খােলা বাজার২৪।। শনিবার, ২২ এপ্রিল ২০১৭: শুক্রবার রাতের ভারী বর্ষণে প্রবেশ পথ ও স্কুল সংলগ্ন খেলার মাঠ ডুবে যাওয়ায় নাটোরের অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস হয়নি। অপরদিকে ভারী বর্ষণের কারনে সিংড়ার চলনবিল ও নলডাঙ্গার হালতিবিলসহ জেলার অন্যান্য উপজেলার নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে উঠতি বোরো ধান কাটা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন জেলার কয়েক হাজার কৃষক। অপরদিকে রাস্তা-ঘাট ডুবে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারন মানুষ। শনিবার সকাল থেকে জেলা প্রশাসক জলাবদ্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কৃষি অধিদপ্তরের উপপরিচালকসহ কৃষি কর্মকর্তারা জেলার বিভিন্ন আবাদি এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এদিকে অভিভাবকদের অভিযোগ, কোন কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকরা ভারী বর্ষণের অজুহাতে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে বাড়ি ফিরে যান।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানাযায়, শুক্রবার রাত ও শনিবার ভোরের কয়েক ঘন্টার টানা বর্ষণে জেলা সদরের সরকারী বালক ও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ প্রায় অর্ধ শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন খোলা মাঠ হাটু পানিতে তলিয়ে যায়। শিক্ষক শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগসহ ভোগান্তিতে পড়তে হয়। ফলে শিক্ষার্থীদের অনেকেই স্কুলে এসেও ফিরে যায়। এই অজুহাতে বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে বাড়ি চলে যান। শনিবার সকালে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খোদ জেলা প্রশাসক।
অপরদিকে টানা ভারী বর্ষণে চলনবিল অধ্যুষিত সিংড়া ও নলডাঙ্গার হালতিবিল সহ গুরুদাসপুর,বড়াইগ্রাম,লালপুর,বাগাতিপাড়া ও সদর উপজেলার নিচু এলাকার বোরো জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ফসল কাটা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় পড়েছেন এসব এলাকার কয়েক হাজার কৃষক। শনিবার সকাল থেকে জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপপরিচালকসহ কৃষি কর্মকর্তারা ওইসব এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার রাতে ১৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ভারী বর্ষণে ফসলের তেমন কোন ক্ষতি না হলেও বেশ কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে বোরো ধান কাটা প্রায় এক সপ্তাহ পিছিয়ে গেছে। এই সময়ের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ বোরো ধান কাটা সম্পন্ন হতো। তিনি জানান,এবার জেলায় ৫৬ হাজার ৩৭০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে।
জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন জানান, ভারী বর্ষণে কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কম হওয়ায় ক্লাস হয়নি। তবে এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয় সহ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে বাড়ি যান। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান তিনি।