Thu. May 1st, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলা বাজার২৪।। বুধবার , ১৭ মে, ২০১৭:20
গাজীউল হাসান খান
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভিশন ২০২১ আর বিএনপির সদ্যঘোষিত ভিশন ২০৩০ আর্থ-রাজনৈতিক কর্মপরিকল্পনা—উভয়ই দেশ ও জনগণের কল্যাণের উদ্দেশ্যেই প্রণীত হয়েছে। সুতরাং একটি অন্যটির সম্পূরক হলেই বা জনগণের লাভ ছাড়া ক্ষতি কী? রোমা রলাঁ বলেছেন, জীবনে যদি অগ্রগতি না থাকে, সে জীবন অবাঞ্ছিত। মানুষের বিপদ ও দুঃখ-দুর্দশা যেখানে কিছুমাত্র লাঘব করা হয়, অবস্থার উন্নতি করা হয়, শুধু সেখানেই গণতন্ত্র বিকাশ লাভের সুযোগ পায়। গণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল গঠন ও তাদের কর্মকাণ্ডের মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে জনসেবা। আর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা হলো পারস্পরিক মর্যাদা রক্ষার এক তীর্থভূমি। কোনো দলের কোনো কর্মসূচি কিংবা কর্মপরিকল্পনা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের গঠনমূলক সমালোচনা হতে পারে কিন্তু কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া কাম্য হতে পারে না। তাতে দেশে একটি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে। বিরোধী দলগুলোর দায়িত্বশীল ও কার্যকর ভূমিকা না থাকলে স্বৈরাচার, অপশাসন ও বহুমুখী দুর্নীতি সমাজকে ক্রমে ক্রমে গ্রাস করে ফেলতে পারে। তাতে সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি চরম অবহেলায় হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। আমাদের দেশে যে কয়টি রাজনৈতিক দল বর্তমানে ক্রিয়াশীল রয়েছে, তাদের মধ্যে জামায়াতে ইসলামী কিংবা তেমন আর দু-একটি প্রান্তিক দল ছাড়া সবই যেন মুদ্রার এপিঠ আর ওপিঠ। ক্ষমতা লাভের জন্য তারা দিল্লি থেকে পেইচিং ও ওয়াশিংটন পর্যন্ত নির্দ্বিধায় সবার দ্বারস্থ হতে পারে। তাদের জাতীয়তাবাদ, ধর্মীয় মূল্যবোধ কিংবা সামাজিক ন্যায়বিচার বা অধিকার প্রতিষ্ঠার ধ্যান-ধারণা কোথাও কোনো প্রতিকূলতা বা বাধার সৃষ্টি করে না। তবে এ ক্ষেত্রে নেতৃত্বের প্রশ্নে সবার কাছে গ্রহণযোগ্যতা একটি উল্লেখযোগ্য বিশেষ কৌশল ছাড়া আর কিছুই নয়।

সরকারি কঠোরতার কারণে বিএনপি বিগত দিনগুলোতে মাঠপর্যায়ের রাজনীতিতে অনেকটা অনুপস্থিত থাকতে বাধ্য হয়েছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে। নেতাকর্মীরা এখনো অনেকে নিজের এলাকায় যান না এবং নিজের ঘরবাড়িতে বাস করেন না। তার অন্যতম প্রধান কারণ রাজনৈতিক হামলা-মামলা ও পুলিশি অত্যাচার। এটি বিএনপি নেতাকর্মীদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ। তার পাশাপাশি চিন্তাচেতনা কিংবা তাত্ত্বিক দিক থেকে বিএনপির সঙ্গে সম্পৃক্ত বুদ্ধিজীবীরাও অনেকটা নিষ্ক্রিয় ছিলেন বলে প্রতিভাত হয়েছে। জেল-জুলুমের ভয়ে নিজেদের পরিচয় আপাতত গোপন কিংবা চাপা দিয়ে রাখার কৌশল অবলম্বন করেছিলেন কিছু বুদ্ধিজীবী মানুষ। মাঠপর্যায়ের রাজনীতিতে অনুপস্থিত বিএনপির তাই হয়তো জনসমক্ষে আসার জন্য একটি ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনার প্রয়োজন ছিল। বহু দ্বিধাদ্বন্দ্বের আবর্তে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করার পর শেষ পর্যন্ত ভিশন ২০৩০ বলে একটি ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া। তার জন্য হয়তো বা বিএনপি সমর্থক বুদ্ধিজীবীদের অনেক কাঠখড়ও পোড়াতে হয়েছে। কারণ বিএনপির পুরনো ধারার রাজনীতিকদের এক ধরনের নিষ্ক্রিয়তা ও দলীয় প্রধানের মুখের দিকে তাকিয়ে বসে থাকার একটি সুবিধাবাদী চরিত্র রয়েছে। আর অন্য একটি অংশ রয়েছে যাদের কোনো তাত্ত্বিক জ্ঞান-গরিমা নেই। তারা নিজের নেতাদের বাইরে কাউকে সহ্য করতে পারে না। অথচ তারা গণসংগঠন করতে এসেছে। সেসব কারণে বেশ কিছুটা বিলম্বে হলেও বিএনপি তার ভিশন ২০৩০ কর্মপরিকল্পনা ঘোষণার মধ্য দিয়ে একটি অদ্ভুত রাজনৈতিক স্থবিরতা থেকে শেষ পর্যন্ত বেরিয়ে আসার কৌশল দেখাতে পেরেছে। অনেকে এটিকে অনেকভাবে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করেছেন। কেউ কেউ বলেছেন, এটি বিএনপির একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার একটি পূর্বলক্ষণ। ভিশন ২০৩০ বিএনপির একটি নির্বাচনী ইশতেহারের মতোই। তবে এটি যে একটি শুভ সূচনা তাতে কোনো সন্দেহ নেই এবং তাকে অনেকেই সাধুবাদ জানিয়েছেন।

বিশ্বের অগ্রসরমাণ বিভিন্ন বহুদলীয় গণতান্ত্রিক আন্দোলনের দেশেও বিভিন্ন সময়োপযোগী রাজনৈতিক কর্মসূচি দেওয়ার বিকল্প আর কিই-বা আছে। সে কর্মসূচি সব সময় গণ-আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে সূচিত না হয়ে তা জনমত গড়ে তোলার লক্ষ্যেও ঘোষিত হতে পারে। বিরোধী দলহীন একদলীয় শাসনব্যবস্থায় গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ কতটুকু বিকাশ লাভ করতে পারে, তা নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। গণতান্ত্রিক সরকার ও রাষ্ট্রব্যবস্থায় দেশে একাধিক দল থাকতেই হবে। তাতে হিংসা, বিদ্বেষ কিংবা অসহনশীল হয়ে ওঠার কোনো যৌক্তিকতা নেই। এ ব্যাপারে প্রাচ্যের রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি জনপ্রিয় কথা চালু রয়েছে—‘শত ফুল ফুটতে দাও, শত চিন্তা বিকাশ লাভ করুক’। তাতে সমাজ, রাষ্ট্র কিংবা বৃহত্তরভাবে জনগণ উপকৃত হবে। গণতান্ত্রিক চিন্তাচেতনা ও মূল্যবোধ আরো শক্তিশালী হবে। সাধারণ মানুষ শিক্ষিত, সচেতন ও সহনশীল হয়ে উঠবে। সুতরাং আদর্শনিষ্ঠ গণতান্ত্রিক সমাজে এর চেয়ে উত্কৃষ্ট বিকল্প আর কী থাকতে পারে, যা দেশের রাজনীতিসচেতন মানুষের জ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রে একটি কাঙ্ক্ষিত সৃষ্টিশীল ধারার সূচনা করতে পারে। পেশিশক্তি ও কালো টাকার জোরে যেমন গণতন্ত্র টিকিয়ে রাখা যায় না, তেমনি ক্ষমতাও বেশি দিন ধরে রাখা যায় না। তা ছাড়া অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য চাই দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন ও সুশাসন। মেধাহীন পেশিশক্তি দিয়ে যেমন গঠনশীল রাজনীতি ও দুর্নীতিমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়, তেমনি সম্ভব নয় জনগণের অংশীদারি নিশ্চিত করা। সেদিন কালের কণ্ঠে প্রকাশিত একটি সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের রাজনীতির বিপরীতে এক নতুন ধারার রাজনৈতিক সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার কথা বলেছেন বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া। চেয়েছেন সুনীতি, সুশাসন ও সু-সরকারের সমন্বয়। দেশব্যাপী সাম্প্রতিক সহিংস আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে সে বক্তব্য শান্তিকামী মানুষের মনে কিছু নতুন আশার সঞ্চার করেছে। কারণ দেশের তরুণ জনগোষ্ঠীর ব্যাপক কর্মসংস্থানের জন্য চাই বিশাল উন্নয়ন ও উৎপাদন কার্যক্রমকে এগিয়ে নেওয়া। তার জন্য অবশ্যই দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রয়োজন। অন্যান্যের মধ্যে খালেদা জিয়া ঘোষিত ভিশন ২০৩০-এর একটি অন্যতম প্রধান বিষয় হচ্ছে বিএনপি ভবিষ্যতে ক্ষমতায় গেলে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নাতীত ক্ষমতাকে কেটে সমন্বয় করা। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর ব্যাপক প্রশাসনিক ক্ষমতা দেশে স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের সূত্রপাত করেছে বলে তাঁর ধারণা। খালেদা জিয়ার সে উক্তির সঙ্গে দেশের রাজনীতিসচেতন অনেক মানুষই একমত পোষণ করেছেন। দলের গত কাউন্সিল অধিবেশনেও খালেদা জিয়া সে কথা উল্লেখ করেছিলেন। বলেছিলেন, তাঁরা ক্ষমতায় গেলে প্রধানমন্ত্রীর প্রশাসনিক ক্ষমতায় সমন্বয় ঘটাবেন। তা ছাড়া বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য একটি বিচার বিভাগীয় কাউন্সিল গঠন করবেন। জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতি দমনকল্পে নেবেন বিশেষ ব্যবস্থা। খালেদা জিয়া দেশের বর্তমান বিকাশমান তথ্য-প্রযুক্তি খাতকে আরো অনেক দূর এগিয়ে নেবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন এবং ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় পাঁচ হাজার মার্কিন ডলারে উন্নীত করার কথাও বিশেষ জোর দিয়ে উল্লেখ করেছেন।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বিএনপি নেত্রী ঘোষিত রূপকল্প ২০৩০ বা কর্মপরিকল্পনার কঠোর সমালোচনা করেছেন। তাঁরা নিজ দলের পক্ষে তাঁদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেছেন, আওয়ামী লীগ বহু আগেই তাদের ভিশন ২০২১ বা কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। বিএনপির রূপকল্পে তাদের উন্নয়ন কর্মসূচি বা লক্ষ্যের অনুকরণ বা অনুরণন ঘটেছে। আওয়ামী লীগ সরকার বিএনপির নির্ধারিত সময়ের বহু আগেই বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করতে সক্ষম হবে। তা ছাড়া তথ্য-প্রযুক্তিসহ বেশ কয়েকটি খাত এরই মধ্যে রপ্তানি খাতে পরিণত হয়েছে। তাদের নেতৃত্বে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আশাতীত সাফল্য অর্জন করবে বলে আওয়ামী লীগের নেতারা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। সেটি দেশবাসীর জন্য অবশ্যই একটি আনন্দের বার্তা। দেশের উন্নয়নকামী মানুষ এ ধরনের প্রতিযোগিতামূলক সাফল্যের খবরই শুনতে চায়। প্রতিযোগিতামূলক ক্ষমতার গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে কেউ কারো জন্য বসে থাকে না। তবু আশার কথা যে অত্যন্ত দেরি হলেও সব পিছুটান কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত বিএনপি এক অচলায়তন কাটিয়ে বেরিয়ে আসতে পেরেছে। একটি অবাধ ও কারচুপিমুক্ত সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পর্যায়ে চাপ সৃষ্টি করে যাচ্ছে। দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য বিএনপি যত রূপকল্প ও কর্মপরিকল্পনাই ঘোষণা করুক না কেন, ক্ষমতায় যেতে না পারলে কোনো কিছুই কার্যকর করা যাবে না। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য চাই নির্বাচনে অংশগ্রহণ। বারবার নির্বাচন বর্জন করে বিএনপির কোনো স্বপ্নই বাস্তবায়িত হবে না। এখন একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করাই হবে বিএনপির অস্তিত্ব রক্ষার জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এ কথা ঠিক, বিএনপির উচ্চ পর্যায়ের অনেক নেতার জন্যই এক চরম অনিশ্চিত অবস্থা বিরাজ করছে এখন। আগামী নির্বাচনের আগে তাঁদের অনেককেই হয়তো কারা অন্তরীণ হতে হবে বিভিন্ন মামলার কারণে।

পেশিশক্তি, কালো টাকার প্রভাব, নেতাদের সীমাহীন দুর্নীতি ও সর্বোপরি জঙ্গিবাদ আমাদের সংসদীয় রাজনীতির ভবিষ্যেক অত্যন্ত বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিয়েছে। বাংলাদেশে গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে দেশ-বিদেশে এখন অনেক কথাই বলা হচ্ছে। আমরা ভবিষ্যতে সুযোগ পেলে প্রধানমন্ত্রীর প্রশাসনিক ক্ষমতার সমন্বয় সাধনের কথা বলি অথচ নিজেদের দলে অভ্যন্তরীণভাবে গণতন্ত্রের চর্চা শক্তিশালী করার কথা বলি না। দল থেকে দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসী নেতাকর্মীদের বহিষ্কারের কথা জোর দিয়ে বলতে পারি না। দলীয় কর্মীরা এখনো গোপন ভোটে তাদের নেতা নির্বাচন করতে পারে না। বিভিন্ন পর্যায়ে দলের প্রার্থী কিংবা নেতা নির্বাচন করা হয় কেন্দ্র থেকে। নির্বাচন আসার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয়ে যায় মনোনয়ন বাণিজ্য। যে যত রূপকথাই ঘোষণা করুন না কেন, উল্লিখিত বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে না পারলে বাংলাদেশে কখনোই প্রকৃত অর্থে গণতন্ত্রের সুবাতাস বইবে না। দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি আরো বেশি পেশিশক্তি ও কালো টাকার মালিক তৈরি করবে। বর্তমান অবস্থা চলতে থাকলে খুব তাড়াতাড়িই তাদের হাতে দেশের নেতৃত্ব চলে যেতে পারে। যে যত কথাই বলুন না কেন, সোনার মানুষ তৈরি করতে না পারলে কোনো দিনই প্রকৃত অর্থে সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। দুর্নীতিমুক্ত, শিক্ষিত এবং নীতি ও নৈতিকতার দিক থেকে আদর্শ মানুষ তৈরি না করতে পারলে এ রক্তস্নাত প্রিয় মাতৃভূমিকে কার হাতে তুলে দিয়ে যাব আমরা? এসব প্রশ্ন এখন বাংলাদেশের ঘরে ঘরেই আলোচিত হচ্ছে। খালেদা জিয়ার ভিশন ২০৩০ কিংবা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন ২০২১-এর মধ্যে নীতি-নৈতিকতাসম্পন্ন দুর্নীতিমুক্ত আদর্শ মানুষ তৈরির কোনো প্রত্যয় ব্যক্ত হয়নি। দলে অভ্যন্তরীণভাবে গণতন্ত্রের চর্চা নিশ্চিত করা কিংবা দল থেকে দুর্নীতিবাজ নেতাকর্মীদের বহিষ্কারের কোনো প্রত্যয় নেই। হয়তো বা সে কারণেই নেতা-নেত্রীদের ডাকে আগের মতো দেশব্যাপী এখন আর গণ-আন্দোলন গড়ে ওঠে না। রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি জনগণের বিশ্বাসযোগ্যতা বহুলাংশে কমে গেছে এখন। জাতীয় সংসদে অর্ধেকের বেশি সদস্য বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। আবার তাঁরাই পাচ্ছেন বিনা শুল্কে বিলাসবহুল গাড়ি, আবাসিক প্লট, ফ্ল্যাট ও ব্যবসা-বাণিজ্য। এ অবস্থায় বলা হয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা। যেখানে দেশপ্রেমই নেই সেখানে এসব কথা অবান্তর মনে হতেই পারে। তবু বিএনপিকে সাধুবাদ জানাই এক অসহনীয় স্থবিরতা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য। তবে বিএনপিকে নিয়েই খালেদা জিয়ার সর্বাগ্রে একটি রূপকল্প ঘোষণা করা উচিত ছিল। এ দেশের সবচেয়ে প্রাচীন দল আওয়ামী লীগসহ সবার ক্ষেত্রে একই কথা প্রযোজ্য। এখন সব দলে প্রয়োজন একটি ব্যাপক শুদ্ধি অভিযানের।

লেখক : বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সাবেক প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক