Wed. Apr 30th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলা বাজার২৪।। বুধবার, ১৯ এপ্রিল ২০১৭: 61মাহফুজ মুন্না, রাবি : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ভাস্কর্যগুলো উল্টে-পাল্টে রাখার নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝেও চলছে পাল্টা যুক্তি-তর্ক। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতেও চলছে নানা আলোচনা সমালোচনা।

বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন রাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক তমাশ্রী দাস তার ফেসবুক টাইমলাইনে লিখেছেন, ‘রাবির চারুকলা বিভাগের ভাস্কর্যগুলো উল্টে রাখার ঘটনা কোন হামলা বা আক্রমণের নয়। কোন ভাস্কর্য ভাঙা হয়নি। বিভাগের শিক্ষার্থীরাই এভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভাগের বিভিন্ন বিশৃঙ্খলা নিয়ে। তাদের ভাস্কর্যগুলো যত্রতত্র পড়ে থাকা, পরিছন্নতার অভাব, ক্লাসরুমের সংকট, সেশনজট, বিদ্যুৎ সংযোগে সমস্যা ও নারীদের নিরাপত্তাহীনতা এইসব বিষয়ে দাবি তুলেছে। তাদের দাবির সাথে সংহতি জানাই।’

জানতে চাইলে রাবি কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি আব্দুল মজিদ অন্তর বলেন, এখানে অন্য কোনো উদ্দেশ্য থাকতে পাবে। তৃতীয় পক্ষের ওপর দোষ চাপানোর জন্য এবং সারাদেশে একটা আলোড়ন সৃষ্টির জন্য এটা করে থাকতে পারে। ওরা যে কাজটি করেছে সেটা অবশ্যই অবমাননা। এ আমরা মেনে নিতে পারছি না। এ ঘটনার সঙ্গে যেই জড়িত থাক, সে যদি শিক্ষকও হয় তাকেও আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।

এক প্রশ্নের জবাবে আব্দুল মজিদ বলেন, শিক্ষকরা ক্লাস নেয় না, ভাস্কর্যগুলো সংরক্ষণ করা হয় না এর জন্য আন্দোলন হতেই পারে। কিন্তু সেটা এভাবে শিল্পকলা উল্টিয়ে নয়। এভাবে শিল্পকর্মকে অপমান করা হয়েছে।

চারুকলা অনুষদের অধিকর্তা অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান মনে করেন, অনুষদের শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ঘটনাটি তদন্ত করার জন্য আবেদন করবে। যারা এ ঘটনায় জড়িত তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আবেদনে কোনো শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখ করা হয়নি বলেও জানান তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন, ‘চারুকলা অনুষদের ভাস্কর্যগুলোর সংরক্ষণের জন্য দীর্ঘদিন থেকে শিক্ষার্থীরা বলে আসছে। কিন্তু কেউই এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় শিক্ষার্থীরা এভাবে আন্দোলন করেছে।’

চারুকলা অনুষদের মৃৎশিল্প ও ভাস্কর্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কনক কুমার পাঠক মনে করেন, এটা অবশ্যই ভুল হয়েছে। এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকা বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘চারুকলার ঘটনাটা আমার কাছে রহস্যময় মনে হচ্ছে। এখানে প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীর হাত থাকতে পারে। কারণ উন্নয়নের জন্য প্রতিবাদের ভাষা এরকম হতে পারে না।’
প্রসঙ্গত, গত সোমবার গভীর রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা অনুষদের প্রায় পাঁচ শতাধিক ভাস্কর্য উল্টে-পাল্টে রাখা হয়েছিল। এ নিয়ে দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্ট হয়েছে। তবে মঙ্গলবার বিকেলেই ভাস্কর্যগুলো ঠিক করে রাখা হয়েছে।