Wed. Apr 23rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলা বাজার২৪।। বুধবার, ২১ জুন, ২০১৭: 77তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় নিউজপোর্টাল বিডিনিউজের স্টাফ রিপোর্টার গোলাম মুজতবা ধ্রুবর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে মানিকগঞ্জে। এ নিয়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। কয়েক দিন আগেই হবিগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয় প্রেস ক্লাব সভাপতি গোলাম মোস্তাফা রফিককে পুলিশ গ্রেফতার করে কারাগারে নিয়েছে। এ আইনটি প্রণয়নের সময় থেকেই আমরা বলে আসছিলাম, এটি গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করবে। এই আইন প্রণয়ন ঠিক হবে না। আইনমন্ত্রী বলেছিলেন, এটি সংশোধন হবে। তাও হয়নি। সংবিধান যেখানে চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা নির্ধারণ করেছে সেখানে এই আইন লাখো শহীদের রক্তে অর্জিত স্বাধীন দেশের সংবিধানের মূল চেতনার কতটা পরিপন্থী তা তখনই বোঝা যায়, যখন মামলার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ আটক করে নিয়ে যায়।
এই আইন ক্ষমতার দম্ভে উন্নাসিক ব্যক্তিদের একদিকে যেমন প্রটেকশন দেবে, তাদের হাতে তুলে দিচ্ছে শক্ত হাতিয়ার; তেমনি সংবাদকর্মীদের জন্য হাত বেঁধে দেওয়ার অস্ত্র ছাড়া কিছু নয়। চোখ খোলা দেখতে পাচ্ছি, কান খোলা শুনতে পাচ্ছি; কিন্তু ৫৭ রশিতে হাত এতটাই শক্তভাবে বাঁধা যে তা লিখতে পারছি না। মাঝে-মধ্যে চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করে, ‘আমার দুই হাতের ৫৭ রশির বাঁধন খুলে দাও। আমাদের লিখতে দাও, বলতে দাও। ’
রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দীন অন্তর্বর্তী শাসনামলে সংবাদপত্র বন্ধ করে দেওয়ার কালো আইনটি বাতিল করে দিলেও মিথ্যা সংবাদ পরিবেশনের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নেওয়ার অনেক পথ এখনো খোলা রয়েছে। একটি গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় যারা বিশ্বাস করেন, তারা মনে করেন গণতন্ত্র ও গণমাধ্যম দুটোই একে অপরের পরিপূরক। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণে যমজ সন্তানের মতো দুটি হাত ধরাধরি করে পথ হাঁটে। এদেশে সামরিক শাসনের জাঁতাকলে মৌলিক ও গণতান্ত্রিক অধিকারহারা মানুষ নির্যাতিত হয়েছে বছরের পর বছর। সেই অধিকারহারা মানুষের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে সুমহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমাদের স্বাধীনতা এসেছে।
’৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পরিবার-পরিজনসহ নৃশংসভাবে হত্যাকা-ের মধ্য দিয়ে যে সামরিক শাসনকালের সূচনা ঘটেছিল সেখানে মানুষের মৌলিক অধিকারই হরণ হয়নি, কালাকানুনের ভিতর দিয়ে মানুষের ন্যায়বিচার পাওয়ার সুযোগটিও রহিত করা হয়েছিল। ইনডেমনিটির মতো কালো আইন করে রাষ্ট্রের মহানায়ক ও পরিবার-পরিজনের বর্বরোচিত হত্যাকা-ের বিচারের পথ রুদ্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সামরিক জমানা ছিল বাংলাদেশি গণতন্ত্রকামী মানুষের জন্য এক অন্ধকার যুগ। জাতির বুকের ওপর ভারী পাথরের মতো চাপ সৃষ্টি করা হয়েছিল। মানুষ বুক ভরে শ্বাস নিতে পারেনি। কণ্ঠ ছেড়ে কথা বলতে পারেনি। কিন্তু একটি ¯্রােতস্বিনী নদী যেমন তার চলার পথ করে নেয়, এদেশের মানুষ তেমনি বরাবর সব অগণতান্ত্রিক শক্তির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক নেতৃত্বের ডাকে বারবার তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তুলেছে।
আমাদের ইতিহাসের প্রতিটি উজ্জ্বল, বর্ণময় গণতান্ত্রিক আন্দোলনের চিত্রপট রচনা করেছেন এদেশের ছাত্রসমাজ বা তারুণ্যের শক্তি। তাদের উত্তাল ঢেউয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে গণমানুষের ¯্রােত। এই গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই দেশে সামরিক শাসনের অবসান ঘটেছে। দুর্ভাগ্যের বিষয় সামরিক শাসনের অবসান ঘটলেও মানুষের আরাধ্য গণতন্ত্র এখনো ফেরেনি। গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দৃশ্যমান হয়নি। শক্তিশালী সরকার ও জবাবদিহিমূলক সংসদীয় শাসনব্যবস্থায় কার্যকর বিরোধী দলের উত্থান ঘটেনি। নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়ে বিতর্ক এখনো শেষ হয়নি।
ইতিহাসের চির সত্যকে স্বীকার করতেও আমাদের অনেকের কার্পণ্য দৃশ্যমান। প্রশাসনকে প্রজাতন্ত্রের শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানে দাঁড় করানো যায়নি। একটি স্বাধীন, শক্তিশালী নির্বাচন কমিশনসহ সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে মজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড় করানো যায়নি। সুবিধাবাজি, মতলববাজি ও দুর্নীতিকে যেমন রোখা যায়নি, তেমনি থামানো যায়নি দুর্নীতিপরায়ণদের উল্লাস নৃত্য। এক বছরে ৭৩ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যায়। বিগত কয়েক বছরে যার পরিমাণ ছয় লাখ কোটি টাকা। ব্যাংকিং সেক্টরে এক ব্যক্তি হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণই শুধু নিয়ে যাননি, একের পর এক ব্যাংকের মালিক হচ্ছেন। তার নাম নেওয়া যায় না, বলা যায় না। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুুল মুহিত এবারের বাজেট দিয়ে ঘরে বাইরে, সাধারণ মানুষের মধ্য থেকে শুরু করে খোদ সংসদে ঘরজামাই বিরোধী দল থেকে তার পাশে বসা ট্রেজারি বেঞ্চের নেতাদের দ্বারা যেভাবে সমালোচিত হচ্ছেন, এই দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে কোনো অর্থমন্ত্রী এতটা সমালোচিত হননি। ব্যাংকিং খাতে একের পর দুর্নীতি, লুটতরাজ করলেও লুটেরাদের বিরুদ্ধে তিনি যেমন ব্যবস্থা নিতে পারেননি; তেমননি সংস্কার কমিশন গঠন করার মধ্য দিয়ে দুর্বলতা চিহ্নিতকরণ, ব্যবস্থা গ্রহণ এবং শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার দুয়ার খুলতে পারেননি।
শেয়ারবাজারে কেলেঙ্কারি নেই, লুটেরা চক্র মহাপ্রলয় ঘটিয়েছে। রিক্ত নিঃস্ব মানুষের আর্তনাদে খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের তদন্ত কমিশন রিপোর্ট দিলেও ব্যবস্থা গ্রহণ হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনা ঘটলে আপাদমস্তক সৎ, গণমুখী গভর্নর ড. আতিউর রহমানের অশ্রুজলে পদত্যাগ ছাড়া আমরা কিছু পাইনি। আইটি বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এ ঘটনার সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের অভ্যন্তরে কেউ জড়িত না থাকলে এ কেলেঙ্কারি ঘটার কথা নয়। তবুও এ রহস্য উদ্ঘাটন হয়নি। ড. ফরাস উদ্দিনের তদন্ত কমিশনের রিপোর্টও আলোর মুখ দেখেনি। কাউকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়নি।
বাজেট নিয়ে তুমুল সমালোচনার তীরে ক্ষতবিক্ষত হচ্ছিলেন অর্থমন্ত্রী, তখন তিনি সিলেট গিয়ে ফের নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। আবার অবসরে গিয়ে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের পার্লামেন্টারি বোর্ড এখনো আগামী নির্বাচনে কারা দলের প্রার্থী হবেন তা চূড়ান্ত করেনি। তাহলে এত উঁচুদরের শ্রদ্ধাভাজন একজন সৎ মানুষ অর্থমন্ত্রী কেমন করে এ ঘোষণা দিলেন?
জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত ড. আবুল মোমেন দায়িত্ব শেষে দেশে ফিরে এলে খবর রটেছিলÑ সিলেট সদরে তিনিই হবেন মুহিতের উত্তরাধিকার। এক টিকিটে দুই ছবির মতো মুহিত যেখানে, মোমেন সেখানেÑ এ রকম সভামঞ্চ অনেক দিন চলছিল। কিন্তু অর্থমন্ত্রী যে শেয়ারবাজারকে ফটকাবাজার বলেছিলেন, সেই চট্টগ্রাম স্টক একচেঞ্জের চেয়ারম্যান হলেন তার ভাই ড. আবুল মোমেন। এর আগে তিনি তার এক নিকটাত্মীয় এনজিও কর্মীকে রূপালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান করেছিলেন। সেই ড. আহমেদ আল কবীর এখন যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য।
মানুষ বলছে, অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান ও শাহ এ এম এস কিবরিয়ার কাছ থেকে দেশ পেয়েছে অনেক। কিন্তু আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছ থেকে কী পেয়েছে? সমালোচকরা বলছে, দেশবাসী কী পেয়েছে সেটি বড় নয়। তার নিকটাত্মীয়রা এর চেয়ে বেশি তো পেয়েছেন। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত একজন জাঁদরেল আমলা ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন, ভাষা সংগ্রামী ছিলেন। ব্যক্তিগত জীবনে সৎ, সৃজনশীল লেখকই নন; আধুনিক স্মার্ট একজন মানুষ হিসেবে আমার অনেক পছন্দের। কিন্তু যেখানে যাই, সেখানের এতসব প্রশ্ন শুনি যে তার কাছে উত্তর চাইতে ইচ্ছা করে।
আজকে যারা শাসন ক্ষমতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যুক্ত রয়েছেন, তাদের অনেকেই ষাটের দশক থেকে এদেশের রাজনীতিতে তারকাখ্যাতি নিয়ে প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রেখেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থেকে এসব বরেণ্য রাজনীতিবিদ যখনই গণতন্ত্রের আন্দোলনে রাজপথে ছিলেন তখন গণমাধ্যমবান্ধবই ছিলেন, সংবাদকর্মীদের গণতন্ত্র মুক্তি ও স্বৈরশাসকদের বিরুদ্ধে অনেক তথ্যসহ ডিকটেশন দিয়েছেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে, স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধে অনিয়ম, অগণতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনা, অর্থনৈতিক খাতে লুটপাট, অনিয়ম, গণবিরোধী কালাকানুনসহ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বিরুদ্ধে সভামঞ্চ থেকে সংবাদ সম্মেলন সেখান থেকে সংসদ সবখানে ছিলেন সরব। জনগণের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটেছিল তাদের কণ্ঠে। জনগণ বিশ্বাস ও আস্থা রেখেছে তাদের প্রতি।
এটা সত্য যে, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরেই বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের দুয়ার উন্মুক্ত হয়েছে এদেশে। অর্থনৈতিক মন্দা থেকে দেশকে রক্ষা করে প্রবৃদ্ধি বাড়িয়েছেন, নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে আমাদের নিয়ে গেছেন। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরামর্শে তথ্যপ্রযুক্তি বিপ্লব ঘটেছে এখানে। তৃণমূল যুক্ত হয়েছে ইন্টারনেটে। সমুদ্র বিজয়ই হয়নি, সীমান্ত সমস্যার সমাধান হয়েছে। পানির সমাধানের কূটনৈতিক লড়াই চলছে। বিশ্ব মোড়লদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে একাত্তর ও পঁচাত্তরের ঘাতকদের ফাঁসি হয়েছে। ধর্মান্ধতা ও জঙ্গিবাদকে যেমন প্রশ্রয় দেননি, মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতকেও গ্রহণ করেননি। ব্যাপক কর্মযজ্ঞের পথ ধরে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর কাজ আগামী নির্বাচনের আগেই শেষ করতে যাচ্ছেন।
কিন্তু এককালের গণমুখী, গণতান্ত্রিক, ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধুকন্যা যেখানে ক্ষমতায় সেখানে চালের দাম ইতিহাসের রেকর্ড অতিক্রম করেছে কেমন করে? কেমন করে অর্থনৈতিক খাতে এত লুটপাট ঘটে যায়। শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশন শক্তিশালী করা হয়েছে, কিন্তু সেখানে চেয়ারম্যান পদে একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সরকার বসালে তার ভাগ্যবদল হয়; কিন্তু বিনিয়োগকারীদের কপাল খুলে না কেন? একটি লুটেরা সিন্ডিকেট, একদল উন্নাসিক ক্ষমতার দম্ভে বেপরোয়া সারা দেশে যারা সংখ্যায় সংখ্যালঘু, অথচ তারা কেমন করে সরকারের সব উন্নয়ন ও অর্জন মানুষের কাছে ধূসর করে দেয়। এমনকি আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের তারা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়ন-বাণিজ্যের শিকার বানায়?
আওয়ামী লীগের লাখো কোটি মানুষ নিবেদিতপ্রাণ-ত্যাগী। কিন্তু রাজধানী থেকে জেলায় জেলায় সরকার ও দলের ভাবমূর্তি শেষ তলানিতে নিয়ে যেতে যারা ভূমিকা রাখছে তাদের চেহারা চোখের সামনে। এদেশের প্রথিতযশা আইনজীবী ও মুক্তিযুদ্ধের অনন্য সাধারণ সংগঠক ছিলেন মরহুম অ্যাডভোকেট সিরাজুল হক। ব্যক্তিগতভাবে আমি তার স্নেহ-সান্নিধ্য পেয়েছি। পেশাগত রিপোর্টার জীবন আমার স্বর্ণযুগ। সেই সময় যখন তখন তার কাছে ছুটে গেছি। ইসলামিয়া কলেজের বেকার হোস্টেল থেকে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তার গভীর বন্ধুত্ব তৈরি হয়। সেই বন্ধুত্ব এতটাই গভীর ছিল যে, বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে কুমিল্লার রাজনীতি ছিল দুই ভাগে বিভক্ত। তিনি বলেছিলেন, এক গ্রুপ ছিল আওয়ামী লীগের দুর্দিনের জহিরুল কাইয়ুম, আরেক গ্রুপ ছিল খন্দকার মোশতাক আহমেদের। তিনি ছিলেন মোশতাক গ্রুপে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু হত্যার পর তাকে পলাতক জীবন নিতে হয়। অক্টোবরে বঙ্গভবনে খুনি মোশতাক আওয়ামী লীগ এমপিদের বৈঠক ডাকলে যে কয়জন সেটি ভ-ুল করেছিলেন তার অন্যতম ছিলেন সিরাজুল হক। সেনাশাসন জামানায় কালো গাউনের পাশাপাশি তার রাজনীতি ছিল আওয়ামী লীগ ও গণতন্ত্রের সংগ্রামের সঙ্গে। কিন্তু এরশাদ পতনের পর তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করে কারাবন্দী সেনাশাসক এরশাদের ডিফেন্স কৌঁসুলি হয়েছিলেন। বলেছিলেন, কালো গাউনের ধর্মই হলোÑ আসামিকে আইনের সহায়তা দেওয়া। আর পদত্যাগ করেছিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যাকে বিব্রত না করার জন্য। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলারও কৌঁসুলি ছিলেন তিনি। আমাদের গভীর শ্রদ্ধার মানুষ মরহুম সিরাজুল হকের সন্তান সাহসী সাংবাদিক আতাউস সামাদের ভাগ্নে প্রথিতযশা আইনজীবী আনিসুল হক আইনমন্ত্রী থাকাকালে কেমন করে গণমাধ্যম কর্মীদের হাত বেঁধে রাখার তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ধারা ৫৭ বহাল থাকে? বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা যেখানে প্রধানমন্ত্রী, তিনি নিজে যেখানে মিডিয়াবান্ধব, সাংবাদিক দেখলে ডেকে নিয়ে কথা বলেন, প্রশ্ন করতে না পারলে নিজে প্রশ্ন তৈরি করে দেন; তিনি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকতে এ কালো আইন কেন গণমাধ্যমকর্মীদের হয়রানি করবে, হাত বেঁঁধে রাখবে? আমাদের হাত গণতন্ত্রের নেতারা খুলে দিন।
সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন