খােলা বাজার২৪।। মঙ্গলবার, ৪ জুলাই, ২০১৭: গত শুক্রবার ৩০ জুন ছিল আন্তর্জাতিক গ্রহাণু দিবস। ১৯০৮ সালের এদিন রাশিয়ার সাইবেরিয়ার গহীন জঙ্গলে বিশাল এক গ্রহানু আঘাত করেছিল, যার ফলে ৪০ মাইল দূরেও এর প্রভাব পড়েছিল। ৭৭০ বর্গকিলোমিটার বন পুরো বিধ্বস্ত হয়ে গিয়েছিল। চার বছর আগে এরকম আরেকটি বড় গ্রহাণু রাশিয়ার চেলিয়াবিংক্সির আকাশের বায়ুমÐলে ঢুকে গিয়েছিল। যদিও এটি পৃথিবীতে আছড়ে পড়ার আগই ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু, বায়ুমÐলে প্রবেশের ফলেই এটি সূর্যের চেয়ে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল, আর তার উত্তাপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল প্রায় ৭ হাজার দালানকোঠা, আহত হয়েছিল সহ¯্রাধিক মানুষ। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে একটি বড় গ্রহাণু পৃথিবীতে আঘাত করলে কী পরিমাণ ধ্বংসযজ্ঞ নেমে আসবে। কিন্তু, নাসা এখন এ ব্যাপারে অনেক সচেতন। আর তাই বলা হয়, নাসা যদি তাদের কার্যক্রম যথাযথভাবে অব্যাহত রাখে তাহলে মহাপ্রলয় হয়তো এতো ভয়ঙ্কর হবে না।
পৃথিবীতে ধেয়ে আসা গ্রহাণুপুঞ্জ তারা কীভাবে প্রতিরোধ করে এই নিয়ে একটি বিস্তৃত প্রতিরক্ষা কৌশল পকিল্পনা গত শুক্রবার প্রকাশ করলো এই আন্তজার্তিক মহাকাশ সংস্থা । নাসা সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে জানানা হয়েছে, প্রতিদিনই পৃথিবীর দিকে অসংখ্য গৃহাণু ধেয়ে আসে। তার বেশির ভাগই বায়ুমÐলের ঘর্ষণে ধ্বংস হয়ে যায়। কিন্তু, এমন কিছু বৃহৎ গ্রহাণু আছে, যা বায়ুমÐলের ঘর্ষণে জ্বলে শেষ হতে পারে না, ফলে তা পৃথিবীতে ভূপাতিত হয়, অর তার তীব্র গতিশীল পতনের ফলে ভূপৃষ্ঠে বিশাল গহবরও তৈরি হয়ে যায়। আরো বড় গ্রহাণু হলে ভয়ঙ্কর ভূমিকম্পও হতে পারে। এই জন্য নাসা সবচেয়ে বেশি সচেতন এইসব বিশাল গ্রহাণুর প্রতি। প্রতি মুহূর্তেই নজর রাখতে হয় কোনো গ্রহাণু পৃথিবীর দিকে ছুটে আসছে কি-না। এর জন্য নাসা দ্বিগুণ সচেতনতা অবলম্বন করছে। আর তার জন্য নিজেদের সাথে নিয়েছে ডার্ট প্রোজেক্ট। ম্যারিল্যান্ডে জন হপকিন্স পদার্থবিজ্ঞানের ল্যাবরেটরির মাধ্যামে নাসা যৌথভাবে নজর রাখছে মহাকাশের দিকে। অদূর ভবিষ্যতে ধেয়ে আসা গ্রহাণুপুঞ্জের দিকেও নজর রাখছে তারা। যদি সেরকম বিপদজনক কিছু হয় তাহলে যেন মহাশূন্যেই তা ধ্বংস করে দিতে পারে সে জন্য তারা এখনই তৈরি। পরীক্ষাস্বরূপ তারা মহাকাশে অনেক ছোট ছোট গ্রহাণু ধ্বংস করেছে। ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে পৃথিবীর কাছে ধেয়ে আসার কথা রয়েছে ডিডিমস নামের একটি গ্রহাণুর। সেটা ধ্বংসের সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই নাসা ও ডার্ট প্রোজেক্ট নিয়ে রেখেছে। এ জন্য তারা ফ্রিজের আকারের একটি নভযান পাঠাবে। নাসার সংবাদবিজ্ঞপ্তি থেকে জানানো হয়েছে তাদের এই নভযানটি সেকেন্ডে প্রায় ৩.৭ মাইল বেগে চলতে সক্ষম। নভযানটি গিয়ে ওই গ্রহাণুর গতিপথ ঘুরিয়ে দিবে। সিএনএন