Wed. Apr 30th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

university-rajshahi-nbs24খােলা বাজার২৪।। মঙ্গলবার,  ১৮ এপ্রিল ২০১৭: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) চারুকলা অনুষদের ভাস্কর্য ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ফেলে রাখার দায় স্বীকার করলেন দুই শিক্ষার্থী। ভাস্কর্যগুলো অযত্নে-অবহেলায় রাখা এবং বহিরাগতদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতেই তাঁরা এমন কাজ করেছেন বলে জানান।

আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে এ দুই শিক্ষার্থী এসে হঠাৎ করেই সাংবাদিকদের সামনে এ দায় স্বীকার করে নেন।

দায় স্বীকার করা দুই শিক্ষার্থী হলেন ইমরান হোসেন অনিক ও ইউসুফ আলী স্বাধীন। এর দুজনেই সিরামিক ও ভাস্কর্য বিভাগের স্নাতকোত্তর পর্বের শিক্ষার্থী।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ইমরান হোসেন অনিক বলেন, ‘আমাদের চারুকলা বিভাগকে আরো সুন্দরভাবে গোছানোর জন্য এ কাজ করছি। এর মধ্য দিয়ে আমরা শিক্ষকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেয়েছি। আমাদের বিভাগের ইন্টারনাল (অভ্যন্তরীণ) কিছু সমস্যা আছে। যার জন্য এই জিনিসগুলোর প্রতি যত্ন নেওয়া হয় না। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল, এই জিনিসগুলোর যত্ন নেওয়া হোক।’

ইমরান হোসেন অনিক আরো বলেন, ‘আমরা ৩০-৪০ শিক্ষার্থী এ কাজ করেছি। আমরা মাস্টার্সের শিক্ষার্থীরা, সঙ্গে বিভাগের ছোট ভাই যারা আছে, তারা এ কাজটা করি।’

ইউসুফ আলী স্বাধীন বলেন, ‘আমরা রাতে এখানে কাজ করি, গতকাল রাতে কাজ শেষে যাওয়ার সময় এ কাজ করি। দিনের বেলা এ কাজ করে ফোকাস হতো না। তা ছাড়া দিনের বেলা এটা করা যেত না।’

আরেকটি উদ্দেশ্যের কথা উল্লেখ করে স্বাধীন বলেন, ‘আমরা ভাস্কর্যগুলো উল্টিয়ে দিয়েছি, ফলে সাংবাদিকরা আসছেন। কিন্তু এই উল্টানোটা বহিরাগতরা করতে পারত। আমরা এ নিয়ে অনেকবার সমস্যায় পড়েছি। বহিরাগতরা বিভিন্ন সময় ভাস্কর্য ভাঙছে। শিক্ষার্থীরাও বহিরাগতদের মারধরের শিকার হয়েছে। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে আমরা প্রাচীরের জন্য বলেছিলাম। কিন্তু তারা বিষয়টাকে গুরুত্বসহকারে নেয়নি, তাই সাত-আট বছরেও একটা প্রাচীর তৈরি হয়নি।’ এই ভাস্কর্যগুলো ফেলে রাখাকে প্রতিবাদের ভাষা বলেও দাবি করেন তাঁরা।

এ বিষয়ে সিরামিক ও ভাস্কর্য বিভাগের সভাপতি বলেন, ‘এ ঘটনা আমাদের শিক্ষার্থীরাই ঘটিয়েছে, সেটা গার্ডও দেখেছে। তারা সকালে সবার সামনে বলবে ঘটনাটি, সে রকম প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল। এর মধ্য দিয়ে তাদের যে দাবি, সেগুলোই বলার চেষ্টা করেছে সবার কাছে। আমাদের কাছেও তারা স্বীকার করেছে। এর সঙ্গে বাইরের কারো কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।’

ঘটনাস্থলে উপস্থিত প্রখ্যাত নাট্যজন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষক মলয় ভৌমিক বলেন, ‘এই শিল্পের প্রতি অবহেলা হচ্ছে, সেটার জন্যেই তারা প্রতিবাদ করছে। তাহলে সেই শিল্পকর্মগুলোকেই মাটিতে শুইয়ে অবজ্ঞা করে কী ধরনের প্রতিবাদ! আমি যে সৃষ্টিকে ভালোবাসি, তাকে ধ্বংস, অমর্যাদা করে; সেই সৃষ্টির মর্যাদা ফিরিয়ে আনা যায় না।’

মলয় ভৌমিক আরো বলেন, ‘এইভাবে প্রতিবাদ করা হলে জনগণের কাছে ভুল বার্তা যাবে। মানুষ আরো বেশি বিভ্রান্ত হবে।’