খােলা বাজার২৪, শনিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭: হাইকোর্টের জামিনকে অবমাননা করে চলতি এসএসসি পরীক্ষার্থী নাজমা আক্তারকে আটক করায় একটি বিষয়ে পরীক্ষা দিতে পারেনি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে ওই শিক্ষার্থীর জীবন থেকে একটি বছর হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। পরীক্ষা দিতে না পারায় পুলিশকেই দায়ী করেছেন নাজমা। পুনরায় তার একটি বিষয়ে পরীক্ষার নেওয়ার জন্য প্রশাসনসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছেন। জানা গেছে, নওগাঁর পতœীতলা উপজেলার দোচাই গ্রামের হাজিকুল ইসলামের মেয়ে নাজমা আক্তার। গ্রাম থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে উপজেলা সদরে নজিপুরে পুইয়া মহল্লায় ভাড়া বাসায় থেকে পড়াশুনা করত। সে নজিপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এবার চলতি এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। ভাড়া বাসায় কাজের বুয়া ফাতেমা আক্তারও ভাড়া নিয়ে থাকত। বুয়ার সাথে অবৈধ সম্পর্ক ছিল নজরুল ইসলাম নামের এক ব্যাক্তির। গত ২১ জানুয়ারি স্থানীয়রা নজরুল ইসলামকে আটক করে। এক পর্যায়ে দেনদরবার হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নজরুল ইসলামের জামাই ইছাহাক আলী বাদী হয়ে রশিদুল ইসলাম (২৬), কোরবান আলী সরদার (৩৫), সুমন মাহমুদ (২২) আতোয়ার রহমান (২৬), পরীক্ষার্থী নাজমা আকতার, জীবন নেছা (৪০), ফাতেমা আক্তার(৪৫) সহ সাত জনের নাম উল্লেখ করে ২২ জানুয়ারি পতœীতলা থানায় মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় গত ৩০ জানুয়ারি হাইকোর্ট থেকে ছয় সপ্তাহের জামিন নিয়ে আসেন নাজমা আকতার। কিন্তু গত ৮ ফেব্র“য়ারি সন্ধ্যায় জয়পুরহাট র্যাব-৫ তাকে আটক করে পতœীতলা থানা পুলিশে সোপর্দ করে। ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থী নাজমা আক্তার বলেন, থানা পুলিশকে হাইকোর্টের জামিনের কাগজ দেখানো হলে তারা অবমাননা করে এবং পরদিন ৯ ফেব্র“য়ারি নওগাঁ কোর্টে চালান করে দেয়। ওসিকে অনেক অনুরোধ করেছিলাম ছেড়ে দেওয়ার জন্য। কারণ সেদিন আমার ইংরেজি দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষা ছিল। নওগাঁ কোর্টে চালান করায় আমার আর পরীক্ষা দেওয়া হলো না। তিনি আরো বলেন, জামিনের কাগজ দেখে বিচারক বলেন এটার উপর আমার কিছু করার এখতিয়ার নেই। সেদিনই আমাকে কোর্ট হাজত থেকে সন্ধ্যার দিকে ছেড়ে দেয়া হয়। বাকী পরীক্ষাগুলো দিয়ে আসছি। কিন্তু একটি বিষয়ে পরীক্ষায় অনুপস্থিত থাকায় জীবন থেকে একটি বছর এখন নষ্ট হওয়ার পথে। একটি বিষয়ে পরীক্ষার নেওয়ার জন্য প্রশাসনসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি। এ ব্যাপারে নওগাঁ জেলা বারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এজেডএম রফিকুল ইসলাম বলেন, এটি একটি মানবাধিকার লংঘন। আইনের শাসন পরিপন্থি এবং আদালতকে অবজ্ঞা করায় চরম নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। পতœীতলা থানার (ওসি) আজিমদ্দিন বিষয়টি সঠিক নয় বলে তিনি দাবী করেন। জয়পুরহাট র্যাব-৫ মেজর মেজর হাসান আরাফাত বলেন, কাগজের কোন সমস্যা নেই। কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে গ্রেফতার করা হয় এবং বিধি মোতাবেক তাকে থানায় জমা দেওয়া হয়েছে। এসএসসি পরীক্ষার্থী যার বয়স এখনো ১৮ হয়নি। সে কোন সাহসে এতো বড় একটা অপকর্ম করেছে। কিভাবে একজন বয়স্ক লোকের সাথে অপকর্মের ছবি তুলে অপহরণকারীদের গ্র“পের সদস্য হয়ে কাজ করে দিনের পর দিন। তিনি আরো বলেন, ভূয়া একটা বিষয় নিয়ে দাবী করছেন। আপনে সেটার মন্তব্য চাইছেন এটাতো ঠিক না।