Sun. Aug 10th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

10kআহমদ রফিক ।। খােলা বাজার২৪।। বুধবার, ৫ এপ্রিল ২০১৭: ২৫ মার্চ ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দ। দিনটিকে আমরা ‘ভয়াল কালরাত’ হিসেবে চিহ্নিত করে থাকি। পাকিস্তানি সেনাদের বাংলাদেশে গণহত্যা শুরু ঢাকায় প্রায় মধ্যরাতে, তাদের অন্যতম প্রধান টার্গেট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও ছাত্রাবাসগুলোতে ছাত্র-শিক্ষক হত্যার মাধ্যমে। রমনার কালীবাড়ি রক্তের স্রোতে লাল হয়ে ওঠে। আর রাস্তার ধারে, রেললাইনের পাশে বস্তিগুলো পুড়ে ছাই সেখানকার অধিবাসীসহ। তবে বড় হত্যাযজ্ঞ বাজারবাগ পুলিশ লাইনসে ও পিলখানার বাঙালি ইপিআর সেনাদের ওপর বীভৎস আক্রমণে। আগুনে, ধোঁয়ায় ও রক্তের লাল ফিনকিতে মিশে ঢাকায় রক্তাক্ত হয়ে ওঠে ২৫ মার্চের রাত।
সে রাতে ঢাকাবাসী ঘুমানো দূরে থাক, বিছানায় শুতে পারেনি ভয়ে, আতঙ্কে ও কী হচ্ছে বুঝতে না পেরে। ভোরের আজানও সেনাদের রক্তপিপাসা ও দানবলীলা বন্ধ করতে পারেনি। আজ যাঁরা ষাটোর্ধ্ব বয়সী ঢাকাই নাগরিক, তাঁদের সে রাতের বিভীষিকাময় স্মৃতি ভুলে যাওয়ার কথা নয়। কামানের গোলার গুমগুম আওয়াজ, বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্রের অচেনা বিচিত্র ভয়াবহ শব্দ সে রাতে ঢাকাবাসীকে স্তব্ধ অসাড় করে ফেলেছিল।

সে দুঃসহ স্মৃতি ভুলে যাওয়ার নয়। স্বদেশপ্রেমী মানুষের মনে সে স্মৃতি আজও রক্ত ঝরায়। ওই রাতের পাশবিকতায় পাকিস্তানি সেনারা ছাত্রীদেরও রেহাই দেয়নি। রোকেয়া হলের হত্যাযজ্ঞ তার প্রমাণ। শুধু বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসই নয়, আশপাশের ঘরবাড়ি, বিশেষ কয়েকটি পত্রিকা অফিস (যেমন ‘দ্য পিপল’) পুড়িয়ে দেওয়া হয়। সেসব দৃশ্যের যতটা দেখা সম্ভব হোটেল ‘ইন্টারকনের ছাদে উঠে দেখেছিলেন বিদেশি সাংবাদিক সাইমন ড্রিং ও তাঁর সহকর্মী ক্যামেরাম্যান।
সে ভয়াল ঘটনার বিবরণ পত্রিকায় প্রকাশ করে ঢাকায় সংঘটিত গণহত্যার প্রথম পর্বের অমর রূপকার হয়ে আছেন তাঁরা। এমনকি তাঁর বিবরণে পুরান ঢাকার হিন্দুপ্রধান এলাকাগুলো, যেমন শাঁখারীবাজার, তাঁতীবাজার ও নয়াবাজারসহ স্বাধীনতা সমর্থক এলাকাগুলোতে আগুন আর গোলাগুলিতে বীভৎস মৃত্যুর কথাও স্থান পেয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে অ্যান্থনি ম্যাসকারেনহাসের লেখা গণহত্যার বিবরণ, যা অস্বীকারের উপায় নেই।
গণহত্যার সূচনালগ্নের ধারাবাহিক বর্বরতা চলেছে পরবর্তী ৯ মাসজুড়ে দেশের সর্বত্র। এমন কোনো শহর নেই, যেখানে গণহত্যা ঘটেনি। শহর ও গ্রামাঞ্চলের হিন্দুপ্রধান বসতিগুলো ছিল পাকিস্তানি সেনাদের প্রধান লক্ষ্যবস্তু। এসব তথ্য প্রকাশ পেয়েছে প্রধানত ব্রিটিশ, আমেরিকান, কানাডিয়ান ও অন্যান্য পত্রপত্রিকায়, সেসব বিবরণ বড় মর্মস্পর্শী।
সবচেয়ে বড় কথা এখনো দেশের বিভিন্ন স্থানে গণকবরের সন্ধান মিলছে। মিলছে তথ্য-প্রমাণের নিরিখে। ঢাকায় রায়েরবাজার, মিরপুর, মোহাম্মদপুর প্রভৃতি এলাকায় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিবরণ ও পরিসংখ্যান এতকাল পরও পড়তে গেলে শিহরণ জাগে দেহ-মনে। ঢাকার মিরপুর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের জন্য হয়ে ওঠে কুখ্যাত। গোটা মিরপুরে ছড়ানো রয়েছে বধ্যভূমি। বিহারি অধ্যুষিত এই এলাকা বাঙালির জন্য নরককুণ্ডে পরিণত হয়েছিল।
২৫ মার্চ মধ্যরাত থেকে পরবর্তী কয়েক দিন ঢাকার বিভিন্ন স্থানে যে গণহত্যা সংঘটিত হয় তার বিবরণ যেমন ব্রিটিশ ও মার্কিনি পত্রপত্রিকায় ধরা আছে, তেমনি প্রত্যক্ষদর্শী বাঙালির বর্ণনায়ও সে বর্বরতার ইতিহাস লিপিবদ্ধ হয়েছে বিভিন্নজনের লেখায়। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকদের কলমে এ পর্যন্ত যা বিবৃত হয়েছে, বিদেশি-দেশি সেসব বিবরণ একত্র করলে দেশবিভাগ ইতিহাসের মতোই বাংলাদেশি গণহত্যার ইতিহাস তৈরি হবে।
একাত্তরে ঢাকায় কর্মরত মার্কিন কূটনীতিক আর্চার ব্লাড পাকিস্তানি সেনাদের গণহত্যা প্রসঙ্গে ওয়াশিংটনে যেসব গোপন বার্তা পাঠিয়েছিলেন সেগুলোও তো যথাস্থানে ধরা রয়েছে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের মহাফেজখানায় গণহত্যাবিষয়ক দলিলপত্রের সংখ্যা কম নয়। আগেই বলা হয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ ব্রিটিশ পত্রপত্রিকাগুলোতে প্রকাশিত গণহত্যামূলক বিবরণের কথা। সৎ সাংবাদিকদের হাতে তৈরি এসব প্রতিবেদন পূর্ববঙ্গে সংঘটিত গণহত্যার জলজ্যান্ত প্রমাণ।
পাকিস্তানি সামরিক শাসক ও জুলফিকার আলী ভুট্টোসহ অনুরূপ যেসব পাকিস্তানি বাংলাদেশে গণহত্যার বিষয়টি বরাবর অস্বীকার করে এসেছেন এবং এখনো করে আসছেন সেসব মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে যথার্থ ও গ্রহণযোগ্য প্রমাণ তো পূর্বোক্ত পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন। বাংলাদেশ সরকারের দায়িত্ব ও কর্তব্য দেশে দেশে ছড়ানো এসব বিবরণ সংগ্রহ করা, সংকলিত করা, সংরক্ষণ করা। যাতে এগুলো প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আদালতে পেশ করা যায়। পেশ করা যায় জাতিসংঘের মতো সংস্থার সংশ্লিষ্ট শাখায় বা দপ্তরে।
দুই.
পাকিস্তানি মূল শাসকশ্রেণি, তা যে দলেরই হোক, বাংলাদেশে গণহত্যার প্রশ্নে এক রা। এ রাষ্ট্রের জন্মলগ্ন থেকে তারা বাংলা-বাঙালিকে বিজাতীয় জ্ঞান করেছে, সৃষ্টি করেছে অর্থনৈতিক বৈষম্য। পরিণামে রণাঙ্গনের লড়াইয়ের মাধ্যমে ভূখণ্ড বিচ্ছিন্নতা ও স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম। বাংলাদেশও নানা কারণে তার প্রাপ্য বুঝে নিতে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেনি। যে বিহারিকুল এ দেশে সংঘটিত গণহত্যার অংশীদার, স্বীকৃত সেই পাকিস্তানিদের তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেনি বাংলাদেশ।
ইদানীং পাকিস্তানের জনাকয়েক সাংবাদিক ও সমাজসেবী হামিদ মীর বা আসমা জাহাঙ্গীরদের গণহত্যার বিষয়টি মেনে নেওয়া ও এর জন্য বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চাওয়ার ক্ষেত্রে প্রকাশ্যে অভিমত প্রকাশ করলেও পাকিস্তানি জনগণ এ ব্যাপারে মূর্খের স্বর্গে বাস করছে। পাকিস্তানি শাসকশ্রেণি দেশটির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বাঙালিবিরোধী প্রচারণায় তাদের জনতার এতটাই মগজ ধোলাই করেছে যে তারা এখনো বিশ্বাস করে, ভারতের প্ররোচনায় বাঙালিরা পাকিস্তানবিরোধী রাজনীতিতে উদ্বুদ্ধ হয়ে বিচ্ছিন্নতার সূচনা ঘটায়। তাই সেনাবাহিনীকে বাধ্য হয়ে যুদ্ধে নামতে হয়েছে। ইতিহাসের কী মিথ্যাচার!
পাকিস্তানি শাসকশ্রেণির এমনই কূট-চতুরতা যে যুদ্ধাপরাধের বর্বরতায় সরাসরি সংশ্লিষ্ট পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তাদের বিচার করতে পারেনি বাংলাদেশ সরকার। তাত্ক্ষণিক সমস্যা দূর হওয়ার পরও সে ব্যাপারে সচেষ্ট হয়নি বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনের যে সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েছে, তা দেরিতে হলেও সঠিক পদক্ষেপ। এবং তা প্রশংসনীয় উদ্যোগ।
এ প্রসঙ্গে আমাদের বক্তব্য, এ প্রচেষ্টায় যেন আমাদের যথার্থ রাষ্ট্রনৈতিক সদিচ্ছা ও স্বদেশের প্রতি দায়বদ্ধতার প্রকাশ ঘটে। এ ক্ষেত্রে দরকার পড়বে আন্তর্জাতিক দরবারে বলিষ্ঠ, লাগাতার কার্যক্রম চালু রাখা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালে জাতিগতভাবে ইহুদি নিধন ও আর্মেনিয়ায় সংঘটিত গণহত্যার মতো একাধিক গণহত্যা যদি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতে পারে, তাহলে একাত্তরে বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাবে না কেন? এ জন্য দরকার লক্ষ্য অর্জনে কর্মনিষ্ঠা, যা এর আগে ইহুদিরা দেখিয়েছে।
এ প্রচেষ্টায় সফলতার পূর্বশর্ত গণহত্যার সচেতনতা সম্পর্কে দেশের আত্মিক শক্তিকে জাগিয়ে তোলা, জনগণকে একাট্টা করা। তা করতে হলে এখন থেকে দরকার গণহত্যার ভয়াবহতা, এর সত্যিকার ইতিহাস নানা মাধ্যমে জনসাধারণের সামনে তুলে ধরা। সেই সঙ্গে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নানামাত্রিক প্রচারে ছাত্রদের সচেতন করে তোলা, যাতে গোটা জাতি এ ব্যাপারে একমুখী শক্তিমান ভূমিকা নিতে পারে।
এর কারণ একটাই। এরই মধ্যে অনেক সময় বয়ে গেছে। সময় অনেক নৃশংস শিহরণ জাগানো ঘটনা বিকৃতির বালুচরে চাপা দিয়েছে। সদ্য জাগ্রত ক্ষোভ, ক্রোধ ও প্রতিকারের প্রচণ্ড ইচ্ছা আর আগের মতো নেই। এটাই হয়তো স্বাভাবিক। যদিও ইসরায়েলিরা এ ব্যাপারে ব্যতিক্রম। বাংলাদেশ নিজেকে এই ব্যতিক্রমী ধারার অন্তর্ভুক্ত করবে—এমনটাই আমাদের প্রত্যাশা।
এ ব্যাপারে আন্তরিকতা, মানসিক দৃঢ়তা বিশেষভাবে প্রয়োজন এ কারণে যে পাকিস্তান এ প্রচেষ্টা বানচাল করতে আপ্রাণ চেষ্টা চালাবে। পাকিস্তানের যে শাসকশ্রেণি বাংলাদেশে একাত্তরের বাঙালি ঘাতকচক্রের বিচার ও শাস্তি মেনে নিতে পারেনি, কূটনৈতিক সৌজন্যবোধের পরিচয় দিতে পারেনি, বরং তাদের সংসদে এর বিরুদ্ধে প্রস্তাব গ্রহণ করেছে তারা ‘গণহত্যা দিবস’ মেনে নেবে—এমনটি ভাবার কোনো কারণ নেই।
তাই রাষ্ট্রনৈতিক-রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক দিক থেকে ঐক্যবদ্ধ জাতীয় শক্তির দৃঢ়তা নিয়ে গত ১১ মার্চ (২০১৭) এ বিষয়ে সংসদে উত্থাপিত ও গৃহীত প্রস্তাবটি আন্তর্জাতিক পরিসরে বাস্তবায়নের চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। সংসদে এ প্রস্তাবের উত্থাপককে ধন্যবাদ।
বিশ্বের একাধিক প্রতিবাদ দিবসের পাশাপাশি একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মতো পঁচিশে মার্চ (১৯৭১) স্বীকৃতি পাক ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাক একাত্তরের ২৫ মার্চ থেকে বাংলাদেশে সংঘটিত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণহত্যার বর্বরতা ও এর বিরুদ্ধে সংঘটিত প্রতিরোধ ও প্রতিবাদের যুদ্ধ। তাহলেই দিবসটি রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠবে এবং তা হবে বিশ্বপরিসরে। আর তাতে করে জাতি হিসেবে আমাদের প্রকৃতিসুলভ ইতিহাস-ঐতিহ্যগত জড়তার দায়মুক্তি ঘটবে।
তিন
এবার এ প্রস্তাব বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য পদক্ষেপ সম্পর্কে দু-চারটি কথা। শোনা যাচ্ছে বর্তমান সরকার এ ব্যাপারে সদিচ্ছা নিয়েই এগিয়ে যেতে চাইছে। যেহেতু বিষয়টি দীর্ঘকাল আগের, আর এ প্রস্তাবের বিরোধীরা যথেষ্ট শক্তিমান, হয়তোবা সংঘবদ্ধও, তাই বিচক্ষণ চিন্তা-ভাবনায় পদক্ষেপ নিতে হবে বাংলাদেশকে।
এ জন্য দরকার হবে নির্ভরযোগ্য, গ্রহণযোগ্য নানামাত্রিক তথ্য-উপাত্ত। এত বছর পর সেসব সংগ্রহ কিছুটা কষ্টকর হলেও অসম্ভব নয় বলে আমাদের বিশ্বাস। কারণ বিদেশি পত্রপত্রিকাগুলোর সংবাদ প্রতিবেদন তো হাতের কাছেই রয়েছে। দরকার সেগুলো গোছগাছ করে নেওয়া। এ জন্য দরকার আদর্শগত মানসিক দৃঢ়তা, বিশ্বাসের সঙ্গে শক্তিকে মেলানো ও সংহত করা।
এর মধ্যেই ২০১৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে ৯ ডিসেম্বর ‘আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস’ হিসেবে জাতিসংঘের ঘোষণামাফিক পালিত হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে নতুন করে ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে ঘোষণার সম্ভাবনা নেই বললে চলে। আমাদের জাতীয় স্বভাবসুলভ কালক্ষেপণ ও দীর্ঘসূত্রতার কারণে জাতিসংঘের সাম্প্রতিক ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে পঁচিশে মার্চ ‘আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতির সম্ভাবনা হাতছাড়া হয়ে গেল। বাকি রইল আন্তর্জাতিক পরিসরে ২৫ মার্চে সূচিত গণহত্যার স্বীকৃতি।
এ জন্যও প্রয়োজন হবে শক্তিমান আন্তর্জাতিক মহলের সমর্থন, বিশেষত বিশ্ব পরাশক্তিগুলোর। ধরে নেওয়া যায়, মধ্যপ্রাচ্যের ইসলামী দেশগুলোর সমর্থন পাওয়া যাবে না। একাত্তর বিষয়ে যেমন একাত্তরে তেমনি এখনো বাংলাদেশ বেশ কিছুটা নিঃসঙ্গ। তাই তথ্য-উপাত্তে সমৃদ্ধ হয়ে তবেই এগোতে হবে।
এ বিষয়ে কোন দরবারে যাবে বাংলাদেশ? বিশ্লেষক ও বিশেষজ্ঞদের কারো কারো অভিমত, বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যার স্বীকৃতির জন্য আপাতত আন্তর্জাতিক অপরাধ বিচারের আদালতে যাওয়াই সমীচীন। এ সম্পর্কে ‘দ্য ওয়ার ক্রাইমস ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির প্রতিষ্ঠাতা ডা. হাসান অনুরূপ মত পোষণ করেন বলে পত্রিকায় তথ্য প্রকাশ পেয়েছে।
আশা করছি বাংলাদেশ চিন্তা-ভাবনা, বিচার-ব্যাখ্যা করেই সঠিক পন্থা নির্ধারণ করবে। এরই মধ্যে এ সম্পর্কে বাঙালি জাতিকে সচেতন, ঐক্যবদ্ধ ও প্রতিবাদী করে তোলার কাজ নানাভাবে লাগাতার চালিয়ে যেতে হবে। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় জনসমর্থনের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ।
লেখক : কবি, গবেষক, ভাষাসংগ্রামী
[সংকলিত]

অন্যরকম