতীর মাধ্যমে নির্মিত হয় একটি ভবন। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে তৈরী করা ভবনটি নির্মাণের কিছুদিনের মধ্যেই খসে পড়তে থাকে প্লাস্টার ও দরজা-জানালার পাট। এরপর কেটে যায় ৩৬টি বছর। মানে তিন যুগেরও বেশি সময়। ইতোমধ্যে ২০১৪ সালে কালবৈশাখী ঝড়ে দির্ঘদিনের স্মৃতি বিজড়িত টিনসেড ঘরটিও লন্ডভন্ড হয়ে যায়। জরাজীর্ণ ভবনে পাঠদান নিয়ে এলাকাবাসী, অভিভাবক ও কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিরাজ করে চরম আতঙ্ক। স্কুলটির এ দুর্দশার চিত্র তুলে ধরে একাধিকবার অভিভাবক ও ম্যানেজিং কমিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহ শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে লিখিত আবেদন করেন। এর প্রেক্ষিতে স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আপদকালীন তহবিল থেকে স্কুলটি মেরামতের আশ্বাস দেন। পরে তা বাস্তবায়িত হয়নি। এ ব্যাপারে বেলাব উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শামসুল হক বলেন, আমি গত তিন মাস পুর্বেও ওই স্কুলটিতে গিয়েছিলাম। এতটা খারাপ অবস্থা বলে আমার জানা নেই। তবে এর আগে একবার কিছুটা মেরামত করা হয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে জানানো হবে।