আবুল কাসেম ফজলুল হক । খােলা বাজার২৪।। বুধবার, ২৪ মে, ২০১৭: দেশের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে কিছু সরকারি লোক ছাড়া শিক্ষাসংশ্লিষ্ট সবার মনেই দারুণ যন্ত্রণা আছে। চলমান ব্যবস্থায় সবাই বোঝে, কিংবা বুঝতে বাধ্য হয় যে শিক্ষা মানে পরীক্ষায় জিপিএ ফাইভ পাওয়ার প্রস্তুতি। ধারণা চালু হয়ে গেছে যে পিএসসি, জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি—এই চারটি পরীক্ষায় জিপিএ ফাইভ পেলে ছেলে-মেয়েরা সৃজনশীল বা Creative হয়। দেশে গত কয়েক বছরে হয়তো পাঁচ-ছয় লাখ সৃজনশীল বা Creative ব্যক্তি তৈরি হয়েছে। এই ব্যবস্থা চালু থাকলে ক্রমে সৃজনশীল বা Creative লোকের সংখ্যা কোটি কোটিতে পৌঁছে যাবে। এত বিরাট আয়োজনের মধ্যে, এত ঢাকঢোলের আওয়াজের মধ্যেও কিছু সরকারি লোক ছাড়া শিক্ষাসংশ্লিষ্ট বাকি সবার মনে দারুণ যন্ত্রণা। শিক্ষার নামে কী চলছে?
Cambridge Handbook of Creativity-গ্রন্থে পত্বধঃরাব বা সৃজনশীল ব্যক্তির পরিচয় দিতে গিয়ে বলা হয়েছে, The Creative person is both more primitive and more cultured, more destructive and more constructive, occasionally crazier and yet adamently saner than the average person. সৃজনশীল বা পত্বধঃরাব ব্যক্তিদের আরো অনেক বৈশিষ্ট্যের কথা বইটিতে পাওয়া যায়। বইটিতে আবিষ্কারক, উদ্ভাবক, মহামানব, দার্শনিক, বৈজ্ঞানিক, সাহিত্যিক, শিল্পী, সমাজসংগঠক, ধর্মপ্রবর্তক ও আদর্শ প্রতিষ্ঠাতাদের বলা হয়েছে creative বা সৃজনশীল। Oxford Handbook of Creativity-তেও creative person বা সৃজনশীল ব্যক্তি সম্পর্কে এ ধরনের কথাই পাওয়া যায়। ইউরোপ-আমেরিকার বিভিন্ন রাষ্ট্র থেকে ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগে ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত creativity বিষয়ক আরো তিন-চারটি বইতে Creativity সংক্রান্ত এ রকম বক্তব্যই পেয়েছি। ইউরোপ-আমেরিকার কিছু জাতি creativity-র প্রতি খুব আগ্রহী ও শ্রদ্ধাশীল। ক্রিয়েটিভরা অন্তরের তাগিদে কাজ করেন কোনো লাভ-লোভের জন্য নয়। বাংলাদেশের সরকার যখন থেকে creativity নিয়ে আগ্রহী হয়েছে, তার চেয়ে অন্তত ১৫ বছর আগে থেকে আমি creativity নিয়ে অনুসন্ধিত্সু হয়েছিলাম। মনে হয়েছিল আমার যে পতনশীল জাতির উত্থানের জন্য জাতির ভেতরে creativity অপরিহার্য। আমি উপলব্ধি করেছিলাম যে বাংলাদেশে জ্ঞান-বিজ্ঞান ও শিল্প-সাহিত্যের ক্ষেত্রে, আদর্শ চর্চায় ও রাজনীতিতে সৃজনশীলতা নেই। এটাও আমার ধারণা হয়েছিল যে বাংলা ভাষার দেশে রামমোহন, বিদ্যাসাগর, মধুসূদন, বঙ্কিম, রবীন্দ্রনাথের কালে জগদীশচন্দ্র, প্রফুল্ল চন্দ্র, প্রশান্তচন্দ্র, মেঘানন্দ সাহা, সত্যেন বোসের কালে, রোকেয়া, লুত্ফর রহমান, নজরুল, ওদুদের কালে, সুরেন্দ্রনাথ, বিপিন পাল, চিত্তরঞ্জন, সুভাষ বসুর কালে, শেরেবাংলা, ভাসানী, শেখ মুজিব, তাজউদ্দীনের কালে creativity বা সৃজনশীলতা ছিল। স্বাধীন বাংলাদেশে অবস্থা বদলে গেছে। এখন প্রতিবছর অর্ধ লাখের বেশি সৃজনশীল তৈরি হচ্ছে। বাংলাদেশে বর্তমান শিক্ষানীতি ও শিক্ষাব্যবস্থা যাঁরা প্রবর্তন করেছেন, বাংলাদেশকে creative করে তোলার বড় কোনো অনুপ্রেরণা নিয়ে কি তাঁরা কাজে নেমেছেন? টেলিভিশনের পর্দায় ও দৈনিক পত্রিকার উপসম্পাদকীয় লেখায় কয়েকজন সম্মানিত সরকারদলীয় শিক্ষাবিশেষজ্ঞ প্রায়ই প্রচলিত ব্যবস্থার পক্ষে ওকালতি করে বক্তব্য প্রকাশ করেন। তাঁদের কথা শুনে শিক্ষার্থীদের মনে, অভিভাবকদের মনে, শিক্ষকদের মনে কোনো আশাবাদ কি জাগে? প্রচারমাধ্যম আগে কখনো এত শক্তিশালী ছিল না। প্রচারমাধ্যম এখন প্রচলিত ব্যবস্থার পক্ষে প্রচার দিয়ে সবাইকে মুগ্ধ করে রাখে। দেশে চিন্তাশীলতা ও চিন্তা চর্চা দুর্লভ। যেসব দল ও গোষ্ঠী সরকারের বাইরে সক্রিয়, সরকারের সমালোচনা করে, সরকারি নীতি ও কার্যক্রমের বিরোধিতা করে, লোকে তাদের অপদার্থ বলে থাকে। তাদের দিয়ে ভালো কিছু হবে—এমন আশা কেউ করেন বলে মনে হয় না। তারা নিজেরাও কি নিজেদের ওপর আস্থাশীল?
সরকার প্রচলিত ব্যবস্থাকে রক্ষা করার জন্য শিক্ষাব্যবস্থার ভেতরে কিছু পরিবর্তন করার চেষ্টা করছে। প্রচারমাধ্যমে দেখা গেল যে প্রাথমিক শিক্ষা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত করার সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছে। এটা ভালো কাজ। শুধু স্থগিত নয়, বাতিল করতে হবে। পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির পাবলিক পরীক্ষা বাতিল করা দরকার। কথিত সৃজনশীল পরীক্ষা পদ্ধতি বাতিল করে কল্যাণকর নতুন পদ্ধতি প্রবর্তন করা দরকার। ইংলিশ ভার্সন বাতিল করতে হবে। এমনি আরো কিছু বিষয় আছে সেগুলোও পরিবর্তন করা দরকার। আমি দেড় বছর ধরে অবিলম্বে সেগুলোর পরিবর্তন সাধনের কথা নানাভাবে লিখে ও বলে সবার কাছে আবেদন জানিয়ে আসছি। সরকার কি সেগুলো বিবেচনা করবে এবং জনস্বার্থে সিদ্ধান্ত নেবে? আমার তো মনে হয়, এসব করলে সরকারের ভোট বাড়বে। অবশ্য ভোটাভুটি যেভাবে চলে আসছে, তার অনেক কিছুই আমি বুঝি না। একটা ব্যাপার বুঝতে পারি যে লোকে এখন গণতন্ত্রের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। ভোটাভুটিতেও লোকের উৎসাহ নষ্ট হয়ে গেছে। আগের মতো হুজুগ তৈরি করা এখন কঠিন হয়ে পড়বে। বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন জমে উঠছে না। তবে টাকার প্রতি লোভ বেড়েছে। টাকাওয়ালারা প্রায় সব পারে। পেশিশক্তিকে লোকে এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি মান্য করে। সমাজে ক্ষতি করার শক্তি যার যত বেশি, তার প্রভাব-প্রতিপত্তি তত বেশি। মানুষের কল্যাণ করার শক্তি এ সমাজে কোনো শক্তি বলেই স্বীকৃতি পায় না। রাজনীতিতে অকার্যকর ভাষার ব্যবহার বেড়ে চলেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত বাংলাদেশে ক্ষমতার উত্থান-পতন নিয়ে ভীষণভাবে ব্যস্ত।
সরকার, সরকারি দল নিজের স্বার্থে চিন্তা ও কাজ করে। সর্বজনীন কল্যাণের চিন্তা দুর্লভ। সরকার, সরকারি দল যাতে করে দীর্ঘকাল ক্ষমতায় থাকতে পারে তা মনে রেখেই তো শিক্ষানীতি ও শিক্ষাব্যবস্থা পুনর্গঠন করে থাকে। এর অন্যথা আশা করা বোকামি। সরকার ও সরকারি দল শুধু একবার ভোটে জিতেই সন্তুষ্ট নয়, ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী, পারলে চিরস্থায়ী করতে চায়।
বিপ্লবপূর্ব রাশিয়ায়, জারতন্ত্রের কালে লিও তলস্তয় (১৮২৮-১৯১০) লিখেছিলেন, The strength of the government lies in the ignorance of the people, and the government knows this and will therefore always oppose true enlightenment. It is time to realise this, and it is most undesirable to let the government advance while it is spreading darkness and pretend to be busy with the enlightenment of the people. It is daring this now by means of all sorts of pseudo-educational establishment which it controls : schools, high schools, universities, academies and all kinds of committees and congresses. But good is good and enlightenment is enlightenment only when it is quite good and quite enlightened. I am extremely sorry when I see valuable, disinterested and self-sacrificing efforts spent fruitlessly. It is strange to see good wise people spending their strength in a struggle against the government, but carrying on the struggle on the basis of whatever laws the government itself likes to make. It seems to me that it is now especially important to do what is right quietly and persistently, not only without asking permission from government, but consciously avoiding its participator.
তলস্তয়ের দেশকাল থেকে আমাদের দেশকাল ভিন্ন। প্রতিটি সরকার শিক্ষানীতি ও শিক্ষাব্যবস্থাকে রূপ দেয় তার রাজনৈতিক চরিত্র অনুযায়ী। কোনো সরকার কি এমন শিক্ষাব্যবস্থা চলতে দিতে পারে, যাতে শিক্ষার্থীদের চোখ খুলে যাবে এবং প্রচলিত ব্যবস্থার পরিবর্তনের জন্য চেষ্টা করবে? একালে দুর্বল রাষ্ট্রগুলোতে সরকারের পেছনে আছে বিশ্বব্যাংক, ইউনেসকো, ইউনিসেফ, যুক্তরাষ্ট্র ইত্যাদি সাম্রাজ্যবাদী শক্তি। তাদের স্বার্থ অনুযায়ীই শিক্ষাব্যবস্থা গঠিত ও পুনর্গঠিত হবে—এটাই স্বাভাবিক। তবে ব্যতিক্রম ঘটবে যদি জনগণের গণতন্ত্র, জনগণের সরকার ও জনগণের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়। জনগণ জাগ্রত হলে, ন্যায় প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় হলে অন্য রকম হতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশে ও গোটা পৃথিবীতে জনগণ এখন ঘুমন্ত—জাগ্রত নয়। সহজে জনগণের ঘুম ভাঙবে? জনগণ যদি ঘুমিয়েই থাকে তাহলে যে ধারায় চলছে সে ধারাতেই চলতে থাকবে। এ দেশে পর্যায়ক্রমিক পরিবর্তন শান্তিপূর্ণ উপায়ে হয় না; হঠাৎ জনগণ বিস্ফোরণে ফেটে পড়ে, রক্তক্ষয়ী গণ-অভ্যুত্থান দেখা দেয়। সে রকম কিছু হওয়ার সম্ভাবনাও এখন দেখা যায় না। জনগণ গভীর নিদ্রায় মগ্ন। গতানুগতিক ধারায় শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য শিক্ষাবিশেষজ্ঞ ও গবেষকদের নিয়ে কিছু ব্যয়বহুল প্রকল্প সব সময় চালু থাকে, এখনো আছে। এর মধ্যে বেশ বড় কিছু নতুন প্রকল্পের খবর প্রচারমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। খবরে প্রকাশ, ‘মাধ্যমিকে এক লাখ ২৮ হাজার কোটি টাকার কর্মসূচি আসছে। ’ খবরে বলা হয়, ‘মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকার ১৪টি প্রকল্প চলছে। এর মধ্যে মাধ্যমিক শিক্ষার উন্নয়নে চলছে ৯টি। এগুলোর কোনোটি মোটামুটি চলছে, কোনোটি ভালো চলছে, কোনোটি নিয়ে আছে বিতর্ক। এর মধ্যেই মাধ্যমিক শিক্ষার উন্নয়নে প্রায় এক লাখ ২৮ হাজার কোটি টাকার বড় একটি কর্মসূচি হাতে নিচ্ছে সরকার। পাঁচ বছরমেয়াদি এই কর্মসূচিতে সরকারের পাশাপাশি বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ইউনিসেফ, ব্রিটিশ কাউন্সিলসহ কয়েকটি বিদেশি সংস্থা আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দেবে। ’ খবরে আরো বলা হয়, ‘বর্তমানে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি (পিইডিপি) নামে একটি বড় কর্মসূচি চলছে। এর মোট ব্যয় ৬০ হাজার কোটি টাকা। এই কর্মসূচির আদলেই এখন মাধ্যমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হচ্ছে। ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে এই কর্মসূচি শুরুর সম্ভাবনা আছে। ’ খবরে বলা হয়, ‘বিশ্বব্যাংক বর্তমানে মাধ্যমিকের একটি প্রকল্পে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে। সেটি আগামী জুনে শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু তারা মাধ্যমিক শিক্ষার উন্নয়নের সঙ্গে জড়িত থাকতে চাইছে। এ জন্য শিগগিরই এ কর্মসূচি করতে চাইছে। আর এডিবির সঙ্গে যে কর্মসূচি চলছে সেটি আগামী ডিসেম্বরে শেষ হবে। ’ খবরে বলা হয়, ‘প্রস্তাবিত এই কর্মসূচিতে বিশ্বব্যাংক ৫০০ মিলিয়ন ডলার ও এডিবি ৫০০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দিতে পারে। কর্মসূচির অধিকাংশ টাকাই দেবে সরকার। উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি এই কর্মসূচির মাধ্যমে বেতন-ভাতাও দেওয়া হবে। পর্যায়ক্রমে মাধ্যমিক শিক্ষার উন্নয়নে চলমান প্রকল্পগুলো এর অধীনে চলে আসবে। ’ খবরে প্রকাশ, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, মাধ্যমিক শিক্ষার গুণগত মান বাড়ানোর কর্মসূচি সাজানো হচ্ছে। এ জন্য স্বচ্ছভাবে শিক্ষক নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করা, মাধ্যমিকে ঝরে পড়া রোধ, বিদ্যমান ব্যবস্থাকে আরো স্বচ্ছ ও জবাবদিহি করা, জাতীয় শিক্ষানীতি ঘোষিত প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত করার জন্যও সহায়তা দেওয়া, নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষাক্রমকে উন্নত করা, নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে বিশেষভাবে উত্তরপত্র মূল্যায়ন করা, শ্রেণিকক্ষ, গবেষণাগার, স্যানিটেশনসহ বিভিন্ন ধরনের উপকাঠামোগত উন্নয়ন করা হবে এই কর্মসূচির লক্ষ্য। এ ছাড়া বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগ কমিশন গঠন, শিক্ষার্থীদের বাংলা-ইংরেজি, গণিত-বিজ্ঞান শিক্ষার উন্নয়নসহ আরো কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ’
খবর থেকে বোঝা যাচ্ছে, গতানুগতিক ধারায় শিক্ষানীতি ও শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য বিরাট কর্মযজ্ঞ শুরু হতে যাচ্ছে। এর জন্য অর্থসংস্থানও অসামান্য। খবরে প্রকাশিত এক লাখ ২৮ হাজার কোটি টাকার বাইরেও প্রাথমিক শিক্ষা ও উচ্চশিক্ষার জন্য আরো প্রকল্প গ্রহণ করা হবে এবং আরো অনেক টাকা জোগাড় হবে। এসব নিয়ে এবং দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ও শিক্ষানীতির উন্নয়নের জন্য জাতীয় সংসদে গভীর ও ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা দরকার। কিন্তু তা হয় না। শিক্ষানীতি ও শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে জাতির প্রাণশক্তির অবস্থান। এ জন্য এ নিয়ে আলোচনা সবচেয়ে বেশি দরকার। দরকার চিন্তায় ও কাজে আন্তরিকতা ও সততা। শিক্ষাব্যবস্থা ও শিক্ষানীতি নিয়ে এবং জাতি ও রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে চাই বহুজনের বহু আলোচনা।
সংকটাপন্ন ক্ষয়িষ্ণু পশ্চিমা সভ্যতা-সংস্কৃতি ও সাম্রাজ্যবাদী নীতির অন্ধ অনুসরণে গিয়ে আমরা আমাদের সত্তা হারিয়ে চলেছি। ইউরোপ-আমেরিকায় প্রগতিশীল দর্শন-বিজ্ঞান-প্রযুক্তি আছে, আদর্শ আছে। সেসব আমাদের গ্রহণ করতে হবে আমাদের সন্তানকে সমৃদ্ধ করার জন্য। আর তাদের উপনিবেশবাদী, সাম্রাজ্যবাদী ও ফ্যাসিবাদী চিন্তাধারা ও কর্মনীতি আমাদের পরিহার করে চলতে হবে।
লেখক : চিন্তাবিদ, অধ্যাপক