Fri. Mar 14th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

আহমদ রফিক 13 খােলা বাজার২৪।। বুধবার, ৩ মে, ২০১৭:
গ্রামবাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ রবীন্দ্রনাথ শিলাইদহ অঞ্চলে প্রত্যক্ষ করেছিলেন প্রাকৃতিক দুর্যোগে কৃষকের কাঁচা ধান-আধপাকা ধান ডুবে যাওয়ার ঘটনা। বোটে বসে শুনেছিলেন, নৌকায় কাঁচা ধানই কেটে নিয়ে যাওয়া কৃষকের হাহাকার। ছিন্ন পত্রাবলিতে এ সম্পর্কে বেদনার্ত কবির মর্মবেদনার প্রকাশ লিপিবদ্ধ রয়েছে যথাযথ ভাষ্যে। প্রকৃতির খামখেয়ালিপনার একাধিক উদাহরণ ওই পত্রাবলিতে পাওয়া যায়। তাতে ক্ষোভ ও খেদ প্রকাশ পেয়েছে।

শুধু মধ্যবঙ্গ, উত্তরবঙ্গ বা চলন বিলই নয়, পূর্বাঞ্চলীয় বঙ্গে বিশাল জলাশয় তথা হাওরের সংখ্যা অগুনতি। বৃহত্তর সিলেট, ময়মনসিংহ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ একাধিক জেলায় অবস্থিত বিশাল হাওরাঞ্চলে মানুষের দুস্থ জীবনযাত্রার প্রধান সহায় হাওরের ধান। বিশেষ করে বোরো ধানের আবাদ ও মত্স্যসম্পদ। হাওরের মিঠা পানির মাছ স্বাদে অতুলনীয়, এ অভিজ্ঞতা অবশ্য সীমাবদ্ধ বৃত্তে বন্দি।

হাওর বাংলাদেশে প্রকৃতির দান, প্রাকৃতিক সম্পদও বটে। আবার সেখানে কখনো প্রকৃতির বিষম প্রভাব দুর্যোগের ঘনঘটা তৈরি করে। দুর্যোগ-দুর্গতি যেমন স্থানীয় জনজীবনে, তেমনি তার প্রভাব পড়ে জাতীয় জীবনে, বিশেষ করে জাতীয় অর্থনীতিতে। এটা কোনো বছর বিশেষের ঘটনা নয়। প্রকৃতির ওপর বিশ্বজুড়ে আধুনিক মানবসভ্যতা ও প্রযুক্তির অত্যাচার প্রকৃতির প্রতিশোধরূপে ফিরে আসে। ঘটে জলবায়ুর পরিবর্তন, সেই সুবাদে অনেক অঘটন।

অবস্থা বিপজ্জনক সূচকে পৌঁছে যাওয়ার কারণে ইদানীং বিশ্বমোড়লদের কিছুটা টনক নড়েছে। শুরু হয়েছে জলবায়ু সম্মেলনে এসব নিয়ে তর্ক-বিতর্ক। বিশেষত এন্তার কার্বন নিঃসরণ, বায়ুদূষণ, ওজোন স্তরের ক্ষতি ইত্যাদি এখন আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সর্বোচ্চ স্তরের শিল্পোন্নত দেশ তথা পরাশক্তি রাষ্ট্রগুলো তবু সভ্যতার জন্য দুর্যোগবাহী এ পরিস্থিতি পুরোপুরি বিবেচনায় আনতে নারাজ। তাদের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্বার্থই সেখানে বড় কথা।

তাই প্রকৃতির বিষম আচরণ গোটা বিশ্বজুড়ে। নানা নামে ধন্য জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড়, বন্যা-বৃষ্টি এককথায় সুনামি এখন মস্ত এক আতঙ্কের নাম। তবু না মানে স্বার্থপরতা। ছোটখাটো এবং প্রায় মধ্য আয়ের রাষ্ট্র বাংলাদেশও প্রাকৃতিক দুর্যোগের বাইরে নয়। বেশ কিছুকাল থেকে দেখা যাচ্ছে, কখনো অকাল বর্ষণ ও বন্যা, কখনো লাগাতার অকাল খরা জনজীবনে, জাতীয় জীবনে বিপর্যয় সৃষ্টি করছে। এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে কৃষি উৎপাদনে, মত্স্যসম্পদে, ফল উৎপাদনের মতো বিবিধ খাতে।

দুই

এ বছর হাওরাঞ্চলে আগাম বৃষ্টি ও বন্যা, পাহাড়ি পানির ঢল এক মহাবিপর্যয় সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে বৃহত্তর সিলেট ও বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলে। কোথাও বাঁধ ভেঙে, কোথাও বাঁধ উপচে পানির প্লাবনে প্রকৃতির এক অনাকাঙ্ক্ষিত উচ্ছ্বাস। জলবায়ু পরিবর্তনের এমন আশঙ্কা নাকি কোনো কোনো গবেষণাপ্রতিষ্ঠান এর আগে তাদের প্রতিবেদনে প্রকাশ করেছিল। সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর সেসব আমলে আনেনি।

এরপর যা ঘটার ঘটেছে। একের পর এক ফসলসহ হাওরে মাথা উঁচু পানি, হাওর ডুবছে। আর তার নানামাত্রিক প্রভাবে কাঁচা ধান ডুবেছে, ওদের পচনদশা মরণদশা তৈরি করেছে মত্স্যকুলে ও প্রাণবৈচিত্র্যে, জীববৈচিত্র্যে, উদ্ভিদবৈচিত্র্যে। দারুণ এক ছন্নছাড়া অবস্থা। প্রতিদিন প্রায় প্রতিটি সংবাদপত্রে প্রকাশ পেয়েছে দুর্যোগের নানাবিধ খবর, বড় বড় শিরোনামে। আমরা সেসব দেখছি, পড়ছি, দুঃখ বোধ করছি, ব্যস—এ পর্যন্তই।

হাওরের কান্না নিয়ে একের পর এক উপসম্পাদকীয় প্রকাশিত হচ্ছে। বিটিভিতে আলোচনা অনুষ্ঠান চলছে, সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বৈঠক, আলোচনা, ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত ইত্যাদি যথারীতি চলছে। বলা হচ্ছে, লেখা হচ্ছে অর্থনৈতিক ক্ষতি, মানব দুর্গতি, হাওরাঞ্চলকে দুর্গত অঞ্চল ঘোষণার দাবি ইত্যাদি বিষয় নিয়ে। বিশেষভাবে এমন বক্তব্যও পরিবেশিত যেমন প্রতিবেশ অনুযায়ী সমাধান খুঁজতে হবে—‘হাওরে বিপর্যয়, প্রকৃতির বৈরিতা এবং মনুষ্যসৃষ্ট কারণ’ ইত্যাদি বিচিত্র শিরোনামে।

শুধু যে ৫০ লাখ হাওরাবাসী মানুষ তীব্র খাদ্য ঝুঁকির মধ্যে তা-ই নয়, ‘হাওরে হাঁস খামারিদেরও মাথায় হাত। ’ এককথায় ‘বিপন্ন হাওরাঞ্চল’, ‘গভীর সংকটে’, ‘হাওরে বিপর্যস্ত জনজীবন’। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, সামাজিক দুর্যোগের সঙ্গে জড়িত এক অনাকাঙ্ক্ষিত দিক হলো মানবিক দুর্যোগ। তাতে অসৎ, দুর্নীতিবাজ মানুষের কালো হাতই কাজ করে বেশি। একে দুর্যোগ না বলে মানবসৃষ্ট অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা উচিত।

এবারকার দুর্যোগের চরিত্র বরাবরের মতোই এ অর্থে যে হাওরে কৃষকরা এক ফসলের ওপর নির্ভরশীল। সেই বোরো ধান যদি নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে সারা বছরের অন্নাভাব তার নিত্যসঙ্গী। তবে এবারে তাদের সর্বনাশের আরেকটি বড় কারণ মাছের মড়ক। সব মিলিয়ে হাওরের বন্যা জাতীয় দুর্যোগের চরিত্র অর্জন করেছে। আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বিপুল এবং স্থানীয় সূত্রে উপার্জনের অন্য উপায় সীমিত বিধায় সিলেট ও ময়মনসিংহের বানভাসি হাওর অঞ্চলকে ‘দুর্গত এলাকা’ ঘোষণা করা এবং সে অনুযায়ী জাতীয় পর্যায়ে সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।

তা না হলে অনাহার, অপুষ্টি, মৃত্যু এসব এলাকায় সামাজিক সমস্যা তৈরি করবে। কিছু সমস্যা এর মধ্যেই দেখা দিয়েছে। যেমন—সব কিছু ডুবে যাওয়ার কারণে বিশুদ্ধ পানীয়জলের অভাবে পানিবাহিত রোগ দেখা দিয়েছে। চিকিৎসার অভাব, অর্থের অভাবে মৃত্যু নিশ্চিত ঠিকানা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মূল সমস্যা এই মুহূর্তে তিনটি—খাদ্যাভাব, অর্থাভাব, সুচিকিৎসা তথা স্বাস্থ্যসেবার অভাব।

এ তিনটি সমস্যা সামনে রেখে অবিলম্বে সমন্বিত ত্রাণব্যবস্থা সচল করা দরকার এবং তা তত দিন চালু রাখা দরকার, যত দিন না অবস্থা স্বাভাবিক হয়। প্রসঙ্গত একটি কথা বলি, একটি সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী ত্রাণমন্ত্রীকে সরেজমিনে গিয়ে দুর্গত এলাকার পরিস্থিতি অনুধাবনের জন্য এবং ত্রাণকাজ পরিদর্শনের জন্য দুর্গত এলাকায় যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

আমাদের প্রশ্ন, অবস্থা যেখানে সার্বিকভাবে বিপজ্জনক এবং দুর্গত এলাকা ঘোষণার মতো, সে ক্ষেত্রে ত্রাণমন্ত্রীর তো পরিস্থিতি অর্থাৎ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ও ত্রাণের প্রয়োজনীয় মাত্রা সম্পর্কে ধারণা পেতে ঘটনার শুরুতেই সেখানে যাওয়া দরকার ছিল। দরকার ছিল একাধিকবার যাওয়া। তিনি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করবেন কেন?

বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ এ কারণে যে আমাদের দেশে বরাবর দেখা যায়, যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে উপদ্রুত এলাকায় ত্রাণ বিতরণে ঘাটতি থাকে, ত্রাণকাজে প্রায়ই দুর্নীতির প্রকাশ লক্ষ করা যায়। তাই উপদ্রুত এলাকার হতভাগ্য মানুষের সহায়তাকাজে নিবিড় পর্যবেক্ষণের প্রয়োজন পড়ে। তা সে ত্রাণ সরকারি বা বেসরকারি যেমনই হোক। এটাই বাস্তবতা।

তা ছাড়া এ প্রসঙ্গে আরো একটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। তা হলো ত্রাণ ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার কাজ যথাযথভাবে পালিত হচ্ছে কি না তা নিশ্চিত করা। কারণ এ সময় সবার পক্ষে দূর কেন্দ্রে গিয়ে ত্রাণ সংগ্রহ করা সম্ভব হয় না। বিশেষ করে যাতায়াতব্যবস্থার সমস্যার কারণে। কাজেই ত্রাণসামগ্রী যথাস্থানে পৌঁছানো না হলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে অনাহারে মৃত্যু অবধারিত।

তিন.

বাংলাদেশের মানুষ প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে জীবন যাপন করতে অভ্যস্ত সন্দেহ নেই। তবে মৃত্যুও এ ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে তাদের সঙ্গী হয়, সে সম্পর্কেও সন্দেহের কোনো কারণে নেই। আর এটাও এ দেশে বরাবরের জন্য সত্য যে প্রাকৃতিক দুর্যোগে বা যেকোনো প্রকার গুরুতর আপদে-বিপদে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ঘাটতি থাকে।

সে ঘাটতি শুধু রাজনৈতিক পর্যায়ে বা মন্ত্রী পর্যায়ে তা-ই নয়, প্রশাসনের নানা স্তরে তা বিশেষভাবে লক্ষ করা যায়। অবশ্য ব্যক্তিক্রম বাদ দিয়েই এমন কথা বলা যেতে পারে। যেমন—জেলা শহরে বা উপজেলা শহরে বসে নিম্ন স্তরের কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ ও প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রীর পরিমাণ নির্ধারণ বাংলাদেশে অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গেছে।

অতি সম্প্রতি দু-একজন সাংবাদিকের প্রতিবেদনে তেমন পরিস্থিতি লক্ষ করে অবাক হয়েছি। আমাদের সমাজে মানবিক চেতনার কিছুটা ঘাটতি থাকলেও মাঝেমধ্যে বিশেষ বিশেষ মারাত্মক দুর্ঘটনায় তার ব্যতিক্রম দেখা যায়। যেমন—রানা প্লাজার দুর্ঘটনায় সাধারণ মানুষের, শিক্ষিত এক শ্রেণির তরুণদের মধ্যে মানবিক চেতনাধৃত সাহায্য তৎপরতার প্রকাশ দেখা গিয়েছিল।

কিন্তু বর্তমান হাওরাঞ্চলের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও ব্যাপক জনসংখ্যা দুর্গতি রানা প্লাজার দুর্ঘটনার চেয়ে পরিমাপে অনেকটাই বেশি এবং তা ব্যাপক চরিত্রের। কিন্তু তা সত্ত্বেও হাওরাঞ্চলের বিপন্ন মানুষের—সেখানকার নর-নারী ও শিশুদের রক্ষায় সমাজে তেমন মানবিক উদ্যোগের, তৎপরতার প্রকাশ ততটা দেখা যায়নি। কেন? ঘটনা রাজধানী শহরের বাইরে কিছুটা দুর্গম অঞ্চলে বলে?

এর অর্থ দাঁড়ায় একটাই। সহজসাধ্য মানবিক তৎপরতায় আমরা যতটা কৃতিত্ব বা গৌরব অর্জনে আগ্রহী, শ্রমসাধ্য কাজে ততটা তৎপর নই। তখন মানবিক চেতনা কিছুটা হলেও থমকে দাঁড়ায়, কিছুটা পিছু হটে। নিঃস্বার্থ মানবিক চেতনা বা স্বার্থনির্ভর মানবিকতা, উভয় ক্ষেত্রেই এমন কথা বলা চলে। রানা প্লাজা বা অনুরূপ পোশাক কারখানার দুর্ঘটনা ও উপকূলীয় দুর্যোগ বা সম্প্রতি সংঘটিত হাওরাঞ্চলের ব্যাপক মানবিক দুর্গতি—তেমন উদাহরণই আমাদের সামনে তুলে ধরে।

এর আগে সাংবাদিক প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করেছি। সেই সুবাদেই বলি, এ ব্যাপারে আমাদের প্রশাসন (আবারও বলি, কিছু ব্যতিক্রম বাদে) একই ধারায় চলতে অভ্যস্ত। শহরের সার্কিট হাউসে বা ডাকবাংলোয় বসে অধস্তন কর্মকর্তাদের নিয়ে বাস্তবতাবহির্ভূত হিসাব-নিকাশ করে ত্রাণব্যবস্থা নির্ধারণ ও পরিচালনাই দেখা যায় তাদের ত্রাণ তৎপরতার প্রধান বিষয় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এমন তৎপরতা তো আদর্শ পর্যায়ে পড়ে না।

তাতে ক্ষতি হয় সাধারণ মানুষের, তাদের জীবন রক্ষার লড়াইয়ের। প্রশাসন সে লড়াইয়ের সহায়ক শক্তি ও আদর্শ সঙ্গী হওয়ার কথা। কিন্তু সেখানেও যদি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের বা নির্দেশের প্রয়োজন পড়ে, তবে তা নিঃসন্দেহ দুঃখজনক, দুর্ভাগ্যজনক তো বটেই। হাওরবাসীর গভীর এ মানবিক সংকটে সমাজের মানবিক শক্তিই বা কতটা উদীপ্ত হয়েছে, কতটা তৎপরতার প্রকাশ ঘটিয়েছে, সে তথ্যও বিচারের বিষয়।

এ দেশে কর্মরত কয়েক হাজার এনজিওর মধ্যে প্রধান প্রধান সংস্থাগুলো এ মানবিক সংকটে, দুর্গতিতে কতটা তৎপর হয়েছে জানি না, অন্তত তেমন সংবাদ তথ্য পত্রিকায় চোখে পড়েনি। এ পরিস্থিতিতে সরকারের প্রতি বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আমাদের অনুরোধ, অবিলম্বে হাওরবাসীর দুর্গতি মোচনে, দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে তাত্ক্ষণিক ও দীর্ঘস্থায়ী বাস্তব কর্মসূচি গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে কর্মিষ্ঠ কর্মকর্তাদের নিয়ে ‘সেল’ গঠনের জন্য।

সাধারণভাবে আমলাতন্ত্রের কর্মতৎপরতা নিয়ে সাধারণ মানুষের যে অভিযোগ তার বাস্তব ভিত্তি অনস্বীকার্য। তাই জনগণের দুর্যোগ-দুর্ভোগে আমলাতন্ত্রের নির্ভরযোগ্য অংশকেই তৎপর করার ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। না হলে ত্রাণ নামেই ত্রাণ হয়ে থাকবে। তা ছাড়া বিশেষ কিছু তাত্ক্ষণিক ব্যবস্থাও নেওয়া দরকার। যেমন—ফসল হারানো কৃষকদেরও ‘অবাধে মাছ ধরার সুযোগ দেওয়া’ দরকার। আর বিশেষ দরকার দুস্থ-দরিদ্রদের অর্থনৈতিক পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা। দরকার ভবিষ্যতে অনুরূপ প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিহত করতে পরিকল্পনা গ্রহণ ও তা বাস্তবায়ন। আর যেটা সবচেয়ে জরুরি তা হলো, বাঁধ ভাঙার জন্য দায়ী কর্মকর্তাদের যথাযথ শাস্তিবিধান। কারণ বিষয়টা বাংলাদেশে জাতীয় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থায় সামাজিক সুস্থতা আনতে কঠোর ব্যবস্থার কোনো বিকল্প নেই। প্রসঙ্গত বলি, দুর্যোগের পরিণামে দেশের সর্বত্র সংশ্লিষ্ট মূল্যবৃদ্ধি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের চিরাচরিত দুর্নীতি। এবার চাল নিয়ে তা চলবে, এরই মধ্যে তেমন আলামত দেখা যাচ্ছে। এ বিষয়ে সরকারকে কঠোর নীতি গ্রহণে আহ্বান জানাই।