Mon. Sep 15th, 2025
Advertisements

220447kalerkantho.com-12-04-17-01_খােলা বাজার২৪।। বৃহস্পতিবার, ১৩ এপ্রিল ২০১৭: চিরচেনা চারুকলা এখন বদলে গেছে। শান্ত এই অনুষদে সময় কখনো কখনো থমকে থাকে। তবে এখন এখানে উত্সবের আমেজ। গেট দিয়ে ঢুকেই চোখে পড়ল মাটির সানকিতে অনেক শিল্পকর্ম পড়ে আছে। এসব সরাচিত্রের কাজ করছেন এমএফএ (মাস্টার্স অব ফাইন আর্টস) দ্বিতীয় সেমিস্টারের ছাত্রী শামস-ই-ইসলাম। তিনি বললেন, ‘সবচেয়ে সিনিয়র ব্যাচই সাধারণত মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করে। সেই হিসেবে এবার আমাদের ঘাড়েই পুরো আয়োজনের দায়িত্ব চেপেছে। ’ তাঁর কাছেই জানা গেল, কিভাবে এই বিশাল মঙ্গল শোভাযাত্রা ও পহেলা বৈশাখ পালনের পর্বটি শুরু হয়। তিনি বললেন, ‘প্রতিবছর পুরো অনুষদের সব বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে একটি সাধারণ সভার আয়োজন করা হয়। তাতে অন্যদের কাছ থেকে সবচেয়ে সিনিয়র ব্যাচ কাজের অনুমতি নেয়। মার্চ থেকে কাজ শুরু করি। এরপর কাগজ কেটে নানা ধরনের ফুল ও পাখি বানিয়ে সেগুলো বিক্রি করে সবার কাছ থেকে চাঁদা তোলা হয়। তারপর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের দিন ঠিক করা হয়। সাবেক ছাত্র-ছাত্রীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। শিক্ষকরাও আসেন। তাঁদের সবাইকে নিয়ে কাজের উদ্বোধন করা হয়। পহেলা বৈশাখের প্রথম প্রহর মানে ভোর পর্যন্ত টানা কাজ চলে। কাগজ আর মাটি দিয়ে নানা ধরনের লোকজ মোটিফ বানানো হয়। আমাদের সঙ্গে সাবেক, বর্তমান ছাত্র, এমনকি শিক্ষকরাও সহযোগিতা করেন। আর পুরো কাজ শেষ হয় পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রার মাধ্যমে। ’ এবার পহেলা বৈশাখের আগের দিন সারা রাত কাজ করবেন তাঁরা। এরপর বৈশাখের শোভাযাত্রা হবে। এক কি দুই দিন পর যাত্রাপালা হবে। সেখানে বরাবরের মতো চারুকলার ছেলে-মেয়েরাই অভিনয় করবেন। সব আয়োজন শেষে বেঁচে যাওয়া টাকা দিয়ে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। শামস জানালেন, এবার তাঁদের মঙ্গল শোভাযাত্রার থিম—‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে’। এবার জঙ্গিবাদের বিরোধিতার বার্তাও থাকবে। ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হওয়ায় এবার মঙ্গল শোভাযাত্রাকে তাঁরা আরো রঙিন করে তুলতে চান। এবারের আয়োজনের উদ্বোধন করেছেন খ্যাতিমান চিত্রকর ও চারুকলার সাবেক শিক্ষক রফিকুন নবী। তিনি বললেন, ‘আমি ছবি এঁকে এবারের কাজের উদ্বোধন করেছি। আমি, আমরা সবাই চাই—আমাদের শোভাযাত্রায়, অন্যান্য আয়োজনে সাধারণ মানুষ আরো বেশি অংশ নিক। আর আমাদের মঙ্গল শোভাযাত্রা বিশ্ব ঐতিহ্য হওয়ায় সবারই দায়িত্ব অনেক বেড়েছে। একে জমজমাট করে তুললে আমাদের সংস্কৃতিই বেঁচে থাকবে। ’