খােলা বাজার২৪।। রবিবার, ২৮ মে, ২০১৭: ডিজিটালের ছোঁয়ায় বাংলাদেশে দিনে দিনে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাবহার বেড়েই চলেছে। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে বর্তমানে নারীরাও তথ্য প্রযুক্তিতে পিছিয়ে নেই। তারই ধারাবহিকতায় একজন নারী উদ্যোক্তা হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন ময়মনসিংহের জিনিয়া রহমান। বর্তমানে আনন্দ মাল্টিমিডিয়া নামে তিনি একটি ছোট প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন, যেটি এখন সফটওয়্যার ডেভলপমেন্টের কাজ করে ও বাণিজ্যিকভাবে সফটাওয়্যার বিক্রি করে আসছে। অনেক প্রতিকূলতা অতিক্রম করে তাকে এ পর্যায়ে আসতে হয়েছে।
নানা প্রতিকূলতার ভেতর দিয়ে খ্যাতির লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্ট সম্বন্ধে বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, চার বছর পর্যন্ত আমি মানুষকে সফটওয়্যার সম্পর্কে বুঝিয়েছি। এমনকি ফ্রী সফটওয়্যার দিয়েছি। যে সকল প্রতিষ্ঠান এখন আমাকে মাসিক টাকা পে করে, প্রথমিকভাবে আমি তাদেরকে ফ্রী সফটওয়্যার দিয়েছিলাম। তারা আমার তৈরি করা সফটওয়্যার ব্যাবহার করে স্কুলের ফলাফল দিত, বেতন আদায় করতো। একটা সময়ে এর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলে তারা পেমেন্ট দিয়ে সফটওয়্যার ব্যাবহার শুরু করে। এর জন্যে প্রায় পাঁচ বছর ধরে আমাকে চরম প্রতিকূলতা অতিক্রম করতে হয়েছে।
জিনিয়া রহমান বলেন, আমি কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ের ওপর পড়াশোনা করেছি। প্রথমে আমি একটি প্রাইভেট মেডিকেল কলেজে প্রোগ্রামার হিসেবে কাজ শুরু করি। প্রাথমিকভাবে হাসপাতালে অপারেশন সফটাওয়্যার ও প্রেসক্রিপশন সল্যুসন নামে দুইটি সফটওয়্যার তৈরি করি। এবং সেটা পরিপূর্ণভাবে চালু হয়। সেখানে ৫ বছর চাকরি করার পরে আমি যখন মোটামুটি সফটওয়্যার তৈরিতে দক্ষতা অর্জন করলাম তখন আমি এটি একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হিসেবে রূপ দেয়ার চিন্তা করলাম। ২০১০ আনন্দ মাল্টিমিডিয়া নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কাজ শুরু করি এবং সেটি ২০১১ সালে রেজিষ্ট্রেশন করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ময়মনসিংহ তখন প্রযুক্তিতে একেবারেই অজ্ঞ ছিল। টাকা দিয়ে সফটওয়্যার কিনতে হয় এধরনের বিষয় তখন চিন্তাও করা যেত না। প্রথমে আমার জমানো কিছু টাকা দিয়ে প্রাথমিকভাবে কাজ শুরু করি। সফটাওয়্যার ক্লাউড দিতে অনেক বড় শক্তিশালী সার্ভার প্রয়োজন, অনেক জনবল দরকার। যেমন, আমি যখন সফটওয়্যার ক্লাউড দেই সেখানে একসাথে ৫০টার বেশি ক্লায়েন্ট ইন করানো যায় না। এক্ষেত্রে বেশি ক্লায়েন্ট ইন করার জন্যে অনেক বেশি শক্তিশালী সার্ভার প্রয়োজন, এখন সরকার থেকে যদি সহযোগিতা করলে আরও বেশি শক্তিশালী সার্ভার ব্যাবহার করতে পারবো। যেখানে একটা সার্ভার থেকে একসাথে ৫০০ ক্লায়েন্ট ম্যানেজ করা যায়।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় আইসিটি বিভাগের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো আইটি সংক্রান্ত ব্যাবসায়ী উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ পাবার ব্যাবস্থা করেছে সরকার। প্রাথমিকভাবে একটি প্রতিযোগিতার মাধ্যমে প্রযুক্তি সংক্রান্ত ব্যাবসায় যুক্ত ৫০ জন উদ্যোক্তাকে নির্বাচিত করা হবে সেখানথেকে ১০ জন উদ্যোক্তা বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে পুঁজি সংগ্রহের সুযোগ পাবেন।